ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

বইমেলায় সেমিনার

‘তাই রবীন্দ্রনাথ হচ্ছেন বাঙালির বাতিঘর’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১১

ঢাকা: ‘নাট্যরচনার ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন বৈচিত্র্য সন্ধানী। এ কারণে তার নাটকে প্রত্য ও পরো মনোলোকের সন্ধান পাওয়া যায়।

তার সমগ্র নাট্যসাহিত্যজুড়ে বিরাজ করছে ধর্মীয় গোঁড়ামি, ভণ্ডামি, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ ও ক্ষুদ্রতার স্বরূপ উদ্ঘাটন এবং পাশাপাশি প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের সোচ্চার উচ্চারণ। ’

রোববার, অমর একুশে বইমেলার ২৭তম দিনে বিকেলে মূলমঞ্চে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে রবীন্দ্র নাট্যচর্চা’ আলোচনায় মূল প্রবন্ধে কথাগুলো বলেন নাট্যব্যক্তিত্ব আতাউর রহমান।

তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথই বাংলা নাট্য-সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ রূপকার, সমগ্র বিশ্বের অন্যতম সেরা নাট্যকার। রবীন্দ্র-নাট্যচর্চার মধ্যেই নিহিত রয়েছে বাংলাদেশের নাট্যচর্চার সারাৎসার। ’

‘রবীন্দ্রনাথের ভাষা ও ব্যাকরণচিন্তা’ শীর্ষক অপর এক প্রবন্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জীনাত ইমতিয়াজ আলী বলেন, ‘প্রথাগত ও সংস্কৃতানুসারী ভাষা ও ব্যাকরণ চর্চার পুনরাবৃত্তি থেকে মুক্তি দিয়ে বাংলা ভাষায় স্বাতন্ত্র্য ও এর রীতি-বৈশিষ্ট্য অভিব্যক্ত হয় এমন ব্যাকরণ রচনাই ছিল রবীন্দ্রনাথের প্রেরণা। তার ভাষা ও ব্যাকরণ সম্পর্কিত বিবেচনা একান্তই তার নিজস্ব। ’

তিনি বলেন, ‘ভাষা ও ব্যাকরণের এমন অনেক এলাকা তিনি স্পর্শ করেছেন যেগুলো তার সমকালে ভারতবর্ষে তো নয়ই, বিশ্বেও অভাবিত ছিল। সে-অর্থে তিনি বিশ শতক ও একুশ শতকের প্রসিদ্ধ সব ভাষাবিজ্ঞানীর পথপ্রদর্শক। তার অনুসরণে বাংলা ভাষার নিজস্ব ব্যাকরণ রচিত হওয়াই সংগত। ’

সেমিনারে সভাপতির বক্তৃতায় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান আজিজ বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ছিলেন আত্মনিমগ্ন ধ্যানস্থ মুনি। জীবনের বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতা তিনি তাঁর সাহিত্যে প্রয়োগ করেছেন। তাই রবীন্দ্রনাথ হচ্ছেন বাঙালির বাতিঘর। ’

আলোচনাকালে নাট্যব্যক্তিত্ব পীযূষ বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এমন একজন মনীষী যে তার সাহিত্যের যে কোনো দিক আলোচনায় আমাদেরকে তার শব্দই ব্যবহার করতে হয়। বাঙালির আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যকর্ম আলোকবর্তিকাস্বরূপ। ’

আলোচনায় অন্যদের মধ্যে অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ফিরোজা ইয়াসমীন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক আফসার আহমদ এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক ড. স্বরোচিষ সরকার।

সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আবৃত্তি পরিবেশন করেন শিল্পী গোলাম সারোয়ার, আনজুমান আরা ও মো. শাহাদাৎ হোসেন। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী চঞ্চল খান, মিলিয়া আলী, মনসুরা বেগম, জলি রহমান, নকুল চন্দ্র দাস, আবদুল ওয়াদুদ, জাফর আহমেদ ও এম আর মনজু সাংস্কৃতিক সোসাইটির শিল্পীরা। এছাড়া নৃত্য পরিবেশন করে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী শিশু-যুগ সাংস্কৃতিক জোট’।

বাংলাদেশ সময়: ২২৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad