ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

বেঙ্গল গ্যালারিতে দক্ষিণ এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী ‘পুদুচেরি ব্লু’

শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১১
বেঙ্গল গ্যালারিতে দক্ষিণ এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী ‘পুদুচেরি ব্লু’

২০১০ সালের মার্চ মাসে ভারতীয় সাংস্কৃতিক সম্পর্ক পরিষদ ভারতের পন্ডিচেরিতে আয়োজন করে  দক্ষিণ এশীয় নয়টি দেশের শিল্পীদের আর্ট ক্যাম্প ‘পুদুচেরি ব্লু’। এসব দেশ থেকে অংশ নেন ৩২ জন শিল্পী।



এই নয় দেশের শিল্পীরা হচ্ছেন আফগানিস্তানের এনায়তুল্লাহ নিয়াজি ও লতিফা মিরান, বাংলাদেশের অলকেশ ঘোষ ও রফিকুন নবী, ভুটানের কারমা জাঙমো ও তিওয়াং তেনজিন, নেপালের বীরেন্দ্র প্রতাপ সিং ও এরিনা তামরাকার, পাকিস্তানের অম্বর হাম্মাদ ও মেহরিন জুবায়ের,  শ্রীলংকার চন্দ্রগুপ্ত তিনুয়ারা ও সঞ্জয় কুমার, মালদ্বীপের মরিয়ম ওমর ও মিয়ানমারের কেওয়া সেন। এছাড়া ছিলেন স্বাগতিক ভারতের অজয় রাজগারয়া, অমিতাভ দাস, দেবনাথ বসু ও ফরহাদ হুসাইনসহ মোট ১৭ জন শিল্পী।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যঘেরা ‘পন্ডিচেরি ডিউন রিসর্টে’র স্বপ্নপুরীতে প্রায় সাত দিন নিজস্ব রঙের জগৎ আর তুলির আঁচড়ের নেশায় ডুবে ছিলেন শিল্পীরা। প্রতিটি দেশের ভাষা, সংস্কৃতি আলাদা। কিন্তু পন্ডিচেরিতে এসে সবাই হয়ে গিয়েছিলেন যেন একই পরিবারের সদস্য। একদিকে তারা দিনভর ছবি এঁকেছেন, অন্যদিকে রাতভর জমিয়ে আড্ডা দিয়েছেন, জেনেছেন একে অপরকে।

২৪ জানুয়ারি ধানম-ির বেঙ্গল গ্যালারিতে শুরু হলো ওই ৩২ জন শিল্পীর আঁকা ছবি নিয়ে ‘পুদুচেরি ব্লু’ শীর্ষক দক্ষিণ এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী। বিকেল সাড়ে ৫টায় বেঙ্গল গ্যালারিতে দশ দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্র সচিব মিজারুল কায়েস। উদ্বোধনকালে তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ‘ছবি আঁকার জন্য স্থান নির্বাচন কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা এ প্রদর্শনী থেকেই ধারণা করা যেতে পারে। পুদুচেরি শব্দটা শুনলেই তো মনের মধ্যে অন্যরকমের এক অনুরণনের সৃষ্টি হয়। সেখানে গিয়ে যখন দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন শিল্পীরা একত্র হয়েছিলেন, তারা নিশ্চয়ই একে-অপরের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছেন। শিল্পের কাজ ভালোলাগাকে স্পর্শ করা। ’

বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার রজিত মিত্র। সম্মানিত অতিথি ছিলেন ভারতের প্রখ্যাত শিল্পী অমিতাভ দাস এবং বাংলাদেশের বরেণ্য শিল্পী রফিকুন নবী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেঙ্গল গ্যালারির পরিচালক সুবীর চৌধুরী। বক্তাদের প্রত্যেকের কথাতেই ফুটে ওঠে পুদুচেরি সমুদ্রের বিভিন্ন সময়ের রঙ বদল আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতি মুগ্ধতা।

শিল্পী অমিতাভ দাস তার বক্তব্যে বলেন ‘সার্ক কান্ট্রির ৩২ শিল্পী যখন এক হই, তখন মনে হয়েছিল আমরা একই দেশের বাসিন্দা। একই দেশের শিল্পী। আমার কাছে মনে হয়েছে, কালচার বা সংস্কৃতি এমন জিনিস যেটা মানুষকে একই সুতোয় বাঁধে। ’

শিল্পী রফিকুন নবী বলেন ‘একটি নতুন জায়গায় যাওয়া এবং সেখানে বসে এতজন মিলে ছবি আঁকা দুর্লভ অভিজ্ঞতা। পন্ডিচেরি বা পুদিচেরিতে সমুদ্রের রঙ ক্ষণে ক্ষণে বদলায়। সমুদ্রের রঙ বদলানো দেখলে তখন শিল্পীর মন কাজ না করে পারে না। আমি ওই সমুদ্রকে নিয়ে ছবি এঁকেছিলাম। পরিবেশ ও সঙ্গ ছবি আঁকার সময় অনেক কাজ করে এটা ওখানে না গেলে বুঝতাম না। ’


উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা সবাই প্রদর্শনীর ছবিগুলি ঘুরে ঘুরে দেখেন। প্রদর্শনীর স্থান পেয়েছে মোট ৩২টি ছবি। ছবিগুলির দিকে তাকালেই স্পষ্টই টের পাওয়া যায়, নয়টি দেশের আলাদা আলাদা সংস্কৃতি ও নিজস্বতা। প্রদর্শনী চলবে প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। শেষ হবে ২ ফেব্রুয়ারি।

বাংলাদেশ সময় ২১২২, ২৪ জানুয়ারি ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।