অক্ষমতা তোমাকে খুবলে খাবে
সীমাবদ্ধ জলে সাঁতার কাটার সমস্যা অনেক
দেখাতে পারবে না তুমি সামর্থ্যের সবটুকু খেলা
লোকে অক্ষমতার দায় চাপাবে তোমার কাঁধে
অহেতুক গুঞ্জরণে...
ফলত তোমার ভেতর জন্মাবে কিছু বিশুদ্ধ অভিমান-
এসব দেখে হাততালি দেবে পরিহাসপ্রিয়
কিছু হুজুগে মানুষ-
কেননা এ যুগের পাণ্ডিত্য যে কেবলই মূর্খদের দখলে।
তোমাকে ওজন দেবে তারা বামনের খেলনা নিক্তিতে
সমুদ্র সমুদ্র বলে হাঁক ছাড়লেও তোমাকে ডোবার
ঘোলাজলেই সারতে হবে স্নান
দেখবে, তোমার জন্য অপেক্ষা করছে কিছু
অসহায় আর্তনাদ
আলো ছড়াবে বলে ঘুরে মরছ প্রায়ান্ধ জনপদে
বারুদ জ্বালাবার আগেই তা নিভিয়ে দেবে
অত্যুৎসাহী বৈরী বাতাস-
জানবে তোমার জন্য নেই কোন নীল-ময়ূরের
পেখম খোলা আকাশ-
বামনালয়েই আজকাল তুমি বড় সামাজিক; অসহায়-
ক্ষমতার চাবুকই তোমাকে অক্ষম করে তুলছে ক্রমশ...
জানালা মাত্র
আমার আছে একটিমাত্র দেহ
লৌহকঠিন লখিন্দরের ঘর
তার ভিতর নেই দ্বিধা সন্দেহ
অন্যঘরের অন্য কারো স্বর
শুধুই আছে নিজের মত ও পথ
চৌর্যবৃত্তির বরফকুচিও নেই
সে পথ ধরে নিজের ভবিষ্যৎ
ঘোরলাগা কোন মুগ্ধ কাননেই
আমার আছে দুটোমাত্র চোখ
দৃষ্টি যে তার অভিন্নতা ঘিরে
দেহের ভিতর যা কিছু উন্মুখ
যায় হারিয়ে অদেখাতে ফিরে
ঘরজুড়ে স্রেফ একটি জানালা
দুই পাট তার যুগল চোখের মতো
যদিও ঘরে রুদ্ধ লোহার তালা
প্রাণটুকু এই দুর্গে অরক্ষিত-
একফোঁটা প্রকৃতি
বাড়ি ফেরার কথা ভাবলেই বেড়ি পড়ে পায়ে।
জন্মসূত্রে
জন্ম কোথায় তা কি মানুষেরা ভেবেছে কখনো
তবুও পথে-বিপথে কতজন ঘুরছে বৃথাই
দূর-দূরান্তের যাত্রা তাকে নিয়ে যায় ক্লান্তিকর
এক অন্ধকার রাজ্যে- যেখানে মুক্তির আশা স্বপ্ন
শতাব্দীর গ্লানি আর নৈরাশ্যের ছবি এঁকে এঁকে
মানবযাত্রার রথ কোথায় যে ফেলবে নোঙর-
কেউ কি রেখেছে তার হিসেব কখনো, জানা নেই-
কপর্দকশূন্য যাত্রী ধুলোয় মলিন তার দেহ
জন্মসূত্র পরিচয় এইসব শুধুই কাহিনী
ধ্বংসোন্মুখ পৃথিবীতে- গলিত লাভার মতো যেন
অসহ্য যন্ত্রণা দেয়- নিহত পাখির মৃত্যুময়
বিমর্ষ কান্নার ধ্বনি লেখা থাক যতোই পুরাণে
এসবই কল্পকথা করবে মনে ভাবী বংশধর
একদিন মানুষেরা জন্মাবেই অন্ধ হয়ে জানি-
বাংলাদেশ সময় ২২৩০, জানুয়ারি ১৬, ২০১১