ঢাকা, শনিবার, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০৭ জুন ২০২৫, ১০ জিলহজ ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

বাংলাদেশে ভারতের পুশ-ইন

‘আমি পেছনে ফিরে তাকালে তারা গুলি করবে’

সিফাত কবির | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৩৩, জুন ৫, ২০২৫
‘আমি পেছনে ফিরে তাকালে তারা গুলি করবে’ বাংলাদেশে পুশ-ইন হওয়া ভারতীয় বাসিন্দা মো. কিসমত আলী। ছবি: খোরশেদ আলম সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট

আসামের দরং জেলার দলগাঁও গ্রামের ৬২ বছর বয়সী মো. কিসমত আলী। ১৯৬৩ সালে আসামে জন্ম নেওয়া এ ব্যক্তির আধার কার্ড ও প্যান কার্ড ছিল।

এমনকি সরকার তাকে একটি সরকারি বাড়িও বরাদ্দ দিয়েছিল। কিন্তু তিনি বাংলাদেশে পুশ-ইনের শিকার হয়েছেন। হরিয়ানায় ইট ভাটায় কাজ করতেন ফাতেমা। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তার চোখ বেঁধে কাঁটাতার পার করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেয়। দুজনকেই বিএসএফ জওয়ানরা বলেছিল, পেছনে ফিরে তাকালে গুলি করে দেওয়া হবে।  

এমন ঘটনা শুধু কিসমত বা ফাতেমার সঙ্গে নয়, ঘটেছে আরও বহু মানুষের সঙ্গে। তারা ভারতীয় নাকি আদৌ বাংলাদেশি তা নিশ্চিত নয়।

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে পুশ-ইনের ঘটনায় মানবিক ও কূটনৈতিক সঙ্কটের সৃষ্টি হয়েছে। দেশটির সরকার ও বিএসএফ ‘পরিকল্পিত ও ধারাবাহিকভাবে’ হাজারো মানুষকে জোরপূর্বক বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে। এ অবস্থায় দুই দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলের পরিস্থিতি কার্যত উত্তপ্ত। বিষয়টিকে কেবল সীমান্ত লঙ্ঘন নয় বরং আন্তর্জাতিক আইন, দ্বিপক্ষীয় চুক্তি এবং মানবাধিকারের উপেক্ষা হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষক, মানবাধিকারকর্মী ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ থেকে ৩১ মে, মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে ১৮টি সীমান্ত জেলা দিয়ে অন্তত ১ হাজার ১৪৩ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হয়েছে। এসব ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সীমান্তে বাড়ানো হয়েছে নজরদারি, শুরু হয়েছে কূটনৈতিক তোড়জোড়। উত্থাপিত হয়েছে জাতিসংঘ পর্যায়ে বিষয়টি তোলার দাবিও।

পুশ-ইন ইস্যুর উত্থান
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) বর্তমানে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত সংকটের মূল উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২৫ সালের ২৭ জানুয়ারি ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা দেন, তার দল আসন্ন প্রাদেশিক নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় এলে ‘বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের’ দুই বছরের মধ্যে ফেরত পাঠানো হবে।

প্রথম ঘটনাটি নথিভুক্ত হয় ৭ মে। যেদিন খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা ও পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে অন্তত ৬৬ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে পাঠানো হয়। আরও ৩৬ জনকে পাঠানো হয় কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে। এরপর থেকে লালমনিরহাট, দিনাজপুর এবং হবিগঞ্জসহ একাধিক স্থানে সমন্বিতভাবে পুশ-ইনের ঘটনা ঘটেছে।

ভুক্তভোগীদের মুখে নির্যাতন ও হুমকির বর্ণনা
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের লালমনিরহাট প্রতিনিধি খোরশেদ আলম সাগরের প্রতিবেদনে জানা যায়, জোরপূর্বক পুশ-ইনের শিকার বলে দাবি করা ভারতীয় নাগরিকরা অভিযোগ করেছেন, দেশটির পুলিশ মুসলিম-অধ্যুষিত এলাকাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে রাতের বেলা অভিযান চালাচ্ছে এবং নির্বিচারে মানুষকে আটক করছে।

মো. কিসমত আলীও বাংলানিউজকে এ তথ্য জানান। তিনি জানান, তাকে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ আখ্যা দিয়ে দুই বছর কারাবন্দি রাখা হয়। কিসমত বলেন, মুক্তির পর, বন্দুকের মুখে বিএসএফ সদস্যরা তাকে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাঠিয়ে দেয়। আমি ফিরে গেলে তারা গুলি করবে বলে হুমকি দিয়েছে। নথিপত্র থাকার পরও বাধ্য হয়ে বাংলাদেশে ঢুকতে হয়েছে তাকে।

ইট ভাটায় কাজ ফাতেমা বেগম হরিয়ানায় আটক হন আরও ১৮ জনের সঙ্গে। ফাতেমা জানান, তাদের চোখ বেঁধে বিমান ও বাসে করে সীমান্তের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া হয়, তারপর কাঁটাতারের ওপারে একটি জঙ্গলের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়। বিএসএফ জওয়ানরা তাদের হুমকি দিয়ে বলেছিল, পেছনে তাকালে গুলি করবে।

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার কালেঙ্গা বনাঞ্চলের কাছে ৪১ জনকে ঘোরাফেরা করতে দেখে স্থানীয়রা। তারা জানায়, বিএসএফ সদস্যরা তাদের বনে ফেলে রেখে গেছে। স্থানীয় প্রতিনিধি বদরুল আলম জানান, ভুক্তভোগীরা বলেছেন, তাদের চোখ বেঁধে রাতে জঙ্গলের মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়।

চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১৯৭৪ সালের স্থলসীমান্ত চুক্তি, ২০১১ সালের প্রোটোকল এবং ২০১৫ সালের চূড়ান্ত অনুমোদনের মাধ্যমে একটি বোঝাপড়া হয়েছে যে দুই দেশই সীমান্তে অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধে একসাথে কাজ করবে। এই চুক্তিগুলোর ভিত্তিতে ‘সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সিবিএমপি)’ অনুযায়ী, দুই দেশেরই দায়িত্ব সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত রাখা এবং কাউকে জোর করে অন্য দেশে পাঠানো থেকে বিরত থাকা।

তবে সাম্প্রতিক পুশ-ইনের ঘটনাগুলো সেই চুক্তিগুলোর স্পষ্ট লঙ্ঘন বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিজিবির দিনাজপুর-৪২ ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবদুল্লাহ আল মঈন হোসেন পুশ-ইনের ঘটনা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য স্থানীয়দের সহায়তায় বিজিবি সতর্কতা জোরদার করেছে।

বিজিবির মুখপাত্র মো. শরিফুল ইসলাম বলেছেন, বিভিন্ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে মৌখিক ও লিখিতভাবে বিজিবি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে। সীমান্তে নজরদারি ও টহল জোরদার করা হয়েছে।

মানবাধিকার কর্মী ও বিশ্লেষকদের উদ্বেগ
বিএসএফএর কর্মকাণ্ড নিয়ে নিন্দা জানিয়েছেন মানবাধিকারকর্মী আবু আহমেদ ফয়জুল কবির। তিনি বলেছেন, ভারত যদি অবৈধ অভিবাসীদের নিয়ে সন্দেহের মধ্যেই থাকে, দেশটির কর্তৃপক্ষের উচিৎ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা। রাতের আঁধারে মানুষকে ঠেলে দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

শরণার্থী ও অভিবাসন গবেষণা কেন্দ্রের (আরএমএমআইউ) ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেছেন, এটি শুধুমাত্র সীমান্ত ইস্যু নয়, বরং অভিবাসনকে রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা ইস্যু হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর সমাধান আইনি ও সংলাপের মাধ্যমে হওয়া উচিত। ভারতের মতো বাংলাদেশেও অনেক অনিয়মিত ভারতীয় নাগরিক আছেন। বৈধ শ্রমবাজার উন্মুক্ত হলে এই সমস্যার অনেকটাই সমাধান সম্ভব।

বাংলাদেশে পুশ-ইন করা ব্যক্তিদের প্রকৃত পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কলকাতাভিত্তিক শিক্ষাবিদ ইমানুল হক। তিনি বলেন, যাদের বাংলাদেশি বলে পুশ-ইন করা হচ্ছে তাদের অনেকেই ৭৫ বছরেরও বেশি, আবার কেউ কেউ তিন প্রজন্ম ধরে ভারতে বসবাস করছেন। তাদের বৈধ কাগজপত্রও রয়েছে। তাহলে হঠাৎ করে তাদের পরিচয় কীভাবে বদলে যাচ্ছে? এ বিষয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা চলমান বলেও উল্লেখ করেন ইমানুল।  

ভারতের পুশ-ইন নিয়ে ইউএনএইচসিআরের উদ্বেগ
জোরপূর্বক রোহিঙ্গাসহ বিভিন্ন মানুষকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার ঘটনা নিয়ে ভারতের ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর)। সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, এ ধরনের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইন ও মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল।

বাংলানিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউএনএইচসিআর’র কমিউনিকেশন অ্যাসোসিয়েট মোশাররফ হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী কোনো মানুষকে এমন দেশে পাঠানো যাবে না, যেখানে তার জীবন বা স্বাধীনতা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। এই নিয়ম সব দেশকে মানতে হয়।

মোশাররফ হোসেন জানান, তারা এখনো ভারতের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করছেন। মিয়ানমারে এখনো সংঘাত ও ভয়াবহ মানবিক সংকট চলছে। তাই ইউএনএইচসিআর বিশ্বের সব দেশকে অনুরোধ করেছে, যেন তারা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা কাউকে জোর করে ফেরত না পাঠায়।

ভারতের সীমান্তরক্ষীরা যাদের বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় বাংলাদেশ তাদের গ্রহণ করতে বাধ্য কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এদের অনেকেই ইউএনএইচসিআর’র নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থী। জীবনের নিরাপত্তাহীনতার ভয়ে কেউ যদি অন্য দেশে আশ্রয় চায়, সেটা তার মৌলিক মানবাধিকার। ভারত যেন এই অধিকার মানে এবং এমন কাউকে ফেরত না পাঠায়, যাদের আন্তর্জাতিক সুরক্ষার প্রয়োজন।

পুশ-ইনের বিষয়ে ভারত সরকারকে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছে ইউএনএইচসিআর। একই সঙ্গে তারা বলেছে, যাদের জোর করে পাঠানো হয়েছে, তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য ভারত যেন দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়।

কূটনৈতিক পদক্ষেপের আহ্বান
ভারতের পুশ ইনের বিষয়টি মন্ত্রণালয় পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ও জনকূটনীতি মহাপরিচালক শাহ আসিফ রহমান। তিনি বলেন, যদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা বিজিবি আমাদের সহায়তা চায়, আমরা সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক শাহিদুজ্জামান বাংলাদেশের দুর্বল কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়ার সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এটি আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। আমাদের সরকারকে এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সামনে উন্মোচন করতে হবে।

তিনি সতর্ক করে বলেন, ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) মেয়াদ শেষ হলে আরও আগ্রাসীভাবে বিতাড়নের ঘটনা ঘটতে পারে, যা ‘মিনি রোহিঙ্গা সংকট’ হিসেবে  রূপ নিতে পারে। এমনকি তিনি অভিযোগ করেন, পুশ ইনের নামে সন্ত্রাসীদেরও বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হতে পারে।

সম্ভাব্য সমাধান হিসেবে তিনি বিতর্কিতভাবে পাকিস্তানি বর্ডার রেঞ্জারদের মোতায়েন এবং আসামের উলফা বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে সমর্থন দেওয়ার প্রস্তাব দেন, পাশাপাশি জোরালো কূটনৈতিক প্রতিবাদের আহ্বান জানান।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদও পুশ-ইনের বিষয়টিকে দ্বিপক্ষীয় চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ভারতের উচিত উপযুক্ত কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের কর্মকাণ্ডের ব্যাখ্যা দেওয়া। যদি এটি চলতেই থাকে, সরকারের উচিৎ বিষয়টি আন্তর্জাতিক আদালতে নিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করা।  

পররাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া
ভারত থেকে পুশ-ইন প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, পুশ-ইন হচ্ছে, তবে তা ফিজিক্যালি ঠেকানো সম্ভব নয়। গতকাল মঙ্গলবার (৩ জুন) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তিনি এ কথা বলার পাশাপাশি জানান, বিষয়টি নিয়ে ভারতের সঙ্গে তাদের চিঠি আদান-প্রদান হচ্ছে। শিগগির এ বিষয়ে আরেকটি চিঠি দেবেন তারা।  

পুশ-ইন বন্ধে ভারতের সঙ্গে কনস্যুলার ডায়লগ হতে পারে বলেও জানান তিনি। তৌহিদ হোসেন আরও বলেন, আমরা বলেছি, এটা যেন পদ্ধতি অনুযায়ী করা হয়। তারা কিছু ক্ষেত্রে বলেছে, এক্ষেত্রে কিছু জট আছে; তোমরা সেগুলো ঠিকমতো করছো না। আমরা চেক করে দেখেছি, খুব দীর্ঘদিনের তালিকার মধ্যে আছে একটি, এবং আমরা পাশাপাশি এটাও দেখেছি যে আসলে তাদের তালিকা অনুযায়ী আমরা চেকআপ করে অনেককে নিয়েছি। কাজেই দুই পক্ষেরই বক্তব্য থাকতে পারে এখানে। আমরা চেষ্টা করছি, কনস্যুলার ইস্যুগুলো নিয়ে একটা মেকানিজম আছে, সেটাকে ব্যবহার করে এ জিনিসটাকে একটা নিয়মের মধ্যে নিয়ে আসার। আমরা চাই, এটি যেন নিয়মিত পদ্ধতির মধ্যে ঘটে। নিয়মের বাইরে যেন না যায়।

কনস্যুলার ডায়লগে বসার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, আমরা বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনায় একটি চিঠি পাঠাব। যেটাতে আমরা কিছু পদ্ধতির কথা আরেকবার উল্লেখ করব এবং আমাদের যে পদ্ধতি আছে, কনস্যুলার আলাপ-আলোচনার সেটাও আমরা ব্যবহার করার চেষ্টা করব। কনস্যুলার ডায়লগ হতে পারে। যেহেতু এখন একটি ইস্যু আছে, এটাও হতে পারে। ভারত থেকে পুশ-ইন বন্ধে এরই মধ্যে পাঁচ দফা চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ। এখন আরেকটি চিঠি যাবে দিল্লিতে।

সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে সরকার নমনীয় কিনা, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটি নিয়ে নমনীয়তা দেখানো সম্ভব না। আমরা এটার প্রতিবাদ করছি এবং এ প্রক্রিয়া চালু আছে। অবশ্যই এ ব্যাপারে খুব শক্তভাবে প্রতিবাদ করব। এ ফ্যাক্টরটাকে কখনো মেনে নেওয়া হবে না যে গুলি করে সীমান্তে মানুষ মেরে ফেলা হবে। এটা পৃথিবীর আর কোনো সীমান্তে নেই।  

চলমান সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিংবা ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন প্রতিক্রিয়া পেতে একাধিকবার চেষ্টা করে বাংলানিউজ। কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

এমএমএস/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।