ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

করমআলির মৃত্যু

মহি মুহাম্মদ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১১
করমআলির মৃত্যু

পূর্ব কৈয়া গ্রামে যে রাত জ্যোৎস্নায় ভেসে যায়, চরাচর ডুবে যায় হলুদের বন্যায়, আকাশ থেকে থোক থোক কাঁচা সোনার মত জ্যোৎস্না গলে গলে পড়ে, সে রাতে পাহাড়ের ঢালুতে এক নম্বর লাইনের মানুষের কারো চোখে ঘুম নামে না। অনেকেই ঘুম কামনা করে কিন্তু ঘুমপরি সহজে এই পাহাড়ের ঢালুতে বসবাসরত মানুষের কারো চোখে ধরা দেয় না।

সবাই তখন জেগে জেগে গল্প বলে। কিসের গল্প বলে? না, তারা বানেছা পরি বা দৈত্যের গল্প বলে না। ওরা বলে রাহেলা খাতুনের স্বামী, আমেনা-মোমেনার বাপের গল্প। হ্যাঁ, আমেনা-মোমেনা বাপের নাম করম আলি। কেউ কেউ তাকে করম আলি মুনশীও বলে। কৈয়াছড়া চা বাগানের জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন ছিল করম আলি মুনশী।

ঐ তো হেঁটে যায় করম আলি। আকাশ গলে চাঁদের বান ছুটেছে। জ্যোৎস্না দেখে দেখে আকাশের দিকে তাকিয়ে করম আলি কাঁঠালপাতা মাড়িয়ে হেঁটে যায়। শুকনো পাতা খচমছ শব্দে মিইয়ে যায় করম আলির পায়ের তলায়। করম আলি আফসোস করে, এ হা মনু, দুঃখ পাইছো?

 না, করম আলি হাঁটে না। করম আলির পায়ের দুপদাপ পায়ের শব্দ কেউ শোনে নি। সবাই তাকিয়ে দেখে করম আলি হা করে জ্যোৎস্না গিলছে। সে যখন হা করতো তখন সবার আগে তার  তরমুজের বিচির মত দাঁতগুলো বেরিয়ে পড়তো। তাতে পানের রং এমনভাবে লেপ্টে থাকত যে তার দাঁতের স্বাভাবিক রং কেউ কখনো দেখেনি।

পানের রসের লাল পিক দু গালের ঠোটের কোশে চিকচিক করতো। মাঝে মধ্যে সবাই করম আলির গানের সুর শুনতো। তবে যে দুটি লাইন তারা শুনতো তা ছেলে বুড়োর সবার মুখস্থ হয়ে গিয়েছিল। করম আলিকে দেখলেই ছেলের দল সুর করে তার গানের চরণগুলো গাইতো।

 

ও মুর্শিদরে, তোমারে শুধাই

আমার ভাঙাতরি লইয়া কোন পথেতে যাই।

 

ছেলেদের এইটুকু গান ঠিকই ছিল। কিন্তু তারপরেই তারা ব্যঙ্গ করে বলতে শুরু করতো,

 

করম আলি কানা

পথ ঘাট চিনে না।

ও মনু ভাত খাইছো, না খাবা?

ডাইলে লবণ দিছো না দেবা?

 

করম আলি হাসি মুখে চলে যেত। ছেলেরদল সুর করে বলতেই থাকতো।

করম আলি হাটে গেলে হাতে লাউ কিংবা মুলা থাকত। আর পানের রসে মুখ ভেজানো ছাড়া তাকে অন্যভাবে  কেউ কখনো দেখেনি। করম আলির মেয়ে দুটো নিয়েই যতো চিন্তা ছিল তার। কিভাবে ওদের বিয়ে দেবে সারাক্ষণ এই চিন্তায় মশগুল থাকতো। সে ছিল বড়ই সহজ সরল। ইমামের ধমক-ধামক খেত বেশি। কথাও একটু বেশিই বলত। রাতে মসজিদে থাকত। ভোরের আজান দিয়ে নামাজ পড়ে সে এক নম্বর লেবার লাইনের মধ্যে দিয়ে বাসায় ফিরে আসতো। সে রাতে যদি জ্যোৎস্না ঝরতো তবে করম আলির কণ্ঠেও গুন গুন করে গান বাজতো--  ও মুর্শিদরে, তোমারে শুধাই, আমার ভাঙাতরি লইয়া কোন পথে তে যাই।

http://www.banglanews24.com/images/PhotoGallery/2011November/20111111211028.jpgকরম আলি জ্যোৎস্নার সঙ্গে কথা কয়, বেডা একটা খবিশ --- চৈদ্দটা বিয়ে করা বেটা ওহিদ্যা যখন লাইনের মানুষকে এই কথা বোঝাতে শুরু করে, তখন অনেকেই বলে, বাদ দাও, ওহিদ ভাই উনি হচ্ছেন আল্লাহঅলা  মানুষ, ওর পেছনে লাইগ্যা তোমার কাম নাই। ওহিদের ছোট্ট দোকানটায় যারা চা খেতে আসে তারা ওহিদকে এভাবে বোঝাতে থাকে। কিন্তু ওহিদ অনেক সময় শুনেও না শোনার ভান করে। সে অনর্গল বলে, শালা একটা ভণ্ড। জানে না চেটটাও, হুদাহুদা মানুষ ঠকায়। ভালো কইরা আজান দিতেও জানে না। হেদিন ম্যানেজার ক্ষেপছিল হালার ওপর। আরেকটু হইলে চাকরিডা খতম হইতো। ঘড়ি টরি চিনে না, উল্টা পাল্টা টাইম দেইখ্যা দিছে আজান, আর ম্যানেজার ডাকাইছে। মুখের উপরে যা তা কইছে। আমরা কইছিলাম, দেন স্যার চাকরিডা খতম কইরা, বেডা ভণ্ড চুপচাপ থাহে কিন্তু ভিতরে ভিতরে বেডা শয়তান।

 

ওহিদের কথা শুনে অনেকেই চুপ মেরে যায়। তারা করম আলি সম্পর্কে এমন কথা শুনতে নারাজ। করম আলি কখনই কারো পেছনে লাগে না। সে কখনো কাউকে গালি দেয় নাই, মারে নাই,ধরে নাই। তবে কেন ওহিদ করম আলির পেছনে লেগেছে একথা সবাই জেনেছিল অনেক পরে।

 

ওহিদের দোকানের সামনে দিয়ে চলে গেছে প্রধান রাস্তা। লাল মাটির রাস্তার দুপাশে কাঁঠাল গাছ। পাঁচ হাত পর পর কাঁঠাল গাছগুলো তারুণ্যে ভরা। তাই রাস্তায় সব সময় কাঁঠাল  পাতা  মচমচ করে। কেউ হেঁটে গেলেই পাতার মচমচানি কানে বাজে। ওহিদের চায়ের দোকানে যারা বসে থাকতো তারা মুখ ফিরিয়ে তাকালেও তাকাতো তবে ওহিদের মুখ ফেরাতে হতো না। কারণ ওর চোখজোড়া শকুনের মতো রাস্তায় সব সময় পড়ে থাকতো।

করম আলির উপর ওহিদের এমন বিরূপ মনোভাবের সঠিক  কারণ কেউ কেউ আড়ালে--- আবডালে বলে বেড়াত। কারণটা এই যে ওহিদ সম্প্রতি মনস্থির করেছে সে, পনের নম্বর বউ ঘরে আনবে। এবং এই বউটি সে পছন্দ করেছে, করম আলির বড় মেয়ে আমেনাকে। লোকে বলে আমেনাকে দেখে ওহিদের মায়া লেগেছে বিধায় সে পনের নম্বর বিয়ে করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমেনাকে না পেলে তার জীবনে কোন বিয়ে হয়নি, এই বোধ চিরন্তন হবে--- এই কথাও কেউ কেউ বলছে। ওহিদ নাকি গোপনে একদিন ইমাম সাহেব আর করম আলিকে দাওয়াত করেছিল।   বেশ ভালোভাবে আপ্যায়নের পর করম আলিকে যখন সে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল তখন করম আলি ম্লান হেসে ঠাট্টাচ্ছলে বলেছিলো, এহা বাজান, কও কি? অমন কথা ফের মুখ দিয়া কও বাছে।

সেই থেকে ওহিদ করম আলির পেছনে লেগেছে--- এই বিশ্বাস যখন অনেকের মনে দানা বেঁধেছে, তখন ওহিদ করম আলিকে পাগল সাব্যস্ত করার জন্য কিংবা করম আলিকে চাকুরিচ্যুত করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। লোকেদের মধ্যে কেউ কেউ যখন করম আলিকে ডেকে শুধোয়, ও করম আলিভাই, তোমার নামে সবাই কী কয়, সত্য নি?

করম আলি হাসি হাসি মুখে বলে, কী কয়, ঐসব কতা হুনো ক্যা? ওগো মুখ আছে কইতে দ্যাও বাজান। কইতে কইতে একদিন মুখ ব্যথা হরলে আর কইবে না। আর আইজকা কইতাছে কউক, কাইলকা ভুইল্লা যাইবে। আরে ওরাইতো আমাগো আপনজন, ওরা কইবে না তো কইবে কারা? আইজকা গাইল দিছে কাইলকা আদর করবে। কি কও বাজান, সইত্য না?

কেউ কেউ বলে, ওহিদ সহজে দমবার পাত্র নয়। অতীতে ও যে মেয়েদের টার্গেট করেছে সবগুলোকেই ঘরে তুলেছে। ও এমন একটা মন্ত্র জানে ঐ মেয়ের নাম ধরে মন্ত্র পড়ে প্রশ্রাব করলে ঐ মেয়ে এমনিতেই ওর ঘরে চলে আসে। কাজেই লোকজন যারা আমেনাকে বিয়ে করার খবর  পেয়েছিল তারা এখন অপেক্ষায় থাকে কখন আমেনা ওহিদের ঘরে ওঠে। এই জাদুবিদ্যা দেখার জন্য অনেকেই ঘুর ঘুর করে। তবে যুবক যারা প্রতিনিয়ত আমেনার আসা যাওয়ার পথে দীর্ঘশ্বাস ফেলে তারা ভাবে আমেনা তাদের মধ্যে থেকেই কাউকে বেছে নেবে।

আমেনা কাজ করে ম্যানেজারের বাসায়। এর জন্যে ও লাইন দিয়ে যাবার সময় অনেকেই ওকে ঘাটাতে চায় না। যদি ম্যানেজার বাবুকে সত্যি মিথ্যা লাগিয়ে দেয় তবে চৌকিদার দিয়ে ধরে নিয়ে গিয়ে রাম ধোলাই দেবে। কাজেই আমেনার আসা যাওয়ার পথে যারা দীর্ঘশ্বাস ফেলে তারা অনেকেই চোখ জুড়িয়ে শুধু আমেনার রূপ যৌবন দেখে, তাছাড়া কথা বলার সাহসটুকও তারা পায় না। তবে আমেনা স্বাভাবিক ভাবে এপাশ ওপাশ তাকিয়েই চলে। এতে অনেক সময় অনেক যুবকের উপর তার যে চোখ পড়ে না তা কিন্তু নয়। এতে অনেকেই নিজেদের ভাগ্যবান মনে করে। তবে ওহিদের দোকানের সামনে এলে আমেনার পা জোড়ায় বিদ্যুৎ খেলে। তখন ওহিদের মুখে একটি গানের কলি বেজে ওঠে। ‘রইস্যা বন্ধু যারগই বুকত শেল মারি’। সকালে, দুপুরে এবং সন্ধ্যায় একই গানের সুর শুনতে শুনতে সবার জানা হয়ে গেছে ওহিদ কোন সময় গানে টান দেবে। অপরদিকে যারা আমেনার দিকে তাকিয়ে থাকে তারা দেখে আমেনার পা জোড়াতে যদিও বিদ্যুৎ গতি এসেছে তা সত্বেও তার ঠোটের কোণে বিজলি চমকে উঠেছে।

করম আলির লাউ ক্ষেতের সবুজ সবুজ পাতা জ্যোৎস্নার ঢলে কালচে লাগে। এশার নামাজ পড়ে যখন করম আলি খেতে আসে তখন লাউয়ের মাচাঙের সামনে দাঁড়িয়ে লাউয়ের ডগার দিকে এক মনে তাকিয়ে থাকে। রাহেলা খাতুন ঘর থেকে বেরিয়ে এসে স্বামীকে অমনভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বলেন, এ হা, তোমারে কি ভূতে ধরছে? এ হা খাইতে আহ না ক্যা?

আমেনার মা দেকছো কী সুন্দর কাইলচা সবুজ লাউপাতা। আকাশেরতুন জ্যোৎস্না চুঁইয়া পড়তাছে, এ হা, কী সুন্দর দেখছো?

ঢং হরো বুইরা কালে তোমারে ভূতে পাইছে, না!

রাহেলা খাতুনের কথায় করম আলির ভাবাবেগ বাড়তে পারে না। লোকে বলে করম আলির ঘরে অভাব অনটন ছিল। আর করম আলির বউয়ের বারো মাস অসুখ-বিসুখ লেগে থাকত। সে খুব অভাবি মানুষ ছিল। সেই অভাবি মানুষটার চাকুরি একদিন চলে গেল। কেন গেল? কী দোষ করম আলির?

করম আলি একদিন ফজরের নামাজের আগেই আযান দিয়ে ফেলেছে। সেই অপরাধে তাকে ডাকা হলো। ম্যানেজার যা তা গালি গালাজ করলো, করম আলি চুপচাপ মাথা নিচু করে শুনলো। গালি গালাজেই থামলো না ম্যানেজার সাহেব। বারবার ধমকে করম আলিকে জিজ্ঞেস করলেন, কোন সাহসে তুমি রাতের তিনটা বাজে আযান দিলা বলো। চুপ করে থাকবানা।

করম আলি মিন মিন করে বলল, ছার এই কথা আপনারডে কওয়া যাইবে না।

বলা যাবে না, কি বলো?

ম্যানেজারের চোখ কপালে ওঠে। তিনি আরো বেশি রেগে ওঠেন।

ম্যানেজারের রাগ দেখে ভয়ে করম আলি থর থর করে কাঁপতে লাগলো। বলল, ছার আমি বলতে পারতিছিনা তেনারা আমারডে মানা কইরা গেছে। কইছে খবরদার, এই কতা কারোরডে কও বাছে! এ কথা কইলে তোমার খেতি হইবে।

ম্যানেজার আরো জোরে ধমকে ওঠেন। গাঁজা খাইছো বেটা, আজগুবি গল্প বানাও না? ধইরা পিটুনি দিলে বুঝবা।

করম আলি দেখে না বললে তার নিস্তার নেই। সে মিন মিন করে বলতে থাকে, ছার তেনারা লম্বা চাইরজন মানুষ আয়ছেলে মছজিদে। উনাগো চেহারা দেকলেই বুঝা যায় তেনারা যেমন তেমন মানুষ না। তেনারা কইলো করম আলি আযান দাও, আমরা নামাজ পইড়া এই মসজিদ থাইকা বাবার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হব। ইয়া লম্বা লম্বা দাঁড়ি,পাগরি, আচকান খুশবতে মসজিদ মউ মউ করতে আছিলে। মুই আর না করতে পারি নাই। ঘরির কাডা দেহি সময় হইয়া আইল্লে। তাছাড়া বারো আউলিয়ার দেশে কোন আউলিয়ারে নাখোশ কইরা মুই আবার কোন বিপদে পড়ি। তাই সোবহানাল্লাহ কইয়া মুই আজান দিলাম।

ঠিক করছো। এহন যাও ঘরে বইসা আঙুল চোষ গা।

করম আলির চাকুরি চলে গেল। তার অদ্ভুত কাহিনি লোকের মুখে মুখে প্রচার হয়ে গেল। কেউ কেউ গভীরভাবে বিশ্বাস করলো। আবার কেউ কেউ ভ- বলে আখ্যা দিল।

তবে সবাই পরেরদিন বুঝতে পারলো আসলে করম আলি মিথ্যা কথা বলে নাই। করম আলি বলেছিল এই কথা বলেদিলে তার ক্ষতি হবে। ঠিকই যেদিন করম আলির চাকুরি চলে গেল সেদিন রাতে করম আলি তার বাড়ির নিচে জমিনের উপর সেজদা দিয়ে পড়ে রইলো। সে রাতে জ্যোৎস্না ছিল। জ্যোৎস্নার বান ডেকেছিল সে রাতে। অবিশ্বাস্য জ্যোৎস্নায় চারপাশ ভেসে যাচ্ছিল। শেষ রাতে জমিনের মধ্যে কেন করম আলি নামাজ পড়তে গিয়েছিল তা কারো মাথায় ঢোকে না। সকালে দেখা গেল নামাজের মত করে বসে আছে করম আলি। গায়ে কোথাও তার কোনো আঁচড়েরর দাগ নেই। কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। জায়নামাজের ওপর সুন্দর মানুষ ঘিয়া রঙের পাঞ্জাবি পড়ে বসে আছে। কেউ বলে, আসলে করম আলি বসে ছিল না, সে সেজদা দেবার ভঙ্গিতে ছিল, কেউ কেউ বলে,  না, করম আলি আকাশের দিকে তাকিয়েছিল কারণ সে রাতে চাঁদের জ্যোৎস্না ছিল। করম আলি জ্যোৎস্না ভালোবাসত। তাই জ্যোৎস্নার মধ্যে খোলা মাঠের মধ্যে নামাজ পড়তে গিয়েছিল। আর তেনারা আইসা করম আলির জান কবজ কইরা নিয়া গেছে। কারণ করম আলি অপরাধ করেছে। তেনাগো কথা ম্যানেজাররে কইয়া দিয়া করম আলি পাপ করছে। এই জন্যে তেনারা করম আলিরে মাইরা ফেলাইছে।

এরপর  যে ওহিদ করম আলিরে ভণ্ড  বলতো, সে-ই করম আলির প্রশংসা গুণগান শুরু করলো। করম আলির দাফনের ব্যবস্থা সেই করলো। শুধু তাই নয়, চার দিনের দিন করম আলির রুহের মাগফেরাতের জন্য সে মিলাদ শেষে সবাইকে ডালভাত খাওয়ার ব্যবস্থা করলে অনেকেই ওহিদের এই কাজটির প্রশংসা করে। করম আলির জ্যোৎস্না দর্শন সম্পর্কে উপযুক্ত ব্যাখ্যাও এখন ওহিদই মানুষকে বলে বেড়ায়। কারণ আরেকটি জ্যোৎস্নারাত আসার আগেই লোকজন আগাম সেই জ্যোৎস্নারাতের গল্প বলতে থাকে। আর সেই জ্যোৎস্নারাতের গল্পে করম আলি না থাকলেও লোকজন অবাক হয়ে দেখে সেখানে তার মেয়ে আমেনা রয়েছে। আর আমেনা সুন্দর লাল শাড়ি পড়ে ওহিদের ঘর থেকে বেরুলে লোকজন ওহিদের জাদুবিদ্যায় বিশ্বাস স্থাপন করতে চায়। আর ওহিদ লোকজনকে করম আলির জ্যোৎস্না দর্শন সম্পর্কে আলোকপাত করে তাকে সবার সামনে ভালো মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াস পায়।

 

বাংলাদেশ সময় ২০৩২, নভেম্বর ১১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।