ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

মানবধর্মই বিদ্যাসাগরের মননক্রিয়ায় ও কর্ম সক্রিয়ায় উদ্ভাসিত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০
মানবধর্মই বিদ্যাসাগরের মননক্রিয়ায় ও কর্ম সক্রিয়ায় উদ্ভাসিত বাংলা একাডেমির ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বক্তৃতায় অধ্যাপক বেগম আকতার কামাল

ঢাকা: অধ্যাপক বেগম আকতার কামাল বলেছেন, ‘রবীন্দ্রমতে, বিদ্যাসাগর এ বঙ্গ দেশে একক ছিলেন। তার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো অজেয় পৌরুষ; তার অক্ষয় মনুষ্যত্ব।

এ মানবধর্মই বিদ্যাসাগরের মননক্রিয়ায় ও কর্ম সক্রিয়ায় উদ্ভাসিত। ’

রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) বাংলা একাডেমির ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বক্তৃতায় অধ্যাপক বেগম আকতার কামাল এ কথা বলেন।

একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি শামসুজ্জামান খান।

‘রবীন্দ্রদৃষ্টিতে বিদ্যাসাগরের চরিতাখ্যান: আপন হতে বাহির হয়ে’ শীর্ষক বক্তৃতায় অধ্যাপক বেগম আকতার কামাল বলেন, ‘বিদ্যাসাগরের মধ্যে যে করুণা-দায়-বেদনা ছিল নিপীড়িতের জন্যে, নারীর দুঃখজর্জর শাস্ত্রধর্মশাসিত জীবনের জন্যে, তাদের সঙ্গে সমানুভূতি হওয়ার মধ্য দিয়ে তার যে কর্মানুশীলন— সেটি আজ আমাদের মননবুদ্ধিতে চর্চা করা প্রয়োজন। সমানুভূতিই পারে নিজেকে আত্মকেন্দ্র থেকে বের করে এনে অন্যের বেদনাকে উপলব্ধির মধ্যে আনতে। ফলে তখন মানুষ তৎপর হয় আপন-পর ভেদ ঘুচিয়ে মুক্ত মানুষ হতে। রবীন্দ্রনাথের বিদ্যাসাগরের চরিতাখ্যান এটাই জানায় যে, আত্মকেন্দ্রিক স্বার্থপরতা থেকে মুক্ত থাকাটাই হচ্ছে আত্মস্বাধীনতা অর্জনের চাবিকাঠি। এ অর্জনই অপর মানুষকে নিয়ে শুভ কল্যাণময় সমাজ গড়ে তুলতে পারে। ’

শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘বিদ্যাসাগর খণ্ডিত রেনেসাঁর প্রতিভূ ছিলেন না। তার নবজাগরণ চিন্তা কেবল ওপরতলার বিশিষ্টদের জন্য ছিল না বরং তা ছিল শ্রেণি নিরপেক্ষ। তার ভাষা-সাহিত্য-শিক্ষাচিন্তা কিংবা নারীভাবনা কোনোটাই বিচ্ছিন্ন ছিল না; বরং একটি কেন্দ্রীয় চিন্তাকাঠামোয় তিনি গোটা অনগ্রসর বঙ্গসমাজকে পরিবর্তন করতে চেয়েছেন। জীবদ্দশায় এবং এখনো বিদ্যাসাগরকে ভ্রান্ত ব্যাখ্যার বেড়াজালে আবদ্ধ করা হচ্ছে। কিন্তু তার অনন্য জীবন এবং অসাধারণ সৃজন-উভয়ের মধ্য দিয়ে তিনি জন্মের দু’শ বছর পেরিয়ে আজও সমান প্রাসঙ্গিক, সমান দীপ্যমান। ’

হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এক বহুমাত্রিক সৃজনপ্রতিভা; বাংলা গদ্যের জনক, নারীহিতৈষী, পরহিতব্রতী, শিক্ষাসাধক, সমাজ-সংস্কারক, সাহিত্যিক, সর্বোপরি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে অবিস্মরণীয় মানবপূজারি। এ অসামান্য মণীষার দ্বিশত জন্মবর্ষে আমরা বাংলা একাডেমি পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা, বিদ্যাসাগর স্মারকগ্রন্থ এবং তার রচনাবলি প্রকাশের পরিকল্পনা নিয়েছি। এসব বাস্তবায়িত হলে আমরা তার প্রতি বাঙালি জাতির ঋণ স্বীকারের পথে কিছুটা হলেও অগ্রসর হতে পারবো নিঃসন্দেহে। ’

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির সহপরিচালক সায়েরা হাবীব।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২০
ডিএন/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।