ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

বাংলা একাডেমীর ৫৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

ডেস্ক রিপোর্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩, ২০১১
বাংলা একাডেমীর ৫৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

ঢাকা: বাঙালির জাতিসত্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের প্রতীক বাংলা একাডেমীর ৫৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ৩ ডিসেম্বর ২০১১ শনিবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়।

সকাল সাড়ে ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করেন একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।

এ সময় একাডেমীর সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।

সকাল ১১টায় একাডেমী সেমিনার কক্ষে একাডেমীর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় ইমরুল ইউসুফ, রোকসানা পারভীন স্মৃতি, জয়নুল আবেদীন, পিয়াস মজিদ, আইয়ুব মুহাম্মদ খান এবং মো. শাহাদাৎ হোসেন; আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় আলেফ মোল্লা, জাকির হোসেন শিকদার, মো. জিয়াউল হক, শাহাদাৎ হোসেন নিপু এবং আনোয়ারুল হক; সংগীত প্রতিযোগিতায় আনোয়ার হোসেন, মো. দেলোয়ার হোসেন, ইউসুফ মাতবর এবং মীর তারিকুল ইসলাম (সজীব) অংশ নেন। কৌতুক পরিবেশন করেন আবিদ করিম মুন্না।

বিকেল ৪টায় একাডেমীর রবীন্দ্রচত্বরে অনুষ্ঠিত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তৃতায় ‘মুসলিম সাহিত্য-সমাজ ও বাংলাদেশ’ বিষয়ে বক্তৃতা প্রদান করেন অধ্যাপক খোন্দকার সিরাজুল হক। স্বাগত ভাষণ দেন একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল কাইউম।

শামসুজ্জামান খান বলেন, বাংলা একাডেমী বাঙালি  জাতির সাংস্কৃতিক ও বৃদ্ধিবৃত্তিক ঐতিহ্যের প্রতীক। বিশ শতকের বাঙালি মুসলমান সমাজের চিন্তাচর্চার ইতিহাসে মুসলিম সাহিত্য-সমাজ যুগান্তর সৃষ্টি করেছিল। বাংলা একাডেমী এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তৃতা হিসেবে মুসলিম সাহিত্য-সমাজ ও বাংলাদেশ সৃষ্টির আন্তঃসম্পর্ককে গুরুত্ব দিয়েছে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তৃতায় অধ্যাপক খোন্দকার সিরাজুল হক বলেন, মুসলিম সাহিত্য-সমাজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় সমসাময়িক কালের সৃষ্টি। বাঙালি মুসলমানের চিন্তার মুক্তিই ছিল এ দু’টি প্রতিষ্ঠানের অভিন্ন উদ্দেশ্য। শিক্ষা ও সাহিত্যের মধ্য দিয়ে বাঙালি মুসলমানের মাঝে আধুনিকতার উদ্বোধনের কথা বলেছিলেন মুসলিম সাহিত্য-সমাজের সঙ্গে যুক্ত লেখক-বুদ্ধিজীবীরা। চিন্তার স্বাধীনতার এই আন্দোলনই বাঙালি মুসলমানের ভেতর সংকীর্ণ সাম্প্রদায়িকতামুক্ত উদার জাতীয়তাবাদী চেতনার স্ফূরণ ঘটায়। এরই ধারাবাহিকতায় ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালির স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আকাক্সক্ষা ব্যক্ত হয়।

তিনি আরও বলেন, বিশ শতকে মুসলিম সাহিত্য-সমাজকে মৌলবাদী ধর্মান্ধ শক্তির বিরুদ্ধে যে লড়াই করতে হয়েছে তা এখনও শেষ হয়নি। মুক্তবুদ্ধির বিরুদ্ধে রক্ষণশীল অপশক্তি বর্তমানেও সমান সক্রিয়। আমাদের সার্বিক মুক্তির জন্যে এখন মুসলিম সাহিত্য-সমাজের মতো বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন গড়ে তোলা দরকার।

সভাপতির ভাষণে অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল কাইউম বলেন, মুসলিম সাহিত্য-সমাজের আন্দোলন ছিল কুসংস্কার ও আবদ্ধতার বিরুদ্ধে। শিখা পত্রিকার মধ্য দিয়ে এ সংগঠন বিশ শতকের অন্ধকার কবলিত মুসলমান সমাজকে যেভাবে আলোকিত করার চেষ্টা করেছে তার প্রাসঙ্গিকতা শুধু সমকালে নয়, প্রায় শতাব্দী পেরিয়ে এখনও সমানভাবে অনুভূত।

বক্তৃতানুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশ সরকারের চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘বাংলা ও বাঙালির বাংলা একাডেমী’র প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর এবং অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী শাহীন সামাদ, অদিতি মোহসিন, ইয়াকুব আলী খান, শামা রহমান, পাগলা বাবলু প্রমুখ। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন বিশ্বজিৎ সরকার, হাসান আলী, সুনীল কুমার সরকার, মোঃ গিয়াস উদ্দীন।

একইদিন সন্ধ্যায় একাডেমির উপ-পরিচালক মুর্শিদুদ্দিন আহম্মদের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে জানানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৩ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।