ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

‘প্রান্তর’ ছড়িয়ে পড়ুক সারা দেশে

রবাব রসাঁ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১১
‘প্রান্তর’ ছড়িয়ে পড়ুক সারা দেশে

‘প্রান্তর’ একটি লোকসংস্কৃতি বিষয়ক পত্রিকা। এত এত পত্রিকার মধ্য থেকে এ পত্রিকাটির আলাদা কি উদ্দেশ্য, কি পরিকল্পনা--- এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়া যাক ‘প্রান্তরে’র ভাষায়ই।

‘গ্রামবাংলায় প্রতিদিনের চিরচেনা দৃশ্যপট, অনুসঙ্গগুলোও হয়তো এখানে অতিতুচ্ছ পরিচিত  ও সামান্য। শত-শত বছরের বাঙ্গালি লোকসংস্কৃতির অন্যতম বাহন গ্রামের অতি সাধারণ সহজ-সরল এ মানুষগুলো। তাঁদের লোকাঞ্চল হতে তাঁদেরই কিছু কথা প্রান্তরের এক প্রান্তে তুলে দেয়াই আমাদের প্রচেষ্টা। ’

‘প্রান্তর’ প্রকাশিত হয় গাইবান্ধা জেলা থেকে। পত্রিকাটির সম্পাদনা, ছবি তোলা  ও লেখালেখির গুরু দায়িত্ব পালন করেন পাভেল ইসলাম। পত্রিকাটি হাতে নিলেই বোঝা যায় তাঁকে কতই না পরিশ্রম করতে হয় এমন অনন্য সাধারণ কাজটির জন্য।

প্রান্তরের বর্তমান সংখ্যার শুরুতে রয়েছে দেশের অন্যতম প্রাচীন ঐতিহ্য রাজা বিরাট সর্ম্পকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। ত্রিনাথ দেবতার মূর্তির ছবিসহ রয়েছে মাটিচাপা লুপ্ত-ইতিহাস। বড় ঢিবির ছবির সাথে রয়েছে অরক্ষিত মানবসৃষ্ট ধ্বংসলীলার আলোকচিত্রও।

লেখকের ভাষায়, ‘একদা গাইবান্ধার প্রাচীনতম ঐতিহ্যের সমৃদ্ধ নগর-জনপদের নাম রাজা বিরাট। যার বর্ণনা মহাভারতের বিরাট পর্বে রয়েছে। ’ লেখকের এই তথ্যটুকু পাঠককে নিয়ে যায় এক মহাকাব্যের আলোকজ্জ্বল ইতিহাসের দিকে। নিয়ে যায় এক গৌরবময় অতীতের গহ্বরে। অথচ সেই ঢিবি খুঁড়ে তথ্যগুলো দেশবাসীর সামনে আনার দ্বায়িত্বটুকু দেখা যায় না সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগে।

শুধু ইতিহাসের কথা বলেই ক্ষান্ত হননি লেখক। একনিষ্ঠ সংবাদকর্মীর চোখ দিয়ে দেখেছেন সরকারী অবহেলা ও বেসরকারী প্রতারণা। স্পষ্ট ভাষায় লিখেছেন ‘সংঘবদ্ধ তস্কর, স্থানীয়দের অবাধ আনাগোনায় লুট হয়ে যাচ্ছে প্রত্নসম্পদ। ’

গাইবান্ধার ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইতিহাসের পাশাপাশি প্রান্তর নাতিদীর্ঘ পরিসরে তুলে ধরে গাইবান্ধার গ্রামের মানুষের আঞ্চলিক ভাষা, তার ব্যবহার। এতে রয়েছে অর্থসহ আঞ্চলিক শব্দের পরিচিতিমালা। তুলে ধরে মানুষের জীবন-জীবিকার সচিত্র খণ্ডচিত্র।

এই অঞ্চলের লোকবিশ্বাস  ও লোকাচার সম্পর্কে একটা সম্যক ধারণা পাওয়া যায় প্রান্তরের পাতায় পাতায়। জীববৈচিত্রের কথা বলতে ভোলেননি পত্রিকাটির সম্পাদক। তাই দেখা যায় গাইবান্ধার কিছু বিল-জলাশয়ের নাম। সাথে এই জেলার প্রাচীন বৃক্ষের ছবি ও বর্ণনা। প্রবীণদের ওপর সচিত্র প্রতিবেদনও রয়েছে ‘প্রান্তরে’র পাতায়।

প্রান্তরকে আবারো ধন্যবাদ। একটি জেলায় লুকিয়ে থাকা রত্নগুলো পত্রিকাটি তুলে ধরেছে সবার কাছে। তাই কামনা করি, এমন ‘প্রান্তর’ সৃষ্টি হোক দেশের প্রতিটি জেলায়। ‘প্রান্তর’ ছড়িয়ে পড়ুক সারা দেশে।

‘প্রান্তর’ আমাদের আলো দিক আগামীর অন্ধকারে।

বাংলাদেশ সময় ১৪২৩, ডিসেম্বর ২৮, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।