কথাশিল্পী রশীদ করীম স্মরণে বাংলা একাডেমী ১ ডিসেম্বর বিকেল ৪ টায় একাডেমীর রবীন্দ্রচত্বরে নাগরিক শোকসভার আয়োজন করে। শোকসভার শুরুতে কথাশিল্পী রশীদ করীমের জীবন ও কর্ম নিয়ে বাংলা একাডেমী নির্মিত তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
শোকসভায় স্মৃতিচারণ করেন তরুণ কথাশিল্পী হামিদ কায়সার, অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদ, কবি মহাদেব সাহা, কবি বেলাল চৌধুরী, কবি রুবী রহমান, প্রাবন্ধিক মফিদুল হক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব সিরাজুল মজিদ মামুন, কথাশিল্পী হাসনাত আবদুল হাই এবং বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী।
শোকসভায় রশীদ করীমের জীবন ও সাহিত্যকর্মের নানাদিকের আলোচনায় বক্তারা বলেন, রশীদ করীম বাংলা সাহিত্যের একজন গুরুত্বপূর্ণ লেখক। রশীদ করীম উত্তম পুরুষ উপন্যাসের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের উপন্যাসের মোড় ফিরিয়ে দেন। এছাড়া তাঁর আমার যত গ্লানি, মায়ের কাছে যাচ্ছি, পদতলে রক্ত ইত্যাদি উপন্যাসে মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাঁথা চিত্রিত হয়েছে। তাঁর মতো পরিশ্রমী লেখক প্রকৃতপক্ষেই বিরল। দেশপ্রেমিক মানুষ হিসেবেও জাতি তাঁকে চিরদিন শ্রদ্ধা করবে। তিনি ছিলেন একজন জীবনমুখী মানুষ। জীবনকে ভালবাসার মন্ত্রণা তাঁর জীবন ও সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন। ব্যক্তিজীবনে তিনি ছিলেন হৃদয়বান, প্রগতিশীল এবং আপাদমস্তক একজন আধুনিক মানুষ।
শুধু কথাসাহিত্য নয় রবীন্দ্রসংগীত ও সাহিত্যের বিশ্লেষণেও তাঁর পাণ্ডিত্য ছিল তুলনাহীন। প্রচারবিমুখ, নিভৃতচারী, অন্তর্মুখী এই মানুষটি লেখার মধ্য দিয়েই নিজেকে প্রকাশের চেষ্টা করেছেন। বক্তারা বলেন, রশীদ করীমের মতো বড়ো মাপের লেখক পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থাকলেও সময়ের চেয়ে অগ্রগামী এই শিল্পীকে আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্র যথাযথ মূল্যায়ন করেনি।
কিন্তু বাংলাদেশের জাতিমানসের পরিচয় পেতে তাঁর কথাসাহিত্যের কাছে আমাদের ফিরে যেতেই হবে।
বাংলাদেশ সময় ১৯৩১, ডিসেম্বর ১, ২০১১