ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

আ’লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়তে পারেন অর্ধেক!

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৯
আ’লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়তে পারেন অর্ধেক!

ঢাকা: আসন্ন জাতীয় সম্মেলনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অধিকাংশ পদে পরিবর্তনের পাশাপাশি বর্তমান কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রায় অর্ধেকের মতো কমিটি থেকে বাদ পড়তে পারেন বলে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলমান শুদ্ধি অভিযানের প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে এই পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী। দুর্নীতির ব্যাপারে দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিরো টলারেন্স নীতির ঘোষণা বাস্তবায়নে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন।

শুধু দুর্নীতিই নয়, যেকোনো অপকর্মের সঙ্গে জড়িতরা যাতে দলে স্থান না পায়, সেই ব্যাপারেও তিনি কঠোর অবস্থানে।  

ফলে এবারের সম্মেলনে দলের কাযনির্বাহী সংসদে (কেন্দ্রীয় কমিটি) ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। দলের ৮৩ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির অধিকাংশ পদেই পরিবর্তন আসতে পারে। পাশাপাশি ৪০ থেকে ৪৫টি পদে বর্তমানে যারা আছেন তারা বাদ পড়তে পারেন।

আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এই সম্মেলনকে সামনে রেখে তারা এমনটাই ধারণা করছেন।

শুক্রবার (০৬ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের সম্মেলন প্রস্তুতি উপকমিটির সভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের সভাপতি শেখ হাসিনা ছাড়া আমরা কেউই দলের জন্য অপরিহার্য না। পরিবর্তন সব পদে আসতে পারে। দল কীভাবে চলবে, কাকে দিয়ে চলবে সেটাও তিনি জানেন। তিনি যেটা ভালো মনে করবেন, সেটাই করবেন। পরিবর্তন করলেও তার ইচ্ছা, তিনি ডিসাইড করবেন। এ ব্যাপারে কারও কোনো কথা থাকবে না।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, জাতীয় সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতিমণ্ডলী থেকে শুরু করে সম্পাদকমণ্ডলী, কার্যনির্বাহী সদস্য প্রতিটি পর্যায়েই বাদ পড়ার তালিকায় রয়েছেন অনেকে। এর মধ্যে মন্ত্রিসভার সদস্য এমন নেতারাও আছেন। প্রতি সম্মেলনেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে পরিববর্তন আসে। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট আলাদা। এবার নজিরবিহীন পরিবর্তন আসতে পারে বলে ওই সূত্রগুলো জানায়।  

এই পরিবর্তনের বা বাদ পড়া জায়গাগুলোতে তরুণ ও নতুনরা গুরুত্ব পাবেন। ছাত্রলীগ থেকে ওঠে আসা নেতা, বিশেষ করে যারা সংগঠনটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বা শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্বে ছিলেন এবং বর্তমানে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ভূমিকা রাখছেন, তাদের একটি অংশ স্থান পাবেন। সভাপতিমণ্ডলী থেকে শুরু করে যুগ্ম-সম্পাদক, সম্পাদকমণ্ডলীর কারো কারো ঠাঁই হবে কাযনির্বাহী সদস্য পদে।

একটি সূত্র জানায়, মন্ত্রিসভা ও দলের পদ, দুই জায়গাতেই আছেন এমন কাউকে কাউকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেকোনো এক জায়গায় রাখার মনোভাব ইতোমধ্যে ব্যক্ত করেছেন। মন্ত্রিসভায় ও দলে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা এমন এক নেতাকে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী জিজ্ঞাসাও করেছেন যে, তিনি দলে থাকবেন, না কি মন্ত্রিসভায়। তখন ওই নেতা মন্ত্রিসভায় থাকতে চান বলেই জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে চারটি সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছে। এসব সংগঠনের ও শাখার নতুন কমিটিতে পুরনো সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা ঠাঁই পাননি। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতেও বিতর্কিত কেউ ঠাঁই পাবে না বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে দলের কাযনির্বাহী সংসদ নির্বাচন করা হয়। প্রতি বছরেই দেখা যায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের পর কাউন্সিলরা সর্বসম্মতিক্রমে দলের সভাপতি শেখ হাসিনাকে কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেন।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি সম্মেলনেই দলে কিছু পরিবর্তন আসে। নতুনদের স্থান করে দেওয়া হয়। এবার একটু আলাদা প্রেক্ষাপট। কেমন পরিবর্তন আসবে সেটা নেত্রীই জানেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, দল চালান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। কীভাবে দল চালাতে হয় তিনি জানেন। তিনি কার পরিবর্তে কাকে আনবেন, কাকে কী দায়িত্ব দেবেন, সেটা কোনো সমস্যা না। তিনি যেভাবে পরিচালিত করবেন, দায়িত্বপ্রাপ্তরা সেভাবেই চলবেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৯
এসকে/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।