ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

লোকসুরের প্রেমানুভূতিতে স্মরণ শচীন দেব বর্মণকে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৫৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৮
লোকসুরের প্রেমানুভূতিতে স্মরণ শচীন দেব বর্মণকে কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে শচীন দেব বর্মণ সঙ্গীত উৎসবের আয়োজন করা হয়। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: শচীন দেব বর্মণ। বাংলা সংগীতের আকাশে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। বিশেষ করে লোকসংগীতে তার অবদান অনন্য। লোকজ সে ধারাতেই গেয়েছেন প্রেমের গান। দরাজ কণ্ঠে মনের অভিব্যক্তিকে উপস্থাপন করেছেন শ্রোতার সামনে। 

চেয়েছেন একজন প্রেমিক যখন প্রেমিকাকে ভালোবাসে, তার সে ভালোবাসাটা কেমন, তা সবাই জানুক। তার মনে লুকানো যে বাসনা, তা সবার সামনে স্পষ্ট হয়ে উঠুক।

তাই তো গেয়েছিলেন 'শোন গো দখিন হাওয়া, প্রেম করেছি আমি/ লেগেছে চোখেতে নেশা, দিক ভুলেছি আমি...’।

শনিবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় তার সে প্রেমবোধ ও মাটির গানের মাদকতাতেই স্মরণ করা হলো সুন্দর মনের এই শিল্পীকে। এ গানের সঙ্গে বহ্নিশিখার নৃত্য শিল্পীদের সম্মেলক নৃত্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় 'শচীন দেব বর্মণ সঙ্গীত উৎসবে'র দ্বিতীয় দিন। নৃত্য পরিচালনা করেন সাহিদা রহমান সুরভী।

ভালোবাসার জন্য যে সুন্দর মন, যে সাহস থাকা প্রয়োজন, তা তিনি সুরের প্রয়োগেই বুঝিয়ে দিয়েছেন। এ গানের মধ্যে বাংলার ঋতুর কথা যেমন রয়েছে, তেমনি সুরের মধ্যেও রয়েছে মাটির গানের মাধুর্য। আবহমান বাংলার মানুষের মনে যে ভালোবাসাবোধ, তাকে জাগ্রত করেই রাজধানীর কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির শওকত ওসমান মিলনায়তনে তিন দিনব্যাপী এ উৎসব শেষ হবে রোববার (২৫ নভেম্বর)।

দ্বিতীয়দিনের আয়োজনে সন্ধ্যায় সম্মেলক নৃত্যের পর একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী ইফফাত আরা নার্গিস, প্রিয়াংকা গোপ, সুমন চৌধুরী, মামুন জাহিদ খান, আজফারুল ইসলাম সূর্য ও আবিদা রহমান সেতু।  

এসময় শিল্পীরা শচীন দেব বর্মণের গানের মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তোলেন বাংলার প্রকৃতির কথা, নদীর কথা, মাঝির কথা, এমনকি বাংলার ঐতিহ্যমণ্ডিত বিভিন্ন উৎসবের বর্ণনাও।

উৎসব নিয়ে কথা হয় আগত দর্শনার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষার্থী ফারিয়া রহমান ও নাইমুল ইসলামের সঙ্গে। শচীন দেব বর্মণ সবসময়ই তাদের প্রিয় শিল্পী বলে জানান এই শিক্ষার্থীরা।  

বললেন, তার গানের লোকজ ধারা, প্রেম আর দেশের প্রতি ভালোবাসা নিয়েও। তারা বলেন, রাজধানীবাসীকে লোকজ সুর মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য এ উৎসব সত্যিই অনন্য।

শিক্ষার্থীরা বলেন, শচীন দেব বর্মণ যে ধারায় গান করেছেন, তাতে লোকসুরের ভাব তৎকালীন সময় থেকে এখন পর্যন্ত সমানভাবে জনপ্রিয়, যার সুর শুনলেই শ্রোতার মনে প্রেমানুভূতি সিক্ত হয়। ‘কীর্তনের সুরেরও মিশ্রণ ঘটিয়েছেন খুব সুন্দরভাবে। বাংলা মায়ের কথা তিনি যে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন তার সুরে প্রাণের আকুতিতে, তা প্রমাণ করিয়ে দেয় বারবার। ’

আয়োজনের শেষ নিবেদন হিসেবে উপস্থাপন করা হয় শচীন দেব বর্মণের আধুনিক, লোক ও চলচ্চিত্রের সঙ্গীতের সঙ্গে সম্মেলক নৃত্য। ভারতের কলকাতা থেকে আগত ভাবনা ড্যান্স একাডেমির এ নৃত্য পরিচালনা করেন দীপঙ্কর দত্ত।

রোববার আয়োজনের তৃতীয় ও শেষ দিনে বাংলাদেশ এবং ভারতের প্রখ্যাত সঙ্গীত ও নৃত্যশিল্পীদের অংশগ্রহণে লোকসুরে অস্তিত্ববোধকে জাগিয়ে দেওয়া শিল্পী শচীন দেব বর্মণকে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৮
এইচএমএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।