ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

ঘুমের অপেক্ষায় লোকটি

মনি হায়দার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০১১
ঘুমের অপেক্ষায় লোকটি

লোকটি অনেক দিন, অনেক রাত ঘুমুতে পারে না।
সে কেবল তার কালো, কুচকুচে কালো চোখে চেয়ে দেখে দিনের সাদা অংশ আবার রাতের কালো অংশ।

দুই চোখের পাতা এক করতে পারে না। না, তার উপর কোনো জলপাই রঙ সামরিক শাসন জারি করেনি। তাকে গ্রেফতার করে সারা রাত সারা দিন একশো ওয়াট ভাল্বের দিকে তাকিয়ে থাকতে বাধ্য করেনি। এমন কি সে কোনো খুনও করেনি। কোনো রূপসীকেও লুণ্ঠন করেনি সে। তার কুষ্ঠিনামা ঘেটেও কোনো অপরাধ আবিস্কার করা যায নি। তারপরও লোকটা  অনেক দিন, অনেক রাত ঘুমুতে পারে না। গভীর রাতে সে একটু ঘুমের আশায় পথে পথে ঘুরে বেড়ায়। বৃক্ষ, নদী, পাখিদের কাছে সে ঘুম প্রার্থনা করে। নিরিবিলি একটু ঘুমের জন্য লোকটা হাপিত্যেশ করে বেড়ায়। আহা ঘুম! কিন্তু কোনোভাবেই ঘুম তার চোখে আসছে না। আবার এমনও ঘটে- ঘুম আসছে কিন্তু দুই চোখের চার পাতা এক করতে পারে না সে। না, কেউ তার দুই চোখের চার পাতা উল্টোভাবে কসটেপ দিয়ে আটকেও দেয়নি। সে সমাজের বেশ উঁচুস্তরের মানুষ। সামাজিক প্রভাবও আছে তার। আমরা যত সহজে তার ব্যপারে কথা বলছি, এতো সহজে বলাও কঠিন। কিন্তু এখন যেহেতু সে ঘুমুতে পারে না, শত চেষ্টা করেও পারছে না- তখন আমরা তার এই বিপদের সমূহ সুযোগ নিতেই পারি। আর সেই অবসরে তার কথা বলছি, যে লোকটা অনিক দিন, অনেক রাত, রাতে অথবা দিনে কোনো সময়েই ঘুমুতেই পারে না।

প্রশ্ন করতে পারেন- তার এই না ঘুমানোর ঘুম কী হঠাৎ কোনো উপসর্গ? নাকি অনেক দিন থেকে, তার জন্ম বা শৈশব থেকে সে ঘুমুতে পারে না। এই বৃত্তান্ত জানতে হলে আমাদের লোকটার মায়ের কাছে যেতে হবে। একজন মাই জানেন- তার ছেলের আদ্যপান্ত। তার মায়ের কাছে পুত্রের এই না ঘুমানো বৃত্তান্ত জানতে চাইলে তিনি র্দীঘশ্বাস ত্যাগ করে  বলেন- না, আমার ছেলে সেই শৈশবে ঠিক মতোই ঘুমাতো। ঠিক মতো খেতো। তবে ওর ঘুম একটু বেশি ছিল। অনেক সময়ে ও এতো ঘুমাতো যে আমি ভয় পেতাম।

কেন ভয় পেতেন?
মা আহ্লাদে খানিকটা হাসেন-  ছোট বাবু, বেশিক্ষণ ঘুমালে মায়ের চিন্তাতো হবেই। আমি যেমন আমার ছেলের বেশি ঘুমের জন্য চিন্তিত ছিলাম, আপনাদের মায়েরাও আপনাগো জন্য চিন্তিত ছিল। তাগো জিজ্ঞেস করলেই জানতে পারবেন সেই ঘুমের বৃত্তান্ত।

আর একটু বড় হওয়ার পর আপনার ছেলের ঘুম কেমন ছিল?
বরাবরই ও ঘুমুতে খুব পছন্দ করতো। শুনেছি- মাঝে মাঝে নাকি ও ইস্কুলের ক্লাসেও ঘুমিয়ে পড়তো। এ নিয়ে দু একবার ইস্কুলের মাস্টারের হাতে মাইরও খাইছে। মা আবারও হাসেন- ছোট বেলায় ও খুব দুষ্ট ছিল। আমি সারাদিন ওকে নিয়ে চিন্তায় থাকতাম। ইস্কুলের ক্লাসে এই যে মাইর খেয়েছে- আমাকে কোনো দিন বলেনি। আমি পরে ওর ইস্কুলের বন্ধুদের কাছে শুনতাম। শুনে খুব চিন্তা করতাম- কী হবে আমার এই ঘুম কাতুরে ছেলের?
সারা জীবনই কী সে ঘুম কাতুরে ছিল?
আমাদের প্রশ্নে খলবল হাসেন তার মা- আরে না। আমার বাবু একটু বড় হওয়ার পর,ধরেন হাইস্কুলে ওঠার পর থেকে ঘুমের ব্যপারে স্বাভাবিক হয়ে যায়। তখন সে পরিমিত ঘুমায়, পরিমিত খায়।  
আপনার এমন নিয়মানুগ ছেলে কতোদিন ধরে একদম ঘুমুতে পারছে না,
আপনাদের মতো আমিও ব্যাপারটা বুঝতে পাshopnoরছি না- আমাদের প্রশ্ন শেষ করার আগেই তার মা জবাব দেন। আমি অনেক চিন্তা করছি কিন্তু কোনো দিশা পাই না। হঠাৎ সে একদিন চিৎকার করে জানান দেয়, আমি ঘুমুতে পারছি না। আমি ঘুমুতে পারছি না। ও না ঘুমুতে পারার জন্য ছটফট করে। ওর কষ্ট দেখে আমিও কষ্ট পাই। আমি চাই- আপনাদের মতো, দেশের সব মানুষের মতো আমার ছেলেও ঘুমাক। ঘুম ছাড়া মানুষ বাঁচে কী করে?

আপনার ছেলে কী ঘুমের ঔষধ খেয়েছে?
অনেকবার। অনেকবার খেয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। ওর চোখে কোনো ঔষধ ঘুম এনে দিতে পারে নি।
কোনো ঔষধ ঘুম এনে দিতে পারেনি? আমরা এক সঙ্গে জিজ্ঞেস করি।  
হ্যাঁ, পারেনি।   প্রয়োজনের চেয়েও বেশি খেয়েছে ঘুমের ঔষধ। ডাক্তার শুনে আঁতকে উঠেছে, বলেছে, এতো ঘুমের ট্যাবলেট খেলে আপনি তো মারা যাবেন।

তারপর?
তারপরও খেয়েছে। কিন্তু ঘুম ওর চোখে আসেনি। আমি ওর মাথায় পানি দিয়েছি, তেল দিয়েছি, মাথা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিলি করে দিয়েছি তারপরও ওর চোখে ঘুম নেই। ঘুম আসে না। এমন কী আমি, ওকে না  জানিয়ে লাব্বি হুজুরের দরগায় শিরনী মেনেছি, খান জাহান আলীর দরগায় ছাগল মেনেছি, রায়েন্দা ছোট হুজুরের জন্য তিনটে বকরী মানত করেছি, আবার একটা দীর্ঘশ্বাস ত্যাগ করেন মা- তারপরও আমার ছেলে ঘুমুতে পারে না, ওর চোখে ঘুম আসে না। তার মায়ের কণ্ঠ আমাদের কাছে বিষণ্ন লাগে। ঘুমুতে না পারার কষ্ট আমাদেরকে কিছুটা হলেও আচ্ছন্ন করে। আমরা ব্যথিত হই।
এই ঘুম না আসার কোনো বৃত্তান্ত কী আপনি জানেন?
মা চুপ করে থাকেন। আমরা একটু সময় নেই। জানি- একটু সময় পেলে মা আমাদেরকে বলবেন তার ছেলের না ঘুমানোর বৃত্তান্ত। ছেলের কষ্ট সব মা-ই বলতে চান। ছেলের না ঘুমাতে পারার এই দুঃসহ কষ্ট বুকের মধ্যে আগলে রেখে কী করবেন? আমরা বসে আছিতো বসেই আছি। মা বসে বসে ঝিমোচ্ছেন। আমরা মাঝে মাঝে তাকে তাড়া দিই- ঘুমুতে না পারার বৃত্তান্তটা জানাবেন না?

শোনেন- তার মা মুখ খোলেন। আমি কয়েক মাস আগে ওকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। এই শহরের সবচেয়ে বড় ডাক্তার। আমাদের পরিচিত পারিবারিক নিউরো সার্জনের কাছে ওকে নিয়ে যাই। অনেক দিনের পুরোনো ডাক্তার। আমরা ভেবেছিলাম- ওর মস্তিস্ক জনিত কোনো রোগ হয়েছে। ডাক্তার ওর সঙ্গে কথা বলে, কয়েকটি পরীক্ষা করে আমাদের জানায়- আমার পুত্রকে নিতে হবে সাইকিয়াটিস্ট বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞর কাছে। আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না। ঘুমুতে বা দু’চোখের পাতা না বোজানোর জন্য সাইকিয়াটিস্ট কেন?  আমি আমাদের পরিচিত নিউরো সার্জনের কাছে আমার ছেলের বৃত্তান্ত জানতে চাইলাম। কিন্তু অবাক ব্যাপার ডাক্তার আমাকে চিনতে পারলো না।
চিনতে পারলো না? এবার আমারা অবাক হই।
হ্যাঁ, চিনতে পারলো না। মানে চিনতে না পারার ভাণ করলো। ডাক্তার অন্যদিকে তাকিয়ে বললোÑআমার কাছে না, আপনি সাইকিয়াটিস্টটের কাছে আপনার ছেলেকে নিয়ে যান। এবং তার কাছে আপনার ছেলের বৃত্তান্ত শোনান। নিউরো সার্জন ডাক্তার একজন সাইকিয়াটিস্ট ডাক্তারের ঠিকানা আমার হাতে দেয়।
shopnoআমার মন খারাপ হলো। তারপরও আমি সাইকিয়াটিস্টের কাছে গেলাম। সেই মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আমার ছেলের চিকিৎসা করছে, আমাকে সেই ডাক্তার খুব খাতির করে বসালো। তারপর বললো- বলুন কী করতে পারি আপনার জন্য?
আমার ছেলের কী হয়েছে? সে কেন ঘুমুতে পারছে না?
ডাক্তার আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনলো। আমার ছেলেকে আলাদা কক্ষে নিয়ে গেলো। প্রায় এক দেড় ঘণ্টা পর ফিরে এসে ডাক্তার আমাকে বললো- আপনার ছেলে মনে হয় আর ঘুমুতে পারবে না।
আমি চমকে উঠলাম। আমি ঘামতে লাগলাম। আমি কী করবো বুঝে উঠতে পারলাম না। নিজেকে প্রাণপনে সামলে জানতে চাইলামÑ কেন আমার ছেলে ঘুমুতে পারবে না? সে কী কোনো অপরাধ করেছে? যার শাস্তি ভোগ করছে না ঘুমিয়ে?
না, ডাক্তার সঙ্গে সঙ্গে বলে। সেসব কিছু নয়।

তাহলে ও ঘুমুতে পারবে না কেন ?
কারণ আপনার ছেলের চোখে আমি কেনো রোগ আবিস্কার করতে পারিনি। আমি অনেকভাবে আপনার ছেলের চোখ পরীক্ষা করেছি। আর যদি রোগ আবিস্কার করতে না পারি তাহলে চিকিৎসা দেবো কিভাবে?
তার রোগটা কী?
একটা দৃশ্য- ডাক্তার সাদা কাগজে একটা কিছু লিখছে। কাটাকাটি করছে। হিজিবিজি  আঁকছে কাগজের উপর।

দৃশ্য! আমি আবারও আঁতকে উঠি। দৃশ্য! কী বলছেন আপনি?
হ্যাঁ দৃশ্য, একটি দীর্ঘ দৃশ্য- ডাক্তার আমার দিকে তাকিয়ে বসেন এবং বলেন আপনার ছেলে যখনই ঘুমুতে যায়, দুই চোখের পাতা এক করে, তখন একটা দৃশ্য তার চোখের পাতায় দেখতে পায়। সেই দৃশ্যের কারণে সে ঘুমুতে পারে না।

সেই দৃশ্যটা কী?
ভয়াবহ সেই দৃশ্য। ভয়াবহ। আপনি শুনলে ভীষণ ভয় পাবেন। এমন কী হার্টফেলও করতে পারেন।
আমি ডাক্তরকে অভয় দিই- আপনি নিশ্চিন্তে বলুন আমাকে। আমি ভয় পাবো না।
ডাক্তার একটু নীরব থাকেন। ভাবেন। সময় নেন। তারপর ডাক্তার বলতে শুরু করেন- একটা বিরান মাঠের উপর দিয়ে একজন স্বাস্থ্যবান লোক হেঁটে আসছিল। তার হাতে ছিল লাল ফিতায় বাঁধা একটা ফাইল। যতদূর জানা যায়-সে ফাইলে রাষ্ট্রের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দলিল দস্তাবেজ ছিল। যাইহোক- সময় তখন দুপুর। মাথার উপর দাউ দাউ জ্বলছে সূর্য। মাঠে সবুজ ঘাসও নেই। চারদিকে কেবল বালি আর শক্ত পাথরের চাই। যখন লোকটি মাঠের মাঝখানে এসেছে সেই সময়ে হঠাৎ অনেকগুলো কুকুর সেই ভদ্রলোকটাকে ঘিরে ধরলো।   লোকটি শুরুতে এক ধরনের খেলা মনে করেছিল। সে কুকুরদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হাঁটছিল, কিন্তু কুকুরগুলো যখন তাকে, তার পা তীক্ষ্ণ এবং দাঁতাল দাঁতে কামড়াতে শুরু করলো, তখন বুঝলো, না এটা কোনো খেলা নয়। এই কুকুরগুলো এসেছে তাকে, তার প্রাণ সংহার করতে। তখন লোকটা সেই তপ্ত দুপুরে বিরান মাঠ দৌড়ে পার হতে চাইলো। সে প্রাণপনে দৌড় শুরু করলো। কিন্তু সে দেখলো- তার অনেক আগেই ভয়ানক দাঁতাল কুকুরগুলো পথ আগলে দাঁড়িয়ে আছে। তারা বেশ নিশ্চিন্তে বিশ্রাম নিচ্ছে এবং বিরাট জিহ্বা বের করে পাছায় ভর দিয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছে। তাদের ভয়াল দর্শন লম্বা জিহ্বার পাশে সাদা দাঁতগুলো সূর্যের আলোয় ঝিকমিক করছে। বেচারা আবার উল্টো দিকে ছুটতে শুরু করলো। তখন কুকুরগুলো আয়েশ করে সাদা দাঁতের সঙ্গে এক বিকট লম্বা জিভ করে হাসতে লাগলো। অতোগুলো কুকুরের হাসি, বুঝতেই পারেন কী ভয়াবহ আর বিভৎস হতে পারে।

লোকটা তারপরও দৌড়াচ্ছে তো দৌড়াচ্ছে। সে দিকবিদিক দৌড়াচ্ছে। প্রাণের মায়া কার না আছে বলুন? কিন্তু যেদিকেই সে যায়, দেখে ভয়াল দর্শন কুকুরদের পাল। আর কুকুরের সেই পালে হরেক রকম কুকুর। সাদা কুকুর। কালো কুকুর। নীল কুকুর। সবুজ কুকুর। তাগড়া স্বাস্থ্যবান সেই কুকুরদের সঙ্গে সে পারবে কেন? তার যাবার আগেই কুকুরেরা পথে বসে থাকে। থাকে সে কখন আসবে সেই অপেক্ষায়। কুকুরদের হাত থেকে বাঁচার জন্য লোকটা  দৌড়াতে দৌড়াতে হাপায়। তার জিহ্বা বের হয়ে গেছে। সে মাটিতে চার হাত পা ছড়িয়ে আছড়ে পড়ে। সে করুণ স্বরে সাহায্য প্রার্থণা করে। কিন্তু কোনো সাহায্য সে পায় না। সূর্য তার উপর তেরছাভাবে আলো বিকিরণ করতে থাকে।
durshopnoকুকুরদের প্রাথমিক বিজয়  অর্জিত হয়েছে। অর্থাৎ লোকটা মাটিতে পড়েছে । লোকটা মাটিতে পড়ে আছে মরার মতো। লোকটাতো পড়ে আছেÑ এখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পালা এতো কুকুরদের মধ্যে কোন কুকুর তাকে ভক্ষণ করার অধিকার লাভ করবে? আগে থেকেই কুকুরদের রাজা একটা টিকেটে দিয়ে রেখেছে একজন কুকুর রাজরক্ষীর হাতে। সেই টিকিটটা বাতাসে ছেড়ে দেয়া হলো। এখন সেই টিকেট দখল করার লড়াই শুরু হয়েছে কুকুরদের মধ্যে।
হাজার হাজার কুকুরের লড়াইÑ একটি টিকেটের জন্য খোলা উত্তপ্ত মাঠে। তাদের অজস্র পায়ের দাপটে মাঠের ধুলোয় ধোয়াশা চারপাশ । টিকেটটি কুকুরদের নাকের ডগায় ডগায় উড়ছে। কোনো কুকুরই টিকেটটির নাগাল পায় না। কোনো কোনো কুকুর তার লেলিহান জিহ্বায় টিকেটের একটু স্বাদ পেলে অন্য কুকুরেরা ঝাঁপিয়ে পড়ে। ফলে কেউ আর টিকেটটির টিকিটিও স্পর্শ করতে পারে না। কিন্তু টিকেট দখলের লড়াই চলতে থাকে- মরনপণ। এই ফাকে মাটিতে পড়ে থাকা লোকটা ভাবে এইতো মোক্ষম সুযোগ পালানোর। সে ত্রস্তে উঠে প্রথমে হামাগুড়ি দিয়ে কিছু পথ যাওয়ার পর সে কোমড় বাকা করে সামনের দিকে মাথা রেখে দৌড়াতে শুরু করে। একশো গজ সামনেই একটি উদ্যান। মরনাপণ্ণ লোকটি  দৌড়াচ্ছে আর ভাবছে- তার মুক্তি আসন্ন। সে ঐ উদ্যানে পৌঁছুতে পারলেই সরকারের বড় কর্তাকে ফোন করবে। বলবে- আমাকে বাঁচাও। এক লাখ সৈন্য পাঠাও। মেশিনগান পাঠাও। আর কুকুরদের কুকুরের মতো গুলি করে মারো। মেরে ইহ জগৎ থেকে চিরকালের জন্য উৎখাত করে দাও। কুকুর মুক্ত হোক পৃথিবী।

কিন্তু লোকটার হিসেবে মস্ত ভুল ছিল। সে ঐ উদ্যানের কাছে যাবার আগেই কুকুরেরা টিকেটের লড়াই স্থগিত রেখে লোকটার পথ রুদ্ধ করে দাঁড়ায়। কুকুরগুলো এবার আরও হিংস্র। আর আক্রমণাত্মক। তারপরও লোকটা কুকুরদের তৈরি প্রাচীর ভেঙ্গে এগিয়ে যেতে চায়, কিন্তু পারে না। অজস্র কুকুরের আক্রমণে সে মুখ থুবরে পড়ে। তার মুখ থেকে লালা বের হচ্ছে। তার শরীরের কয়েক জায়গা কেটে রক্ত পড়ছে । সে এখন হাপাতেও ভয় পায়। এত কিছুর পরও লোকটির হাত থেকে লাল ফিতায় বাঁধা ফাইলটি প্রায় অক্ষতই থাকে। সে ফাইলটাকে আড়াল দিয়ে সূর্যের উত্তাপ থেকে বাঁচতে চায়।
 লোকটাকে আয়ত্তে এনে কুকুরেরা আবার টিকেট দখলের লড়াইয়ে নামে। বাতাসে বাতাসে টিকেটটি উড়ছে, ঘুরছে চক্রাকারে- টিকেটটির পছেনে সামনে কুকুরগুলো ক্রোধে উম্মত্তায় একে অপরকে কামড়ে দিচ্ছে। কামড়ে কামড়ে কারো লেজ নেই, কারো পাছার মাংস নেই। কারো ঘাড়ের এক খাবলা চামড়া উধাও। এসব দিকে কারো ভ্রুক্ষেপ নেই। টিকেট দখলের লড়াইয়ে মত্ত তারা। কুকুরগুলোর ঘেউ ঘেউ চিৎকারে এলাকাটাকে নরক বানিয়ে ফেলছে।

আমরা না ঘুমানো লোকটির মাকে জিজ্ঞেস করি- আপনি এই বিভৎস ঘটনা আমাদের বলছেন কেন?
এই ঘটনাগুলির মাঝেইতো তোমাদের গল্প লুকিয়ে আছে- বলে না ঘুমাতে পারা লোকটির মা।
ভয়ে ভয়ে আমরা জিজ্ঞেস করি- সত্যি বলছেন?
অবশ্যই সত্যি বলছি, নইলে তোমাদের এতসব কাসুন্দি বলতে যাবো কেন?
আমরা একে অপরের মুখের দিকে তাকাই, আর সিদ্ধান্ত নিই তার মায়ের সম্পূর্ণ ঘটনা শুনতেই হবে। পুরো ঘটনা না শুনলে আমাদের ইলেকট্রনিক্স মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়াতে নিউজ দিবো কীভাবে? তাছাড়া ঘটনাটা বেশ ইন্টারেস্টিং। কেবল দেশের না, বিদেশের মানুষেরা আগ্রহ দেখাবে। না ঘুমুতে পারা লোকটার মায়ের কথা শুনে আমাদের মনে হচ্ছে- আমরা কোনো কুকুরের দেশে এসে পড়েছি।
ঠিক আছে, আপনি বলুন- আমাদের মধ্যে একজন বলে।
তখন না ঘুমাতে পারা লোকটির মা আবার বলতে শুরু করেন- এইবার টিকেটির জন্য ওরা মানে কুকুরেরা ভয়াবহ লড়াই শুরু করে। অবশেষে একটা কুকুর হঠাৎ আকাশে ঝাঁপ দিয়ে টিকেটটি নিজের মুখে রাখতে সক্ষম হয়। যখন কুকুরটি তার মুখ গহবরের মধ্যে টিকেটটি দখল করতে সক্ষম হলো, অন্য কুকুরেরা তাকে অভিবাদন জানিয়ে নিঃশব্দে দূরে গোল হয়ে দাঁড়ালো। তখন কুকুরদের বোঝাই যাচ্ছিল না- এই ভয়ংকর কুকুরগুলো কিছুক্ষণ আগে কী লড়াইটাই না করেছে- একটা টিকেটের জন্য! তারা খুব শান্তভাবে আর শৃঙ্খলার সঙ্গে গোল হয়ে অপেক্ষায় থাকলো।
 
টিকেট বিজয়ী কুকুরটা মাটিতে পড়ে থাকা লোকটাকে ঘিরে পর পর সাতবার চক্কর দিলো। আর চক্কর দিতে দিতে একেবারে লোকটার শরীর ঘেষে দাঁড়ায়। লোকটা তখনও একটু একটু করে তাকাচ্ছে তার চোখ বরাবর আকাশের দিকে।
আকাশের দিকে কেন লোকটার চোখ? আমরা জিজ্ঞেস না করে পারি না।
কুকুর কতৃক বেষ্টিত লোকটি ভেবেছিল, তাকে হয়তো আকাশ পথে কেউ উদ্ধার করতে আসবে। হয়তো বিদেশে তার কোনো বন্ধু  ছিল, তারা হেলিকপ্টার নিয়ে তাকে উদ্ধার করতে আসবে। কিন্তু শেষপর্যন্ত সেসব কিছুই হয়নি। তাকে একটু একটু করে ভক্ষণ করার জন্য বিজয়ী কুকুরটি প্রথমে বিশাল লাল জিহ্বা দিয়ে পাকরাও করা লোকটির শরীর চাটতে শুরু করলো। চাটার সঙ্গে সঙ্গে লোকটি গড়িয়ে গড়িয়ে যেতে থাকে দিকবিদিক আর মারতে থাকে মরন চিৎকার। লোকটি সেই খোলা মাঠে গড়াচ্ছে আর চিৎকার করছে আর কুকুরটি ক্রমাগত তাকে চেটে যাচ্ছে লম্বা লাল জিহ্বায়। চাটতে চাটতে লোকটির শরীরে পরিধেয় প্যান্ট, শার্ট, জাঙ্গিয়া, টাই, গেনজি- সব খেয়ে ফেলে। এখন খোলা মাঠে একজন লোক, পুরুষ লোক একেবারে উদোম, কেবল তার হাতে সরকারী লাল ফিতায় বাঁধা একটা ফাইল। সেই ফাইল দিয়ে সে তার নুনু ঢেকে রাখার চেষ্টা করছে। যদি  ভয়ে ইতিমধ্যে তার নুনু নিজেকে ভেদ করে মাংসের ভেতর ঢুকে গেছে। কেবল সাপের আল জিহ্বার মতো সামান্য একটু বের হয়ে আছে।   লোকাটা কিম্ভুতকিমাকার হয়ে মাঠের ধুলোয় আর বালিতে গড়াগড়ি খায়। আর কুকুরের দাঁতাল আক্রমণ ঠেকাবার চেষ্টা করছে। কিন্তু খালি হাতেতো আর কুকুর ঠেকানো যায় না....। তাকে ভক্ষণ করার জন্য বিজয়ী কুকুর আবার উদোম লোকটার  চারপাশে জিহ্বা বার করে ঘুরতে শুরু করে। আর তাদের ঘিরে অপেক্ষারত কুকুরগুলো দুই পা বাজিয়ে লেজ নাড়ে এবং নেচে নেচে কুকুরটিকে মানুষ ভক্ষণের কাজ শুরু করতে বলছে। কারণ- এরপরও তাদের আরও কাজ আছে। বেশিক্ষণ দেরী করা যাবে না।

ভক্ষণ মালিক কুকুরটা এবার লোকটার সারা শরীর তার তীব্র ঘ্রাণ দিয়ে শুশুকের মতো শুকতে থাকে। কুকুরটা যত শোকে লোকটা তত কুঁকুড়ে যায়। মনে হয় লোকটা নিজেকে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে চাইছে- কী ভয়াবহ ব্যাপার- কুকুর একটা উদোম মানুষকে শুকছে খোলা মাঠে। পরীক্ষা নীরিক্ষা করছে- তাকে, তার শরীরের কোন জয়গায় প্রথম কামড়টি দেবে! নাক দিয়ে শুরু করবে? নাকি হাত কিংবা পা? অথবা মাথা? কিংবা ঘাড়? এসব ভাবতে ভাবতে এবং শুকতে শুকতে কুকুরটা অতর্কিতে লোকটার অণ্ডকোষ  কামড়ে ধরে। সঙ্গে সঙ্গে লোকটার আকাশ বাতাস মথিত করুণ চিৎকার- চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে।   লোকটার চিৎকারের সঙ্গে সঙ্গে চারপাশে জমায়েত কুকুরগুলো এক সঙ্গে হৈ চৈ করতে থাকে। কুকুরটি এতক্ষণে পেয়েছে রক্তের স্বাদ, সে একের পর এক লোকটির হাত গলা বুক কলিজা পিত্তথলি নাভী চোখ নাক পাকস্থলি হাটু পা কামড়ে কামড়ে খেতে থাকে। মনে হচ্ছে পরম সুস্বাদু মাংস খাচ্ছে কুকুরটি। কুকুরটির প্রতিটি কামড়ে লোকটি ছটফট করছে। কাঁদছে। বিলাপ করছে। চিৎকার করছে- বাঁচাও, বাঁচাও.....। কিন্তু সবই বৃথা।

কুকুরটির প্রতিটি কামড়ে অন্য কুকুরগুলো, যারা চারপাশে ছিল তারা নাচছে। তারা হাসছে। তাদের নাচ দেখে, চেহারা দেখে বোঝা যায় এদের কেউ ইজরায়েলি, কেউ মার্কিনী, কেউ ব্রিটিশ, কেউ রাশান, কেউ ভারতীয়। তাদের মাঝে কয়েকটি নিগ্রো কুকুরও আছে। তারা যদিও খাওয়ায় অংশ নিচ্ছে না কিন্তু তাদের হৈ হল্লা আর উল্লাসরত নাচ দেখে মনে হয়Ñ তারাও খাচ্ছে লোকটাকে খাবলে খাবলে, একটু একটু করে। লোকটির শরীরের টাটকা উষ্ণ মাংস খেতে খেতে লোকটির শরীরে আর যেন কোনো মাংস থাকে না। কেবল হাড় আর কঠিন রক্তাত মেরুদণ্ড  বালিতে শুয়ে আছে। রক্তাত মেরুদণ্ডের মাথায় লোকটির অর্ধেক মাথা থরথর কাঁপছে। লোকটার টোটাল বডিটা একটা সাপের মতো আর কী! কুকুরটা এবার লোকটার মেরুদণ্ডের শেষ প্রান্ত দিয়ে ভক্ষণ শুরু করলো। কিন্তু এখন আর লোকটা কোনো চিৎকার করে না। যদিও তার চোয়াল চোখ মুখ সব খেয়ে ফেলেছে কুকুরটি কিন্তু দুপাটি দাঁতের মাঝখানে তার জিহ্বাটা এখনও অক্ষতই আছে। লোকটির প্রাণ অনেক ধৈর্যশীল নিঃসন্দেহে। শরীর ছেড়ে যেতে চায় না। এভাবে লোকটাকে খেতে খেতে যখন গলা পর্যন্ত এসেছে কুকুরটাÑ লোকটা তখনও বেঁচে। প্রাণ তার শরীর থেকে বের হচ্ছে না। যখন কুকুরটি লোকটার জিহ্বাসহ টোটাল মুখটি এক লহমায় তৃপ্তির সঙ্গে দুমড়ে মুচড়ে খেয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে একটা ঢেকুর তুললো তখন অন্যান্য কুকুরগুলো এসে ভক্ষনকারী কুকুরটাকে শ্লোগান দিয়ে কাঁধে নিয়ে নাচতে নাচতে চলে গেলো। আর বলাবাহুল্য সেই লালফিতার সেই সরকারি ফাইলটি  মাটিতে পড়ে রইলো।

অনেকক্ষণ পর না ঘুমানো লোকটির মা থামলেন। আমরাও একটা ভয়াবহ কুরুক্ষেত্র পার হয়ে এলাম। অদ্ভুত এক ভয়ে আমাদের শরীরের ঘাম ছুটছে। ইতিমধ্যে দুজন বমি করেছে। একজন করেছে হার্টফেল। তাকে পুকুরের ঘাটে নিয়ে মাথায় পানি দিয়ে সুস্থ করা হয়েছে। আমরা একটু সরে নারকেল গাছের নিচে বসি। কারণ- ঘটনাতো শেষ হয়নি। জানা গেলো- একটা লোককে কুকুরে কামড়ে কামড়ে খেয়েছে। কিন্তু তাতে এই দ্বিতীয় লোকটা ঘুমুতে পারছে না কেন? আর এই লোকটার  সঙ্গে সেই লোকটার সম্পর্ক কী?
এবার না ঘুমানো লোকটির মা আমাদের বলেন- ঘটনাতো শেষ। তোমরা এখন যাও।
কিন্তু ঘটনার পেছনের আরও যে বাকি রয়ে গেলো?

কী বাকি রয়ে গেলো?
যে লোকটা ঘুমুতে পারছে না তার সঙ্গে ঐ লোকটার সম্পর্ক কী? আমরা প্রশ্ন করি। আমরা আরও জানতে চাই- না ঘুমুতে পারা লোকটি  কী আর কোনোদিন ঘুমুতে পারবে না?
না ঘুমুতে পারা লোকটির মা কিছুক্ষণ থম ধরে বসে থাকেন। হয়তো সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন- আমাদের কাছে সব ঘটনার গোমড় খুলে দেবেন কী দেবেন না!
জানেন আপনার ছেলে কেন ঘুমুতে পারে না, কুকুরের ঐ লোকটাকে কামড়ানোর পর কী ঘটেছিল? সেটা জনার জন্য দেশ-বিদেশের মানুষ, কোটি কোটি মানুষ অপেক্ষায় আছে- আমরা তার কাছে একটা টোপ ব্যবহার করি।

তাই? না ঘুমুতে পারা লোকটার মা ভড়কে যান।
হ্যাঁ, ইতিমধ্যে আপনার সব কথা আমরা লাইভ প্রচার করেছি। পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ হচ্ছে। এখন যদি আপনি টোটাল ঘটনা না বলেন- আমরা খুব বিপদে পড়বো। বলুন- আপনার পুত্র কেন ঘুমুতে পারে না? তার ঘুমুতে না পারর সঙ্গে এই কুকুর আখ্যানের কী সম্পর্ক?
ডাক্তার এই পর্যন্তই আমাকে বলেছিল, তারপর আমি অনেক চাপাচাপি করে তার কাছ থেকে কথা আদায় করি। তবে শেষ কথাটা সে কাউকে না বলতে বারন করেছে, বলেই না ঘুমুতে পারা লোকটির মা পিক ফেলেন। তার মুখটা কেমন গম্ভীর হয়ে উঠেছে।
ঠিক আছে। আমাদের মধ্যে একজন তাকে খাতির করার চেষ্টা করে- আমরা আপনাকে বেশি বিরক্ত করবো না। কেবল আপনি যেটুকু জানেন সেটুকু বলেন।

ডাক্তার বলেছে মাঠে ঐ কুকুরের মানুষ খাওয়ার দৃশ্যটি পৃথিবীতে একমাত্র আমার ছেলে দেখেছে। দুনিয়ার আর কেউ সে দৃশ্য দেখে নাই। এখন সমস্যা হচ্ছে- ঘুমুতে গেলে, চোখের উপর পাতা রাখতে গেলেই ও কুকুরের মানুষ ভক্ষণের সেই ভয়াবহ দৃশ্য দুই চোখে দেখতে পায়। জীবন্ত হয়ে দৃশ্যটি তরতর করে হাঁটে ওর সামনে। ওর বমি পায়। শরীর গুলিয়ে ওঠে। ওই প্রতিক্রিয়ায় সে আর ঘুমুতে পারে না।
আমাদের একজন প্রশ্ন করে- আপনার ছেলে ঐ দৃশ্যটা কখন দেখেছে, দিনে না রাতে? সজাগ অবস্থায়, না ঘুমের ভেতরে দেখেছে? এটা  কী স্বপ্ন দৃশ্য? না কল্পদৃশ্য?
ডাক্তার আমাকে বলেছে- আমার ছেলে ঐ দৃশ্য কখন কিভাবে দেখেছে, সেও সঠিকভাবে বলতে পারে না। হয়তো দেখেছে জাগরণে, হাঁটতে হাঁটতে। নয়তো দেখেছে ঘুমের ভেতরে, স্বপ্নের উছিলায়। কিন্তু দেখেছে যে তা সত্য। নইলে সে ঘুমুতে পারবে না কেন? এই কদাকার ভয়াবহ দৃশ্য তাকে ঘুম থেকে দিনের পর দিন, রাতের পর রাত জাগরণে রাখছে। সে স্বাভাবিক কাজ করতে পারছে না। সে খেতে পারছে না। তার জীবনটাই বরবাদ হতে চলেছে। দেখুনতো আমার ছেলেটার উপর কী অত্যাচার?

এই জাগরণ থেকে মুক্তির উপায় কী? আমাদের একজন প্রশ্ন করে।
আবার তিনি, না ঘুমুতে পারা লোকটির মা কেমন বিমূর্তচোখে আমাদের দিকে তাকায়। মনে হয় তার চোখ আছে কিন্ত চোখের ভেতরে মণি নেই। ফাপা বেলুনের মতো তার দুটো চোখ। আমাদের মধ্যেএকজন, যাকে আমরা খুব সাহসী বলে জানি- সে ভদ্রমহিলাকে ধরে জোরে নাড়া দেয়- কী হয়েছে আপনার? বলুন, আপনার ছেলের মুক্তি কীসে?  সে কবে কিভাবে ঘুমুতে পারবে?
আমার ছেলের চোখে যে দৃশ্যটি ঘুরপাক খাচ্ছে, যদি আবার কোনোদিন সে সেই দৃশ্যর বিপরীত একটি দৃশ্য দেখে বা দেখতে পায়, তাহলেই...না ঘুমুতে পারার মা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। আমরা ঠায় দাঁড়িয়ে থাকি।

বাংলাদেশ সময় ১৭২০, জুলাই ০৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।