ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ স্মারক বক্তৃতা

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১০
আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ স্মারক বক্তৃতা

১১ অক্টোবর বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত হলো আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ স্মারক বক্তৃতা। সমাজ-রূপান্তর অধ্যয়ন কেন্দ্রের উদ্যোগে অনুষ্ঠানে মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আনু মুহাম্মদ।

সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। সূচনাবক্তব্য রাখেন সমাজ-রূপান্তর অধ্যায়ন কেন্দ্রের সমন্বয়কারী ম. ইনামুল হক। অনুষ্ঠানটি হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে।

আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ ছিলেন একজন ঐতিহাসিক ও বাংলা পুঁথিসাহিত্যের সংগ্রাহক। তিনি প্রায় একশ মুসলিম সাহিত্যিকের রচনা আবিষ্কার করেন। তার আবিষ্কৃত মুসলিম সাহিত্যবাদের পুঁথি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত আছে। এছাড়া হিন্দু সাহিত্যিকদের রচনাগুলো সংরক্ষিত আছে রাজশাহীর বরেন্দ্র জাদুঘরে। নদীয়া সাহিত্যসভা তার কাজের জন্য তাকে ‘সাহিত্যসাগর’ এবং চট্টলা ধর্মম-লী ‘সাহিত্যবিশারদ’ উপাধিতে ভূষিত করে।

আনু মুহাম্মদের বক্তৃতাটি সমাজ-রূপান্তর অধ্যয়ন কেন্দ্র বই আকারে বের করে উপস্থিত শ্রোতাদের কাছে শুরুতেই দিয়ে দেয়। ২৪ পৃষ্ঠার এ বক্তৃতার বিষয় ছিল ‘ঈশ্বর, পুঁজি ও মানুষ’। আনু মুহাম্মদ বক্তৃতাতে আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের কর্মকা-কে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে পূর্ববঙ্গের মনোজগতকে বিশ্লেষণ করেন।

প্রসঙ্গক্রমে তিনি দেখান কীভাবে ঈশ্বর সম্পর্কে প্রচলিত ধারণার বদল হতে হতে আধুনিক বিশ্বে পুঁজিই ঈশ্বরের ভূমিকা নিয়েছে। দেখান ধর্ম কীভাবে ব্যবহৃত হয়েছে বিশ্বব্যাপী আমেরিকার সাম্রাজ্য বিস্তারের ক্ষেত্রে। তিনি বলেন, যেভাবে ১৮৯৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ফিলিপাইন দখল করার জন্য ধর্মের দোহাই দিয়েছিলেন, ঠিক একইভাবে বুশও ২০০৪ সালে ইরাক আক্রমণের ক্ষেত্রে ধর্মেরই দোহাই দিয়েছিলেন। বুশ বলেছিলেন, ‘ঈশ্বর আমাকে বলেছেন আল কায়দার ওপর আক্রমণ চালাতে, আমি চালিয়েছি; এরপর তিনি আঘাত করতে বলেছেন সাদ্দামকে, আমি তাও করেছি। ’

আনু মুহাম্মদ তার বক্তৃতায় পুঁজির কাছে আমাদের সমস্ত কিছু পণ্য হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গও বিশ্লেষণ করেন।

অনুষ্ঠান শেষে সমাপনী বক্তব্য রাখেন প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি আনু মুহাম্মদকে তার চমৎকার ও বিশ্লেষণী বক্তৃতার জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ কেবল একজন পুঁথি সংগ্রাহকই ছিলেন না, তিনি ইতিহাসের উপাদানও সংগ্রহ করেছেন। তার কাজ আমাদের মধ্যযুগের বাংলার সমাজ, সংস্কৃতি ও রাজনীতিকে বিশ্লেষণ করতে বিষেষভাবে সহায়তা করে।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ২২২০, অক্টোবর ১১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।