ঢাকা, রবিবার, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০৮ জুন ২০২৫, ১১ জিলহজ ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

তিন মাসের বিলম্বে কেন এতো সংশয় বিএনপির

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২:০৮, জুন ৭, ২০২৫
তিন মাসের বিলম্বে কেন এতো সংশয় বিএনপির

ঢাকা: ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে বিএনপি। সরকার বলছে, এই সময় নির্বাচন হলে প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠানগত সংস্কার শেষ করা সম্ভব হবে এবং সবার অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে।

কিন্তু বিএনপি বলছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনই সবচেয়ে যুক্তিসঙ্গত হতো। তাদের দাবিকে উপেক্ষা করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে এপ্রিলের তারিখ ঘোষণা অযৌক্তিক বলেও মনে করছে দলটি।

এপ্রিলে নির্বাচনের সময় ঘোষণার ব্যাপারে সরকারের যুক্তি, সংস্কারগত কার্যক্রম সম্পন্ন করার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের সময়সংক্রান্ত দাবিগুলোরও একটা সমন্বয় হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ‘জুলাই সনদ’ ঘোষণার পরিকল্পনা। কেননা, ছাত্র-জনতার সম্মিলনে গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এ বিষয়ে বেশ জোর দিচ্ছে।  

শুক্রবার (৬ জুন) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমি আজ দেশবাসীর কাছে ঘোষণা করছি, আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একটি দিনে অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘোষণার ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন উপযুক্ত সময়ে আপনাদের কাছে নির্বাচনের বিস্তারিত রোডম্যাপ প্রদান করবে।

তিনি বলেন, এ সরকারের বড় দায়িত্ব হলো একটি পরিচ্ছন্ন, উৎসবমুখর, শান্তিপূর্ণ, বিপুলভাবে অংশগ্রহণের পরিবেশে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। এমন একটি নির্বাচন আয়োজন করা যাতে করে দেশ ভবিষ্যতে নতুন সংকটে না পড়ে। এজন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার। যেই প্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাচনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত সেগুলোয় যদি সুশাসন নিশ্চিত করা না যায় তাহলে ছাত্র-জনতার সকল আত্মত্যাগ বিফলে যাবে। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন এই তিনটি ম্যান্ডেটের ভিত্তিতে আমরা দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম। সে বিবেচনায় আগামী রোজার ঈদের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য জায়গায় পৌঁছাতে পারবো বলে বিশ্বাস করি।

বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন সংক্রান্ত চলমান সংস্কার কার্যক্রম পর্যালোচনা করে এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে বলে উল্লেখও করেন তিনি। ড. ইউনূস জানান, আগামী বছর রোজার ঈদের পর নির্বাচনের সময় দেওয়ায় সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ভোটারকে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা সম্ভব হবে, সেই বিবেচনাতেই এপ্রিল মাস নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।  

অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কারকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা তার ঘোষণায় আরও বলেন, সরকার যে সংস্কারগুলো করবে তা যাতে জাতীয় সংসদে অনুমোদন হয় সেজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে অঙ্গীকার নিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই, আপনারা সকল রাজনৈতিক দল এবং আপনাদের এলাকার প্রার্থীদের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার আদায় করে নেবেন যেন আগামী সংসদের প্রথম অধিবেশনেই যেসব সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য অর্জিত হয়েছে তা কোনো প্রকার কাটাছেঁড়া ছাড়াই যেন তারা অনুমোদন করেন। ‌

প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার পর অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টা বলেছেন, বিচার ও সংস্কারের কার্যক্রমকে একটি গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে পৌঁছানো, প্রবাসী ও তরুণ ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করা এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি যথাযথভাবে সম্পন্ন করার জন্যই এপ্রিলকে নির্বাচনকাল হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার পর বিএনপি নির্বাচন নিয়ে দ্বিমুখী আপত্তি জানিয়েছে। (১) আগামী এপ্রিলে ভোট করার সময়টা উপযুক্ত নয়। (২) ডিসেম্বরে ভোটের যে দাবি তারা করে আসছিল, সেটিকে গুরুত্ব না দিয়ে সরকার তিন মাস সময় পিছিয়েছে। বিএনপির মতে, এই তিন মাস খুব বেশি সময় না হলেও নির্বাচন আয়োজনের দিক থেকে এটি মোটেই অনুকূল সময় নয়। বরং এতে নির্বাচন আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মতে, যদি সরকার অন্তত ২০২৬ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচন দিত, তাহলেও আপত্তির তেমন কিছু থাকত না। কারণ, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি— এই সময়টা আবহাওয়া এবং পরিস্থিতির দিক থেকে নির্বাচনের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। তখন আবহাওয়া থাকে শুষ্ক ও শান্ত, আর স্কুল-কলেজে বড় ধরনের পরীক্ষা বা খোলা রাখার তেমন চাপও থাকে না।

শনিবার (৭ জুন) ঈদুল আজহার নামাজ শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের শীর্ষ নেতারা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা জানান। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, যে সময়টি (এপ্রিল মাস) নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটি বাংলাদেশে নির্বাচনের জন্য সঠিক সময় নয়। এ সময়ে প্রচণ্ড গরম, ঝড়-বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। এছাড়া, এপ্রিল মাস রোজার পরপরই এবং পাবলিক পরীক্ষার কারণেও অনুপযোগী। আমাদের মনে হয় না সময়টা খুব চিন্তা করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও যোগ করেন, রোজার মাসে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো কঠিন হবে। গতকাল (শুক্রবার) রাতেই আমাদের স্থায়ী কমিটি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে তাদের মতামত জানিয়েছে। আমরা মনে করি, ডিসেম্বরই নির্বাচন হওয়া সম্ভব এবং সেটাই জাতির জন্য সবচেয়ে উপযোগী হবে।  

সবচেয়ে বড় কারণ যেটি বলছে বিএনপি, সেটি হলো বাজেট ঘোষণা। বিএনপির নেতাদের মতে, আগামী বছরের এপ্রিলে নির্বাচন হলে নতুন সরকার গঠন, সংসদ অধিবেশন ডাকা ও বাজেট প্রস্তুতির জন্য সময় পাওয়া যাবে খুবই অল্প। কারণ, দেশের নতুন অর্থবছর শুরু হয় ১ জুলাই থেকে। তার আগে জুনের প্রথম সপ্তাহেই বাজেট সংসদে উপস্থাপন করতে হয়। কিন্তু এপ্রিলে নির্বাচন হলে নতুন সরকার বাজেটের বিশাল প্রস্তুতি নেওয়ার পর্যাপ্ত সময় পাবে না। এক মাসের মধ্যে বাজেটের মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পন্ন করা বাস্তবসম্মত নয় বলেই তারা মনে করছেন। তাই তারা এই সময়টিকে নির্বাচন আয়োজনের জন্য যুক্তিসঙ্গত মনে করছেন না।

নেতারা এও অভিযোগ করেছেন, এতদিন প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের কথা বললেও শেষ পর্যন্ত যে সময় ঠিক করা হয়েছে, তা পক্ষপাতমূলক অবস্থান নেওয়ার শামিল। সমমনা দলগুলোসহ বিএনপি ডিসেম্বরেই নির্বাচনের পক্ষে। সে হিসেবেই তারা রোডম্যাপ চেয়ে আসছিল। সরকার যদিও জুন থেকে সরে এসেছে, তবু তাদের দাবি উপেক্ষা করা হয়েছে। তা ছাড়া সরকার জামায়াত ও এনসিপির প্রতি আলাদা মনোভাব দেখাচ্ছে। এ কারণে বিএনপি ও অন্যান্য দলের নির্বাচনের দাবিকে উপেক্ষা করা হয়েছে। ফলে, নির্বাচনের সময় এবং পরিবেশ প্রতিকূল হয়ে পড়বে এবং নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে উঠবে। এছাড়াও, এতে অন্তর্বর্তী সরকারের একতরফা নীতি বজায় থাকবে, যা বিএনপি ও অন্যান্য দলগুলি প্রত্যাখ্যান করছে।

কিন্তু সরকার বলছে, ইতোমধ্যে শুরু করা সংস্কার কাজগুলো এপ্রিলে নির্বাচন হওয়ার আগে শেষ করা সম্ভব হবে। তাই এসব সংস্কারের কথা মাথায় রেখেই আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছে। তারা বিশ্বাস করে, এই সময় নির্বাচন করলে প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠানগুলোয় দরকারি সংস্কারগুলো সঠিকভাবে করা যাবে।  

প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই এই সরকারকে সহযোগিতা করে আসছি। বিএনপি ও সমমনা দলগুলো দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই ডিসেম্বরের কথা বলেছিল। আমরা এখনো বলছি, ডিসেম্বরই নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত সময়। বিএনপির প্রতি কেন যেন সরকার বিমাতাসুলভ আচরণ করছে। নতুন সৃষ্ট দল এবং অন্য আরেকটি দলের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা। ’

প্রধান উপদেষ্টা তার ভাষণে নির্বাচনের সময় ঘোষণার পর সেটিকে স্বাগত জানিয়েছে জামায়াত ও এনসিপি। শুক্রবার গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধের যেকোনো একটি দিনে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণায় জাতি আশ্বস্ত হয়েছে। ’

প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় এনসিপি বলেছে, ঘোষিত সময়ের মধ্যে যদি ‘জুলাই সনদ’, ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ও গৃহীত সংস্কার বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে ওই সময়ে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে তাদের কোনো আপত্তি নেই।

এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্রের আনুষ্ঠানিকতা শেষে নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য আসবে। তারপরও যদি ঘোষিত সময়সীমার মধ্যেই এসব বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

জামায়াত-এনসিপি অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানের ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বিভিন্ন দলের নেতারা জানিয়েছেন মিশ্র প্রতিক্রিয়া। নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, তারিখ ঘোষণা হওয়ায় একটা অনিশ্চয়তা কেটেছে—এটা ভালো। কিন্তু প্রশ্ন হলো, নির্বাচন যদি ডিসেম্বরেই হতো, তাহলে অসুবিধাটা কোথায় ছিল? আমাদের মতো অনেক দলের সেই সময়টাই বেশি উপযুক্ত মনে হয়েছিল।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে সরকারের সুস্পষ্ট পরিকল্পনা ঘোষণা করা দরকার। এই তিনটি বিষয়ে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপের প্রয়োজনীয়তার কথা সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে বারবার বলা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে এর প্রতিফলন ছিল, সেটা ইতিবাচক। তবে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই চলতি বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচন দেওয়ার জন্য আহবান জানিয়েছিল।

তিনি বলেন, আমরা এটাও বলেছিলাম, ডিসেম্বরে নির্বাচন দিতে না পারলে তার কারণ সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট হওয়া দরকার। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সময় হিসেবে এপ্রিলের প্রথমার্ধের কথা উল্লেখ করেছেন, যে সময়টি প্রতিকূল আবহাওয়া, পাবলিক পরীক্ষা এবং এর আগে রোজা— সব মিলিয়ে নির্বাচনের জন্য কতটা অনুকূল ও বাস্তবসম্মত হবে, সে ব্যাপারে আশঙ্কা রয়েছে। এ বিষয়ে অংশীজনদের সঙ্গে আরও আলোচনা ইতিবাচক হবে বলে আমরা মনে করি। পাশাপাশি সংবিধান সংস্কারে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য ও এই সংস্কারকে সুরক্ষিত করার জন্য আমরা আগামী নির্বাচনকে ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদ’এর নির্বাচন হিসেবে সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়েছিলাম। প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে এ বিষয়ে কোনো দিক নির্দেশনা আসেনি।

জোনায়েদ সাকি বলেন, বিদেশিদেরকে বন্দর দেওয়ার ব্যাপারে নানা মহলের প্রশ্ন ও সমালোচনা আছে। কিন্তু সেটাকে অপপ্রচার বলে ‘প্রতিহত’ করার জন্য যে আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন, সেটা তার কাছ থেকে কাম্য নয়। সরকারের বরং এই ইস্যু নিয়ে সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করা দরকার।

অনেক নেতা মনে করেন, নির্বাচনের সময় হিসেবে এপ্রিলে যাওয়াটা অনেকটা একধরনের জেদের ফল। তারা বলছেন, অনেক দল ডিসেম্বরের পক্ষে ছিল—এটা জেনেও সরকার যেন ইচ্ছে করেই উল্টো দিকে গেল। ‘ওরা চেয়েছে বলে দেবো না’—এই মানসিকতা থেকেই সংখ্যাগরিষ্ঠ মতকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধান উপদেষ্টা দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করলেও সিদ্ধান্ত নিজের মতো করে নিয়েছেন, যা সুবিবেচনাপ্রসূত হয়নি। তারা বলছেন, আগামী বছরের মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত রমজান থাকবে, এপ্রিলে তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকবে, বজ্রপাত ও ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাও হবে। এসব কারণে এপ্রিল মাস নির্বাচন আয়োজনের জন্য উপযুক্ত সময় নয়, কারণ তখন উৎসবমুখর ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করা কঠিন হবে। বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনকাল নির্ধারণ নিয়ে বর্তমান টানাপোড়েন দেশকে আবারো অনিশ্চয়তা ও স্থবিরতার পথে ঠেলে দিচ্ছে কিনা, প্রশ্ন এখন সেটাই।

এসকে/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।