ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

‘একুশের অঙ্গীকার এখন আন্তর্জাতিকতার চেতনাতেও ঋদ্ধ’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১২
‘একুশের অঙ্গীকার এখন আন্তর্জাতিকতার চেতনাতেও ঋদ্ধ’

বইমেলা থেকে: বইমেলার দশম দিনে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় মেলার মূলমঞ্চে আয়োজিত শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতার প্রাথমিক পর্বে ‘ক’ শাখায় ছড়াগান বিষয়ে ১৫০ জন এবং ‘খ’ শাখায় ভাষার গান বিষয়ে ১১৫ জন প্রতিযোগী অংশ নেয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন জিনাত রেহানা, নীলোৎপল সাধ্য এবং নন্দিতা ইয়াসমিন।



আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক পর্বের ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

অংশ নেওয়া সকল প্রতিযোগীকে স্মারক পুরস্কার হিসেবে বাংলা একাডেমীর প্রকাশনা প্রদান করা হবে। প্রতিযোগিতা শেষে এভারেস্ট বিজয়ী মূসা ইব্রাহিমের এভারেস্ট বিজয়ের প্রেক্ষাপটসহ এ সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য একটি তথ্যচিত্রের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়।

সকাল ১১টায় একাডেমীর সেমিনার কক্ষে ‘বাঙালির ভাষা আন্দোলন থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মোহাম্মদ হান্নান। আলোচনা করেন পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট’র মহাপরিচালক অধ্যাপক জীনাত ইমতিয়াজ আলী, জাতিসংঘের সাবেক কর্মকর্তা শামসুল বারী এবং ছড়াকার লুৎফর রহমান রিটন। সভাপতিত্ব করেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী।

বক্তারা বলেন, ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষার মর্যাদার প্রতিষ্ঠায় বাঙালি যে ন্যায্য সংগ্রামের জন্ম দেয় আজ তার বার্তা পৌঁছে গেছে সারা বিশ্বে। একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির হয়েও এখন বৈশ্বিক। একুশে ফেব্রুয়ারি এখন পৃথিবীর সকল জাতির মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার স্মারক দিবসের নাম। একুশের অঙ্গীকার জাতীয়তাবাদের বৃত্তেই আবদ্ধ নয়, তা আন্তর্জাতিকতার চেতনাতেও ঋদ্ধ। তারা বলেন, একুশের ইতিহাসকে বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়া যেমন আমাদের দায়িত্ব তেমনি একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলা ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতির আন্তর্জাতিক বিস্তারে আমাদের মনোযোগী হতে হবে।

বিকেলে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে ‘ভাষা সংগ্রামী হাসান হাফিজুর রহমান’ এবং ‘ভাষা সংগ্রামী ইমদাদ হোসেন’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন এবং নূহ-উল-আলম লেনিন। আলোচনা করেন বায়তুল্লাহ কাদেরী, ফারজানা সিদ্দিকা এবং তারেক রেজা। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক সনজীদা খাতুন।

বক্তারা বলেন, ভাষা-সংগ্রামী ইমদাদ হোসেন ভাষা-আন্দোলনের পক্ষে শিল্পীদের সংগঠিত করেছেন। তার নেতৃত্বেই বাংলায় শিল্পীরা বাংলা ভাষার মর্যাদা আদায়ে তুলি-কলম হাতে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। বৈরী পরিবেশে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনেও তার ভূমিকা বিস্মৃত হবার নয়। তারা বলেন, হাসান হাফিজুর রহমান ছিলেন একুশের সন্তান। তার সম্পাদিত ১৯৫৩ সালে প্রকাশিত ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’ সংকলন ছিল ভাষা-আন্দোলনের সাহিত্যিক দলিল। পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র সম্পাদনা করে তিনি তার প্রগতিবাদী অঙ্গীকারের প্রমাণ দিয়েছেন।

বক্তারা আরও বলেন, তারা দুজনেই প্রচারসর্বস্বতার বিপরীতে নেপথ্য-নায়কের ভূমিকা রেখেছেন। পাকিস্তানে ও বাংলাদেশে লড়াই করেছেন প্রতিক্রিয়াশীলতার বিরুদ্ধে। জীবন ও সংস্কৃতিকে তারা সমার্থক করে তুলেছেন। তারা শুধু স্বদেশবাসীর সুন্দর আগামীকে স্বপ্ন দেখেই ক্ষান্ত হননি, স্বপ্ন পূরণের পথকেও করতে চেয়েছেন নিষ্কণ্টক।

বক্তারা আরও বলেন, এই দুই ভাষা-সংগ্রামী ছিলেন তৃণমূললগ্ন। মাটিবর্তী মানুষকে জাগিয়ে তোলার মাধ্যমে তারা বাঙালি জাতির জাগরণের প্রেক্ষাপট নির্মাণ করেছেন।

সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে শুভাশিস সিনহর নাট্যরূপ ও নির্দেশনায় বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি ভাষায় ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ নাটক মঞ্চস্থ করে মনিপুরি থিয়েটার।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।