ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

বই লেখা ও পাঠের মধ্য দিয়ে বাঙালি চেতনাবোধ আরও জাগ্রত হবে: অমর্ত্য সেন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১১
বই লেখা ও পাঠের মধ্য দিয়ে বাঙালি চেতনাবোধ আরও জাগ্রত হবে: অমর্ত্য সেন

ঢাকা: বাঙালির চেতনা হাজার বছর ধরে লালিত। একদিকে ভাষা, সাহিত্য, সঙ্গীত, দর্শন এবং সামগ্রিক চিন্তা ধারার সঙ্গে ঐক্য, সমতা, ন্যায়বোধ, মাতৃভাষার সম্মান ও সামাজিক চেতনাবোধ নিয়ে বাঙালি এগিয়ে চলেছে।

এ কথা বলেছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।

তিনি বলেছেন, বই লেখা ও তা পাঠের মধ্য দিয়েই বাঙালি চেতনাবোধ আরও জাগ্রত হবে ও আরও হাজার বছর ধরে টিকে থাকবে।

মঙ্গলবার অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অমর্ত্য সেন এসব কথা বলেন।    

বাংলাভাষাকে কেবল বাংলার গণ্ডিতে আটকে না রেখে সকল মাতৃভাষার চেতনার দিকে এগিয়ে নেওয়ার উদ্যোগকে বাঙালির গর্বের বিষয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।

বাংলা সাহিত্যের ঐতিহাসিক ধারা তুলে ধরতে নোবেলজয়ী এই বাঙালি অর্থনীতিবিদ মধ্যযুগের লেখক ভুসুকুর কথা উল্লেখ করেন।

তিনি এও বলেন, দারিদ্রের পরিচিতি বাংলার মতো করে খুব কম ভাষাতেই সুষ্ঠুভাবে প্রকাশিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি কালকেতু ও ফুল্লরা গ্রন্থের উদাহরণ টানেন।

ন্যায়ের প্রতি বাঙালির নিষ্ঠার কথা তুলে ধরে তিনি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে.. তব ঘৃণা তারে যেন তৃণসম দহে’ পক্তি দুটির কথা স্মরণ করিয়ে দেন। এ প্রসঙ্গে তিনি সমাজে সকল প্রকার অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার তাগিদ দেন।

আর বাঙালির ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনার কথা তুলে ধরতে তিনি বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুলের ‘হিন্দু নাকি মুসলিম ওই জিজ্ঞাসে কোন্ জন। কান্ডারি বলো মরেছে মানুষ... সন্তান মোর মা’র’ পংক্তি উচ্চারণ করেন।    

অমর্ত্য সেন বলেন, বাংলাদেশের জাতীয়সঙ্গীত ‘আমার সোনার বাংলা... আমি তোমায় ভালোবাসি’ শুনলেই বাঙালি জাতি ও এর চেতনার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হয়।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাঙালি চেতনার ধারক ও বাহক বলে উল্লেখ করেন তিনি।  

প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণার মৌলিক পার্থক্য তুলে ধরতে গিয়ে অমর্ত্য সেন বলেন, পশ্চিমের ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ ধর্মহীনতা বা ধর্মের অনুপস্থিতি। আর ধর্মনিরপেক্ষতার প্রাচ্যদেশীয় ধারণার উদগাতা সম্রাট আকবর দেখিয়েছেন, ধর্মনিরপেক্ষতা মানে সকল ধর্মের শান্তিপূর্ণ ও বৈষম্যহীন সহাবস্থান।

বাংলা সন গণনার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে আমাদের গর্ববোধ করার অনেক কিছু রয়েছেই। সন গণনার পেছনে ধর্মের বিষয়টি থাকলেও কালে কালে পুরোবিষয়টি সামাজিক সাংস্কৃতিক বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে ।

বাংলাদেশ সময় ১৭১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।