ঢাকা: শুক্রবার ছিল বাংলা একাডেমী আয়োজিত অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১২ এর তৃতীয় দিন। এদিন সকাল সাড়ে ৮টায় মেলা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় শিশু-কিশোরদের জমজমাট এক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা।
এতে বিভিন্ন বিষয়ে অংশ নেয় ৭৩৪ প্রতিযোগী। এর মধ্যে ক-শাখায় ‘শহীদ মিনার’ বিষয়ে ৪১৯ জন, খ-শাখায় ‘ভাষা-শহীদের প্রতিকৃতি’ বিষয়ে ২০৮ জন এবং গ-শাখায় ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ তোমার কল্পনায়’ বিষয়ে ১০৭ জন ছবি আঁকে।
বিকেলে মেলার মূলমঞ্চে একুশের স্মৃতিচারণ করেন ভাষা-সংগ্রামী আবদুল মতিন, আহমদ রফিক, হালিমা খাতুন এবং রওশন আরা বাচ্চু। স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান।
হালিমা খাতুন বলেন, প্রতিকূল সামাজিক পরিস্থিতি অতিক্রম করে ভাষা-সংগ্রামে নারীরা যে ভূমিকা রেখেছেন, তা আমাদের জাতীয় ইতিহাসে এক গৌরবদীপ্ত অধ্যায়।
রওশন আরা বাচ্চু বলেন, ভাষা আন্দোলনে ১৪৪ ধারা ভঙ্গের ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তে ছাত্রদের সঙ্গে ছাত্রীদেরও ছিল প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা। ভাষা-আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের মত ও পথের ভিন্নতা থাকলেও অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে সবাই ছিলেন সংকল্পবদ্ধ।
আহমদ রফিক বলেন, ভাষা আন্দোলনের পূর্ণাঙ্গ ও বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস প্রণয়নের জন্য ১৯৫২ সালের গোপন পুলিশ প্রতিবেদন জনসম্মুখে প্রকাশ অত্যন্ত জরুরি।
তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনে তৃণমূল কর্মীদের সম্মান দেওয়া আমাদের জাতীয় কর্তব্য।
আবদুল মতিন বলেন, ভাষার অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার অপ-পরিকল্পনার মাধ্যমে পাকিস্তানিরা আসলে বাঙালি জাতিগত বিকাশকেই রুদ্ধ করে দিতে চেয়েছিল। উত্তর প্রজন্মের জন্য মাতৃভাষার অধিকার সুনিশ্চিত করতে ভাষাশহীদ ও ভাষা সংগ্রামীরা যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন আজকের তরুণদেরও সে দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে হবে।
সভাপতির ভাষণে বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, শুধু ভাষা আন্দোলন নয়, আমরা মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সঠিক সংখ্যা এখনও নির্ধারণ করতে পারিনি। পুরো জাতির জন্য এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক একটা ব্যাপার।
সন্ধ্যায় আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে হাসান আরিফের পরিচালনায় আবৃত্তি পরিবেশন করে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, ফেব্রæয়ারি ০৩, ২০১২