ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

চার চরণের কাব্যনৃত্য

কামরুল হাসান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১১
চার চরণের কাব্যনৃত্য

সকালের কবিতা আমি জমিয়ে রাখি সন্ধ্যার জন্য
যৌবনের আবেগ ফুটেছিল বয়সের পড়ন্ত আলোকে
সন্ধ্যার কবিতা আমি পাঠাবো কোন নক্ষত্রলোকে?
রাতের পরাগ দিয়ে ঢেকে দিব তার প্রতি কণা, বর্ণ?

২.
আমার কবিতা শত অনির্ণেয় প্রেমের বর্ণন
নিষ্ঠায় সে ছুঁতে চায় কাব্যের দেবীর চরণ
গ্রহের মানবীরা হতে পারে নিকট শরণ
কবির কলমে ফোটে অসীমের সমূহ ধরণ!

৩.
পৃথিবীর গোল মুখখানি সঙ্গে নিয়ে যাই অনন্তদূরে
আলোর বেগে পাড়ি দিই অসীমের বিরাট পরিধি
এসেছি ফের চিরচেনা পৃথিবীতে নক্ষত্রপ্রদেশ ঘুরে
পাইনি গ্রহটির মতো প্রাণ, অমন নীল স্বপ্নের বারিধি!

৪.
ভুবনে নেমেছে কত সহস্র আলোকের তীর
তারাত ব্যর্থ হল খুব জাগাতে অধীর
অযুত গ্রহপিণ্ডে জীবনের দারুণ উন্মেষ
শুধু রবির আলো করে প্রাণেতে প্রবেশ!

৫.
কবিতার পাখি বুঝি উড়ে আসে হাজার হাজার
যখন পাখির মাংসে ভরে আছে মনুষ্য বাজার
তাদের চর্ব্য-চোষ্য, লেহ্য-পেয় সকল খাবার
পাখিময়; কী করে গড়ি কবিতায় পাখির খামার?

৬.
তোমাদের ছায়াঢাকা, পাখিডাকা গ্রামে এসে গেছি
এখানে সহজ শর্তে নীলিমায় হৃদয়ের সীমানা বেচেছি
নদীরেখা ধরে সবুজের মাঠে দুদ্দাড় কত যে ছুটেছি
তবু কি তোমার দেখা, হে ললনা, কখনো পেয়েছি?

৭.
মুগ্ধ হবার বয়স বুঝি ফুরিয়ে এল আজ
গাছেরা দেখায় নতুনতর, আহ্লাদিত সাজ
ঐ নীলিমার পরীর দল ডাঙ্গার প্রতি লুব্ধ
এ আঙ্গিনায় নেমে বলে, আমরা প্রীত, মুগ্ধ !

৮.
কী লিখি কী লিখি, তোমার বর্ণমালা শিখি
শব্দ, উপমা, প্রতীকেরা উড়ে গেছে দূরে
কাব্যের অলঙ্কার ঐ রূপময় দেহ জুড়ে
কবিতা পৃষ্ঠা সাদা, শুন্যের ঝিকিমিকি!

৯.
সে কেন আমার কাছে এসে শুধায় না ভুলে যাওয়া নাম
সে কেন প্রাণের মন্দিরে দূর থেকে রাখে ভয়ের প্রণাম?
আমি তো তার দিকে কবিতার ডানা নিয়ে উড়ি নির্ভয়
সে তবু ‘জলের সাথে ঘুরে ঘুরে’ অবিরত কথা কয় !

১০.
ঝড়ের মতো এসে তুমি উড়ালে আমার নিলয়
কাঁপি আমি বনাঞ্চলে বৃক্ষ যেমন কাঁপে
উদয়ভানুর পথ দেখালে অস্তাচলের ঝাঁপে
হারাই আমি বিহ্বলতায় যা ছিল সঞ্চয়!

১১.
খুব ভোরে গিয়েছিলাম তোমার ঘুমের পাড়ায়
ঘুম ভেঙ্গে বল্লে তুমি, কে যে কড়া নাড়ায় ?
ভূতের মত দাঁড়িয়ে আছে ভোরের দরোজায়
এমনকি সে আচম্বিতে উষ্ণ দু হাত বাড়ায়।

১২.
তার ছিঁড়ে গেছে, বাজে না তাই সুমিষ্ট সুরের বীণা
নৈশব্দ্যের দিকে বাজনাগাছ ফিরে ফিরে যাই
তোমার রূপের ঘরে ধ্রুবনীল পোড়ে রোশনাই
আকাঙ্ক্ষার খাটে অহোরাত্র জ্বলে, তুমি নিদ্রাহীনা!

বাংলাদেশ সময় ১৩৫৫, নভেম্বর ১৭, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।