উত্তর আমেরিকায় প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হলো অসাধারণ এক কবিতাসন্ধ্যা, যার আয়োজক বাংলা কবিতার অন্যতম প্রাণপুরুষ শহীদ কাদরী। তার উপস্থিতিতে ৩১ জুলাই ২০১১ এর বিকেলটি হয়ে উঠেছিল যেন কাব্যময় আকাশের ছায়া।
অনুষ্ঠানটি ছিল তিনপর্বে বিভক্ত। প্রথম পর্বের ফিচারড পোয়েট ছিলেন শামসুর রাহমান। তাঁর বেশ ক`টি কবিতা আবৃত্তি করেন - মুজিব বিন হক, মুমু আনসারী, জেসমীন মোশতাক ও সেমন্তি ওয়াহেদ।
শহীদ কাদরী অনুষ্ঠানে বাংলা কবিতার ইতিহাস ও বিবর্তন নিয়ে বক্তব্য রাখেন। তিনি শামসুর রাহমানের কবিতার নানা দিক ও অনুষঙ্গ তুলে ধরে তার কবিতার বর্ণিল ভুবনে নিয়ে যান উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের।
শহীদ কাদরী বলেন, আধুনিক কবিতা নবতর প্রাণ পেয়েছে শামসুর রাহমানের হাতে। শামসুর রাহমানের কবিতার সাথে আমার পরিচয় সেই ১৯৫৪ সালে। রাহমান তাঁর কবিতায় মানব জীবনের বহু বিচিত্র অনুভূতিকে ধারণ করেছেন বহুমাত্রিকতায়।
দ্বিতীয় পর্বে ছিল ষাটের দশকের তিন জন কবির কবিতা। এরা হলেন- আবদুল মান্নান সৈয়দ, সিকদার আমিনুল হক ও রফিক আজাদ। কবিত্রয়ের কবিতা আবৃত্তি করেন- ক্লারা রোজারিও, রওশন আরা লিপি, মনজুর কাদের ও জি এইচ আরজু।
পিনপতন নীরবতার মধ্য দিয়ে হলভর্তি দর্শক শ্রোতারা উপভোগ করেন এই কাব্য প্রক্ষেপণ।
শেষ পর্বে কবি শহীদ কাদরী যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসী তিনজন কবিকে উপস্থাপন করেন। আশির দশকের এই তিন কবি হচ্ছেন- তমিজ উদদীন লোদী, ফকির ইলিয়াস এবং শামস আল মমীন।
শহীদ কাদরী বলেন, এরা পরবাসে থেকেও বাংলা কবিতার চর্চা ও বুননকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। একে একে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন - তমিজ উদদীন লোদী, ফকির ইলিয়াস ও শামস আল মমীন।
শহীদ কাদরী তাঁর সমাপনী ভাষণে বলেন, আমরা আমেরিকায় এমন আয়োজন আরও করার ইচ্ছে পোষণ করছি। পরবাসে যারা কবিতার জন্য নিরলস শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন, আমরা তাদেরকে আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।
দর্শক-শ্রোতাদের মধ্য থেকে অনেকেই বলেছেন, প্রায় দু’ঘণ্টাব্যাপী এই অনুষ্ঠানটি ছিল সাম্প্রতিক কালের একটি শ্রেষ্ঠ পরিকল্পনা । তারা শহীদ কাদরীর এমন উদ্যোগকেও স্বাগত জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময় ১৫১৫, ২ আগস্ট, ২০১১