কবি ও কবিতা
ছোট্ট সুচের পিছে ভরে, সুক্ষ্ম সুতোর পরে
আনমনে বুনে ফুলের মালা, বাহির কিংবা ঘরে।
মালা যখন সৃষ্টি হয়, নাম থাকে না আর ফুল
একেই বলে কবির কবিতা, যদি সৃষ্টিতে না হয় ভুল।
শীতে নিমন্ত্রণ তোমায়
এই শীতে তোমায় নিমন্ত্রণ আমাদের গ্রামে
আগের মতো আর নৌকায় আসতে পারবে না
চির কুমার ছিল যে নদী আজ সে বৃদ্ধ হয়ে গেছে
ওর বুক দিয়ে এখন আর নৌকা লঞ্চ চলে না
ইচ্ছে করলে তুমি ওর বুকের ওপর দিয়ে হেঁটে আসতে পারো।
খুব সকালে যদি আসো তাহলে
তোমাকে সক্রিয়দের গ্রামে নিয়ে যাবো
সামনে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ
কুমারের মা পদ্মা রানীর দেখা হয়তো পাবে না
ফারাক্কা দেবের আগ্রাসনে আজ সে তরঙ্গহীন ডোবার মতো
ঝাঁকে ঝাঁকে গাংচিল আর নেই
কানা বকটিকে দেখবে অলসভাবে বসে আছে
হিজল গাছের ডালে হয়তো অভুক্তই
একটা দুইটা ডাহুক পাখির ডাক এখনো শুনবে।
আগে কি কখনও গাছী দেখেছো?
ঐ যে খেজুর গাছ থেকে পিছে হাড়িভর্তি রস নিয়ে
দরদর করে যে লোকটি নেমে আসছে সে-ই গাছী
শীতের তীব্রতা যত বাড়ে
গাছের সাথে ওদের প্রেম হয় আরো নিবিড়।
প্রভাত রোদে আয়েস করে খেজুর রসের পায়েস খাওয়া
ভাঁপা গোকুল মালপোয়া কড়ি পাটিসাপটা চিতাই সূর্যমুখী
দুধ সেমাই ঝাল মোরগসংসার চায়না নকশী ঝালপিঠা
আর মুড়ি-মুড়কি নাড়ুর নিমন্ত্রণে
দলবেধে দাওয়াত খাওয়ার ধুম পড়ে যায় গ্রামে।
সাঁকোর ওপর দিয়ে জেলেদের মাছের ঝাঁকা মাথায়
নিয়ে কার আগে কে প্রথম যেতে পারবে বাজারে
তারই বাস্তব প্রতিযোগিতায় শীত পালায় শরীর থেকে
আরো কত বাহারি সবুজের খেলা অপেক্ষায় আছে
তাই বলি এই শীতে তোমায় নিমন্ত্রণ, গ্রামে এসো।
বাংলাদেশ সময় ১৮২৯, ডিসেম্বর ০৪, ২০১১