ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন শুরু

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ৮, ২০১৯
জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন শুরু নৃত্য পরিবেশন করছেন শিল্পীরা-ছবি-শাকিল আহমেদ

ঢাকা: সংস্কৃতি হোক মৈত্রীর বন্ধন আর তা দূর করুক সমাজের অনাচার। এই প্রত্যাশা নিয়ে রাজধানীতে শুরু হয়েছে জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন।

শুক্রবার (৮ মার্চ) সকালে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত মঞ্চে জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের আয়োজিত তিনদিনের ৩৮তম এ সম্মেলনের সূচনা হয়। এসময় ‘আপন হতে বাহির হতে বাইরে দাঁড়া’ সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা করেন শিল্পীরা।

এবারের সম্মেলনে সারাদেশ থেকে সম্মিলন পরিষদের ৬১টি শাখার সদস্যরা অংশ নিয়েছে। সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে প্রায় ৪৫০ জন প্রতিযোগী। একইসঙ্গে প্রতিযোগিতার পাশাপাশি চলবে রবীন্দ্রনাথের গান, আলোচনা, আবৃত্তি ও নৃত্য পরিবেশনা।

বোধন সঙ্গীতের পর উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল। পরিষদের সভাপতি সন্জীদা খাতুনের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে ‘আগুনের পরশমনি’ গানের সুরের সঙ্গে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে উৎসবের উদ্বোধন করা হয়।

প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে উৎসবের উদ্বোধন করছেন অতিথিরা-ছবি-শাকিল আহমেদউদ্বোধনের পর মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি ছেলে ও মেয়েরা সমানতালে এগিয়ে যাচ্ছে। মেয়েদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয়। তবুও এগিয়ে যাওয়া শুরু হয়েছে। সেই শুরুটা বোঝা যায় বিভিন্ন পরীক্ষার ফলাফলে। সেখানে মেয়েরা এগিয়ে। যে সমাজে নারী-পুরুষ একসঙ্গে এগিয়ে যায় সেই সমাজে অগ্রগতি কেউ রোধ করতে পারে না। বিশ্বের সব মেয়েকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি পৃথিবীকে টিকিয়ে রাখার জন্য।

প্রাত্যহিক জীবনে রবীন্দ্রনাথের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, আমার এমন একটা দিনও কাটে না রবীন্দ্রসঙ্গীত না শুনে। যে মানুষটি রবীন্দ্রসঙ্গীত উপভোগ করতে পারে না তার মত দুর্ভাগা আর কেউ নেই। ছোটবেলায় দেখেছি, আমাদের বাসায় বয়স্ক লোকের ছবি। সে আমার দাদা বা নানা কেউ নন তিনি রবীন্দ্রনাথ। সেই শিশুকাল থেকেই আমাদের মধ্যে রবীন্দ্রনাথ পড়ার ধারা চালু করেছিলেন বাবা। কিন্তু আমার দুঃখ হয়, নতুন প্রজন্ম পাঠ্যবইয়ে স্থান পাওয়া গল্প কবিতা ছাড়া রবীন্দ্রনাথের অন্য কোনো লেখা পড়ে না। তাদের এ বিষয়ে আমাদের আরও আগ্রহী করে তোলা উচিত।

সন্জীদা খাতুন বলেন, আমাদের সাধনা সিদ্ধির পথে চলছে। শুরুতে এই সংগঠনের কাজ ঢাকাকেন্দ্রিক ছিল, এখন সারাদেশে ছড়িয়েছে। সংস্কৃতির চর্চা চলছে।

তিনি বলেন, সংস্কৃতির চর্চা মানুষকে ভালবাসতে শেখায়। সমাজের অনাচার দূর করতে সংস্কৃতি একটা আশ্রয়। সেই সংস্কৃতির আশ্রয়ে আমরা সারাদেশের মানুষকে মৈত্রীর বন্ধনে আবদ্ধ করতে চাই। সারাদেশে রবীন্দ্রসঙ্গীত চর্চা ও প্রশিক্ষণ যে হচ্ছে তাই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বুঝতে পারি। বছরের একটা সময়ে এসে পরিচিত মুখগুলো দেখে মনটা ভরে যায়।

বুলবুল ইসলাম বলেন, বিশ্ব নারী দিবসে এই সম্মেলন শুরু হলো। রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন একজন নারী। ছায়ানট ও রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের মতো দু’টি বড় সংগঠনের সভাপতিও একজন নারী। এই দুই ক্ষেত্রেই আমরা নারীর এগিয়ে চলার বার্তা পাই।

উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে পরিবেশিত হয়  গীতি আলেখ্য ‘বিশ্বভরা প্রাণ’। এর সঙ্গীত পরিচালনা করেন  লাইসা আহমদ লিসা, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর শুরু হয় কিশোর বিভাগের সঙ্গীত প্রতিযোগিতা। বিকেলের অধিবেশনে সঙ্গীত পরিবেশন করবে গানের দল রবিরশ্মি। এছাড়াও থাকছে আবৃত্তি ও নৃত্যানুষ্ঠান। জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে শেষ হবে প্রথমদিনের অধিবেশন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০১৯
এইচএমএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।