ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

আজি রাজ-আসনে তোমারে বসাইবো

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০১৬
আজি রাজ-আসনে তোমারে বসাইবো

‘মন হারাবার আজি বেলা/পথ ভুলিবার খেলা-মন চায়, /মন চায় হৃদয় জড়াতে কারও চির ঋণে/ আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদর দিনে...। ’
রবীন্দ্রসঙ্গীত ছাড়া বাঙালির বরষাযাপন অসম্পূর্ণ।

গুরুদেবের প্রায় গানেই জড়িয়ে রয়েছে বৃষ্টির ছন্দ। বাদলদিনের সঙ্গে তার এতোটাই প্রেম ছিলো যে, শ্রাবণদেবের রথে চেপে কবিগুরু পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিয়েছেন অন্য ভুবনে।
২২শে শ্রাবণ কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মহাপ্রয়াণ দিবস। ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের (১৯৪১) এই দিনে এ কবি, ঔপন্যাসিক, সঙ্গীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক অন্যভুবনে পাড়ি জমান।  

শিল্প-সাহিত্যের প্রায় সব ধারাতেই কবিগুরুর পদধ্বনি পাওয়া যায়। জীবদ্দশায় মোট দুই হাজার ছবি এঁকেছেন। একটি স্বতন্ত্র নৃত্যশৈলীও প্রবর্তিত হয়েছে তার হাতে। যা রবীন্দ্রনৃত্য নামে বিশেষভাবে পরিচিত।  

মাত্র আট বছর বয়সে কবিতা লেখা শুরু করেন রবীন্দ্রনাথ। তার প্রথম প্রকাশিত কবিতা ‘অভিলাষ’। এ পর্যন্ত তার ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন  প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও গল্পগুচ্ছে ৯৫টি ছোটগল্প, গীতবিতানে মোট এক হাজার নয়শো ১৫টি গান সংকলনসহ অপ্রকাশিত রচনাগুলো ৩২টি খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলিতে প্রকাশ পেয়েছে।  

লেখালেখির চৌকাঠ পেরিয়ে তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯০১ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বোলপুরে ‘শ‍ান্তিনিকেতন’ প্রতিষ্ঠা করেন। তখন প্রতিষ্ঠানটির নাম ছিলো ব্রহ্মচর্যাশ্রম। পরে তা শান্তিনিকেতন বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয় ও বর্তমানে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় নামে বিশ্বের কাছে পরিচিত। এছাড়াও ১৯২১ সালে গ্রামের উন্নয়নের জন্য ‘শ্রীনিকেতন’ নামে একটি সংস্থা স্থাপন করেন। বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।  

১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থেরর জন্য নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। সহিত্যে অসামান্য কীর্তি তাকে গুরুদেব, কবিগুরু ও বিশ্বকবির মর্যাদা দিয়েছে।  

গুরুদেবের শেষজীবন তেমন ভালো কাটেনি। টানা চার বছর অসুস্থ ছিলেন। ১৯৪০ সালে অসুস্থতার জন্য তিনি শয্যাশায়ী হন। তবে মৃত্যুর এক সপ্তাহ আগ পর্যন্ত তার লেখনী ছিলো সচল। ১৯৪১ সালের ০৭ আগস্ট, বাংলা ২২ শ্রাবণ তিনি চিরতরে পৃথিবীকে বিদায় জানান।

রবীন্দ্রনাথ তৎকালীন সমাজ, সামজিক চেতনা ও সংস্কৃতির চেয়ে ছিলেন আরও কয়েক ধাপ উপরে। ছিলেন এতোটাই আধুনিকমনা যে, প্রজন্মের পর প্রজন্ম তার চিন্তা ও ধ্যান-ধারণা দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে এবং হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ তার অসামান্য সৃষ্টির মধ্য দিয়ে যুগ যুগ ধরে বেঁচে রয়েছেন ও অনন্তকাল থাকবেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০১৫
এসএমএন/এসএনএস 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।