ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

বইমেলা

হালকা বৃষ্টি, শীত শীত আবহে জমজমাট বইমেলা

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৪
হালকা বৃষ্টি, শীত শীত আবহে জমজমাট বইমেলা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মেলা প্রাঙ্গণ থেকে: অসময়ের বৃষ্টি অমর একুশে গ্রন্থমেলায় কোনো প্রভাব পড়েনি। নির্ধারিত সময় বেলা ৩টা থেকে মেলা শুরু হলে আস্তে আস্তে বইপ্রেমীদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে।

খুব অল্প সময়ের মধ্যেই মেলা প্রাঙ্গণ মুখর হয়ে ওঠে দর্শনার্থী, লেখক, পাঠকদের পদচারণায়।   
 
আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী গতকাল শনিবার থেকে সারাদিনই ছিল মেঘলা। তবে রাজধানীর কোনো এলাকায় শনিবার হালকা বৃষ্টি হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয় বইমেলা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পর থেকে। বইমেলার তথ্যকেন্দ্র থেকে আগেই আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল স্টলগুলোকে।
 
সারারাত হালকা বৃষ্টির পর রোববার মেলার ১৬তম দিনে সকাল থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি পড়ছিল। তবে গতকালের চেয়ে শীতের অনুভূতি অপেক্ষাকৃত কম। যদিও মেলায় আগতরা শীতের কাপড় জড়িয়ে এসেছেন গায়ে।
 
এমন বৃষ্টিভেজা, গোমড়া আবহাওয়ায় বইমেলা কেমন লাগছে জানতে চাইলে রাজধানীর পুরান ঢাকার বাসিন্দা হিমাংশু বাংলানিউজকে বলেন, “গত কয়েকদিনের চাইতে স্বাচ্ছন্দবোধ করছি। কারণ বাতাসে একেবারেই ধুলা নেই। তাছাড়া ভিড় কম থাকায় স্টল ঘুরে দেখে প্রিয় বইটা কিনতে পারছি। ”
 
তবে বইয়ের দাম দিন দিন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে জানান হিমাংশু।
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের শিক্ষার্থী ফারাহ’র ভাষায় ‘আজকে চমৎকার আবহাওয়া। ’ বাংলানিউজকে ফারাহ জানায়, সে ছাড়া তার বন্ধুদের কেউই এখনো মেলায় এসে পৌঁছায়নি। একসাথে হলে সবাই মিলে বই কিনবেন তারা। শুধু তাই নয়, চা-কফির পাশাপাশি চুটিয়ে আড্ডা দেবেন আজ। তবে যে বন্ধুরা মেলায় আসতে পারছেন না তাদের খুব মিস করবেন বলে জানান ফারাহ।
 
এদিকে স্টল মালিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হালকা বৃষ্টি আর শীত শীত আবহাওয়ায় মেলায় যারা এসেছেন বা আসবেন তাদের বেশিরভাগই পাঠক, বইয়ের ক্রেতা। আজকেও বিক্রি ভালো হবে বলেই তাদের প্রত্যাশা।
 
জাতীয় সাহিত্য প্রকাশনীর স্টলে গিয়ে কথা হয় আকাশের সাথে। সে জানায়, এমন আবহাওয়ায় বিক্রি কেমন হয় এ নিয়ে কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলাম। তাই নির্ধারিত সময়ের প্রায় ২০ মিনিট পর স্টল খুলি। কিন্তু খোলার সঙ্গে সঙ্গে পাঠক এসে আমাদের প্রকাশনীর বই চাচ্ছেন। দেখতে দেখতে বেশ ভালোই বিক্রি হয়ে গেল।
 
প্রতিদিনের মতোই আজও বাংলা একাডেমির স্টলে পাঠক-ক্রেতাদের ভিড়। এছাড়া অন্য প্রকাশ, সময় প্রকাশন, অনন্যা, জাগৃতিসহ স্বনামধন্য প্রকাশনীর স্টলগুলোতে যথারীতি পাঠকদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
 
মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, কেউ কেউ ছাতা টাঙিয়ে মেলায় এসেছেন। বিশেষ করে যেসব অভিভাবকরা সাথে নিয়ে এসেছেন ছেলে-মেয়েকে। তাছাড়া অনেক যুগলও এক ছাতার নিচে হেঁটে হেঁটে বইয়ের পসরা ঘুরে দেখছেন, কিনছেন।

সব মিলিয়ে বসন্তের হালকা অকাল বৃষ্টি, ধুলামুক্ত শীত শীত আবহে মেলা বেশ জমে উঠেছে ১৬তম দিনে। তাই এই আবহাওয়া অন্য কিছুর জন্য বৈরী হলেও অমর একুশে গ্রন্থমেলার জন্য হয়ে উঠেছে বেশ সহায়ক।    
 
শনিবার মেলায় ১২৬ বই
১৫ ফেব্রুয়ারি, শনিবার অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১৫তম দিন। মেলায় এদিন নতুন বই এসেছে ১২৬টি। এরমধ্যে ১৭টি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
 
এদিন মেলায় আসা নতুন বইয়ের মধ্যে, গল্প-১৯টি, উপন্যাস-১৯টি, প্রবন্ধ-১৫টি, কবিতা-৩৭টি, গবেষণা ধর্মী-২টি, ছড়া-২টি, শিশুতোষ-৩টি, জীবনী-৩টি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক-২টি, নাটক-৩টি, বিজ্ঞান বিষয়ক-২টি, ইতিহাস-১টি, চিকিৎসা-৩টি, রম্য/ধাঁধা-২টি, ধর্মীয়-১টি, সায়েন্স ফিকশন-২টি এবং অন্যান্য-১০টি।
 
বাংলা একাডেমির জনসংযোগ বিভাগ জানায়, গ্রন্থমেলায় এপর্যন্ত ১৩৮০টি নতুন বই এসেছে।
 
মূল মঞ্চে রোববারের আয়োজন
১৬ ফেব্রুয়ারি, রোববার বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে তথ্য-প্রযুক্তি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন নজরুল ইসলাম খান।
 
আলোচনায় অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে, মোস্তফা জাব্বার, তারিক সুজাত, অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাহবুব জামানের। সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী।   
 
সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ছাড়াও অমর একুশে গ্রন্থমেলা বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করবে বাংলা একাডেমি। রোববার বিকেল ৪টায় বাংলা একাডেমি ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ ভবনের চতুর্থ তলার সভাকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
 
সংবাদ সম্মেলনে একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৪-র সার্বিক বিষয়ে সাংবাদিকবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।