ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বইমেলা

মেলায় স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরছে পাঠক, কেনায় আগ্রহ কম

এম আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৯ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৯
মেলায় স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরছে পাঠক, কেনায় আগ্রহ কম

ময়মনসিংহ: ছিমছাম, পরিপাটি এক পরিবেশ। বিকেল থেকে ‘ঠাঁই নাই ঠাঁই নাই’ অবস্থা। ভালোবাসার মানুষকে সঙ্গে নিয়ে কেউ এসেছেন। আবার পরিবারের সবাইকে সঙ্গে নিয়েও অনেকেই আসছেন প্রাণের মেলায়। স্বাচ্ছন্দ্যেই প্রতিটি স্টলে স্টলে ঘুরছেন ক্রেতা ও পাঠকরা। 

সবার হাতে হাতেই বই। আয়েশিভাব নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখছেন।

পছন্দ হলে কিনছেন, ব্যাগ ভরে নিয়ে যাচ্ছেন বই। কিন্তু ভিড়ের তুলনায় বিক্রি কম বলেই কিনা হতাশ স্টলের বিক্রেতারা।  

কথা প্রকাশের সেলস এক্সিকিউটিভ রাজু আহমেদ জানালেন, ‘ময়মনসিংহে এবারের বইমেলায় তাদের আশা পূরণ হয়নি। বই কেনার চেয়ে পাঠকের আগ্রহ বেশি দেখায়। বই যাচাই-বাছাই করতেই যেন মনোযোগী সবাই। ’ 

৬ দিনব্যাপী ময়মনসিংহ বিভাগীয় বইমেলার পঞ্চম দিনে শুক্রবারের (২৯ মার্চ) দৃশ্য ছিলো এমনই। অবশ্য মেলার ২২ নম্বর পঙ্খিরাজ স্টলের দায়িত্বে থাকা মাহমুদা মৌ’র অভিযোগ মেলার আয়োজকদের ওপর।  

তার ভাষ্যে- ‘মেলা জমিয়ে তুলতে, পাঠকদের মেলামুখী করতে যতোটুকু প্রচারণার প্রয়োজন ছিলো, ততোটুকু হয়নি। ফলে দিনভর মেলা প্রাঙ্গণ খা খা করছে। সন্ধ্যার পর কিছুটা বিক্রি-বাট্টা হচ্ছে। ’ 

শিশুদের বইয়ের এ স্টলেই এসেছেন গৃহবধূ নেলিপাল ও রাজলক্ষ্মী পাল। সঙ্গে তাদের দুই সন্তান। নিজের শিশু সন্তানের জন্য রাজলক্ষ্মী কিনলেন শাহজাদী ইয়াসমিনের লেখা ‘চাঁদের দেশে’ বইটি। রাজলক্ষ্মী পালের ভাষ্যে-‘বইমেলা হলে প্রতিবারই ছুটে আসি। কমবেশি বই কিনি। ’ 

নতুন বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহে বইপ্রেমীদের আগ্রহ রয়েছে। দর্শনার্থীর পাশাপাশি মেলায় আসছেন প্রকৃত পাঠকরাও। সারি সারি সাজানো-গুছানো স্টলে তারা ঢুঁ দিচ্ছেন। তবে মেলাতে প্রকাশক এবং লেখকের উপস্থিতি না থাকায় হ্যাপিতেশ করেছেন পাঠকরা।  

ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের স্টলে আব্দুল কাইয়ুমের লেখা ‘বিজ্ঞানের রাজ্যে প্রশ্ন আর প্রশ্ন’ বইটি কিনেছেন গৃহবধূ তাসলিমা আক্তার (৩৫)। জানতে চাইলে তাসলিমা আক্তার বলেন, ‘বিজ্ঞানভিত্তিক বই আমার মেয়ে আলেয়া জান্নাতুল আশার খুব পছন্দ। মেলা হলেই ইচ্ছামতো বই খুঁজতে আসি। বিক্রেতাদেরও হতাশ করি না। সাধ্যমতো বই কিনি। ’ 

এ স্টলের বিপণন কর্মকর্তা এ কে এম কামরুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বইয়ের প্রতি পাঠকদের আগ্রহ বেশি। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানিরা এদেশে কেমন বর্বর ও পৈশাচিকতায় মেতে উঠেছিলো তা জানতে অদম্য কৌতূহল রয়েছে তরুণ-তরুণীদের।  

বাংলানিউজের কাছে তিনি সেরা কয়েকটি বইয়ের একটি তালিকাও দিলেন। এর মধ্যে রয়েছে মঈদুল হাসানের ‘মূলধারা’৭১, মহিউদ্দিন আহমেদ ও মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত ‘পাকিস্তানিদের দৃষ্টিতে একাত্তর (৬ষ্ঠ মুদ্রণ: ২০১৮), লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেএফআর জেকবের ‘সারেন্ডার অ্যাট ঢাকা: একটি জাতির জন্ম (১০ম মুদ্রণ: ২০১৯), শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী (স্ট্যান্ডার্ড), মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের ‘যথাশব্দ: বাংলাভাষার প্রথম ভাব অভিধান’, আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ‘চিলেকোঠার সেপাই (২৭তম মুদ্রণ: ২০১৯), শওকত আলীর ‘প্রদোষে প্রাকৃতজন (১৩তম মুদ্রণ: ২০১৮)।  

বাংলাদেশ সময়: ২১২৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৯
এমএএএম/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।