বইমেলা থেকে: রণেশ দাশ লোক দেখানো মার্কসবাদী ছিলেন না বলে মন্তব্য করেছেন আলোচকরা।
সোমবার সন্ধ্যায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে আয়োজিত ‘জন্মশতবর্ষের শ্রদ্ধাঞ্জলি: রণেশ দাশগুপ্ত’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে তারা এ কথা বলেন।
এমিরেটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, রণেশ দাশগুপ্ত আমাদের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত ও সংগ্রামের সহযোদ্ধাও বটে। দেশভাগের বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে তিনি স্বপ্ন দেখেছেন ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে জনমানুষের ঐক্যের আর নব্বই দশকে সমাজতন্ত্রের পতনের মুখে দাঁড়িয়ে ভোলেননি সাম্যবাদের স্বপ্ন।
আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মফিদুল হক। আলোচনা করেন অধ্যাপক শফি আহমেদ, অধ্যাপক কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংবাদিক জাহিদ রেজা নূর এবং অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর।
সভাপতির বক্তব্যে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আরও বলেন, রণেশ দাশগুপ্তের মূল লক্ষ্য ছিল সাধারণ মানুষের মুক্তি। এ মুক্তির পথই তিন অন্বেষণ করেছেন তাঁর সাহিত্য চর্চায় ও সাংগঠনিকতায়।
প্রাবন্ধিক মফিদুল হক বলেন, বিচিত্র অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে রণেশ দাশগুপ্ত পৌঁছেছেন জীবনের পূর্ণতার দিকে। বিশ শতকের অগ্নি-আভা তাঁকে পরিণত করেছে সোনার মানুষে। মার্কসবাদী নন্দনতত্ত্বকে তাত্ত্বিক ঘেরাটোপ থেকে মুক্ত করে নিয়ে গেছেন সাধারণ মানুষের কাছে। নির্দিষ্ট রাজনৈতিক মতাদর্শ ধারণ করেও তাঁর সহিষ্ণু উদার দৃষ্টিভঙ্গি এবং জীবনাচরণ আমাদের জন্য শিক্ষণীয় বিষয়।
আলোচকরা বলেন, আদর্শহীন সময় ও সমাজে রণেশ দাশগুপ্ত একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি লোক দেখানো মার্কসবাদী ছিলেন না, ছিলেন যুক্তিবাদী ও সম্মুখযাত্রী। নেতির মধ্যে তিনি সারাজীবন ইতির সন্ধান করেছেন। চেয়েছেন জনমুক্তির পথ-নির্দেশ করতে। এমন বিরল বিপ্লবী মানুষকে আমরা প্রায় ভুলতে বসেছি এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে থিয়েটার প্রযোজিত, সৈয়দ শামসুল হক রচিত, আব্দুল্লাহ্ আল মামুন নির্দেশিত এবং সুদীপ চক্রবর্তী নির্মিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কাব্যনাটক ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ মঞ্চস্থ হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১২