ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

বাংলা নববর্ষ-বাঙালির উৎসব

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১২
বাংলা নববর্ষ-বাঙালির উৎসব

পৃথিবীব্যাপী জাতিসমুহের অসংখ্য উৎসব রয়েছে যেগুলোর একটির সঙ্গে অন্যটির মিল খুজে পাওয়া কঠিন। তবে নববর্ষ কেন্দ্রিক উৎসব করার ধারাটি ছোট বড় প্রায় সকল জনগোষ্ঠীরই রয়েছে।



উদযাপনের সময় এবং উপাদানে তারতম্য যথেষ্ট থাকলেও বছরের নিদিষ্ট সময়ে একসঙ্গে মিলিত হয়ে আনন্দ উৎসব করার ধারাটি প্রাচীন কাল থেকেই চলে এসেছে। প্রাচীন সভ্যতার যুগে (খ্রি: পূ: চার হাজার বছর থেকে ৫ম শতক পর্যন্ত) প্রায় সবকটি সভ্যতাতেই নববর্ষ পালনের প্রমান পাওয়া যায়।

মানুষের উৎসব প্রবৃত্তি অনেকটাই সহজাত। সে কারনেই প্রাচীনকালে নিজেদের মধ্যে বছরের নিদিষ্ট সময়ে একত্রিত হয়ে আনন্দ করা, জাকজমক পূর্ণ অনুষ্ঠান করা, মিলন মেলায় কিছুটা সময় কাটানো স্বাভাবিক নিয়মে পরিনত হয়। বছর জুড়ে তাই প্রতিক্ষা ছিল নির্দিষ্ট সময়ে ও জায়গায় জড়ো হয়ে আনন্দ করার। সেই সময় বেশির ভাগ মানুষের জীবন ছিল শ্রম, শোষণ ও বঞ্চনায় ভরপুর। সমাজ ছিল একেবারেই অনুন্নত, মানুষর সাধ ও সাধ্যেরও তেমন কোন পরিমাপ ছিল না। তারপরও উৎসব করার প্রবৃত্তিতে কোন ঘাটতি ছিলনা। ক্রমেই এসব মিলন মেলা তির্থস্থানে পরিণত হয় । ধর্মীয় এবং বানিজ্যিক বিষয়-আসয় এর যুক্ত হয়ে পড়ে। তবে এক এক অঞ্চলের মানুষ বছরের এক এক সময় নিজেদের এই উৎসব পালন করতো। এটি নির্ভর করতো মূলত আবহাওয়া, প্রাকৃতিক পরিবেশ, কৃষি ও হস্তচালিত পন্য সামগ্রী উৎপাদনের মৌসুমের উপর।

বিভিন্ন জনপদের মানুষ নিজেস্ব বৈশিষ্ট্যতা ও জীবন ব্যবস্থার এসব উৎসব ও মিলন মেলার আয়োজন করতো। নানা সাংস্কৃতিক এবং ধমীয় অনুষ্ঠানের সংযোজন ঘটার মাধ্যমে উৎসবগুলো ক্রমেই বিকষিত জাতীয় চরিত্র ধারণ করতে থাকে। প্রত্যেক অঞ্চলের জনসাধারন নিজেদের জীবন জীবিকা, বিশ্বাস, আচার-আচারণ মত বছরের শুরু গননা করতো, এর সঙ্গে কারো ছিল চান্দ্র বছরের কারোবা সৌর বছরের ভিত্তি। কেউবা জানুয়রি, কেউবা মার্চ, এপ্রিল বা ডিসেম্বরেও নববর্ষ আয়োজন করার ঐতিহ্য সৃষ্টি করেছিল। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নববর্ষের এসব অনুষ্ঠানে বৈচিত্র্য যুক্ত হয়েছে,  সময়ও পরিবর্তিত হয়েছে। মধ্যযুগে যোগাযোগ ও জীবন ব্যবস্থায় ব্যবসা-বানিজ্যে প্রসার ঘটার ফলে আঞ্চলিক ভিত্তিতে নববর্ষের সময় এবং ঐতিহ্য অনেকটা স্থিরভার গৃহিত হয়।

খ্রিস্টীয় ২৫ মার্চ অনেক গুলো জাতিকে নববর্ষের আয়োজনে সংঘবদ্ধ করা হয়েছিল। তারপর অবশ্য রোমান ক্যাথলিকরা জানুয়ারি মাসের এক তারিখে নববর্ষকে নির্ধারন করে। শেষ পর্যন্ত গোটা ইউরোপ ১ জানুয়ারিকে খ্রিস্টীয় নববর্ষরূপে গ্রহণ করে। আরব পারস্য অঞ্চল, ভারতবর্ষ, দূর প্রাচ্য, আফ্রিকা সহ সর্বত্রই জাতিসমূহ নিজেদের জাতীয় ক্যালেন্ডার প্রবর্তন করে। বিচিত্র এসব বৈশিষ্ঠ্য নিয়েই পৃথিবীর জাতিসমূহের নিজ নিজ নববর্ষ উদযাপিত হচ্ছে। আমাদের বাংলা নববর্ষ বাঙ্গালি জাতি গোষ্ঠির মধযুগ থেকে শুরু হয়ে এর চরিত্রকে নানাভাবে বদলিয়ে এখন আধুনিক রুপে প্রসারিত হচ্ছে। বৃহত্তর বাঙ্গালিকে আত্মপরিচয়, জাতিয়তাবাদী চেতনায় উজ্জীবিত করছে, এ ভূখন্ডে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সমূহও নিজ নিজ নববর্ষে একইভাবে উজ্জীবিত হয়ে উঠছে। পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর ‘বৈসাবি’ উৎসব বাংলা নববর্ষের সাথে অনেকটাই একাকার হয়ে উঠেছে। ফলে নববর্ষের উৎসব এখন অনেক বেশি সার্বজনীন ।

বাঙ্গালির শকাব্দ সালের পাশাপাশি সুলতান যুগে নতুন ফসলি সন প্রবর্তিত হয়। সেই সময় নতুন ফসলের সময় ছিল চৈত্র মাসের ১ তারিখ। তবে মুঘল সম্রাট আকবরের শাসনামলে হিজরি ও সৌর সনের সমন্বয়ে ১৫৮৪ খ্রিস্টাব্দে যে নতুন ক্যালেন্ডার তৈরি করা হয় তাতে বাংলা ১ পহেলা বৈশাখ নতুন বছর হিসাবে নির্ধারিত হয়। পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চলে নববর্ষের ভিত্তি অনেকটা ধর্মীয় উৎসব হলেও বাংলায় নববর্ষ প্রবতিত হয়েছে একেবারেই ফসলি ভিত্তিতে। ফলে নববর্ষের সাথে নবান্ন, নতুন ফসল ও খাবার দাবার ঐতিহ্যপুর্ন হয়ে উঠেছে এর সঙ্গে অবশ্য আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা অঙ্গাঙ্গীভাবে জডিয়ে গেছে। কেননা এদের পৃষ্ঠ্য পোষকতা ছাড়া নববর্ষের আচার-অনুষ্ঠান টিকিয়ে রাখা সম্ভব হতনা। উল্লেখ্য সুলতানি যুগে বাংলা বিহার অঞ্চলে বাংলা নববর্ষ একই সময়েও বৈশিষ্ঠ্যে পালিত হতো। ক্রমেই বাংলা কেন্দ্রিক এর ভিত্তি সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলায় তখন বৈশাখ মাসে ফসল ওঠার খাজনা আদায়ের সঙ্গে এর সম্পৃক্ততা যুক্ত হয়। বৈশাখ মাসকে বাংলা সনের শুরুর মাস এবং ১ বৈশাখকে নববর্ষের শুরুর দিন হিসেবে গ্রহন করা হয়। কৃষকরা নতুন ফসল গোলায় তোলার সঙ্গে নতুন চালের ভাত, পিঠা সহ নানা মজাদার খাবার তৈরি, আত্মীয়-স্বজনদের নিমন্ত্রন করে খাওয়ানোর রেওয়াজ তৈরি করে। কৃষকের ঘরে নতুন ফসলের সঙ্গে আনন্দ-উৎসব পালন করার ব্যবস্থা চালু হয়। নবান্নের উৎসবের সঙ্গে নতুন ভাবে যুক্ত হলো পুন্যাহ উৎসব। এই উৎসবের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত সরকার, জমিদার, প্রজা ও ব্যাবসায়ী শ্রেনীসহ সকলে। যেহেতু নতুন ফসল ঘরে তোলার এই সময় নিয়মিত হয়ে উঠেছিল তাই খাজনা সংগ্রহও তখনই সুবিধা জনক ছিল, এবং সেটি নবান্ন উপলক্ষেই করা হতো। পুন্যাহ উৎসবের মাধ্যমেই খাজনার কিস্তি নেওয়া হতো। এই উৎসবটি জমিদার বাড়িতে প্রায় মাসব্যাপি চলতো। জমিদার বাড়িতে গ্রাম প্রধান নেতৃস্থানীয় কৃষকসহ সকলেই যোগদান করতো। সেখানে বিগত বছরের খাজনা পরিশোধ করা হতো। নতুন বছরের বায়না পত্রও করা হতো। জমিদার বাড়িতে মিষ্টি এবং পান খাওয়ার মাধ্যমে এসব সম্পাদন করা হতো। কৃষক প্রজারা এসব অনুষ্ঠানে জমিদার রাজাদের সন্তষ্টি বিধান করার চেষ্টা করতো। জমিদারদের বাড়িতে নানা ধরনের খেলাধুলা, নাচগান, সঙ্গীত, হাতে তৈরি কারু পন্যের পসরা বসানো হতো। ক্রমে জমিদার বাড়িতে পুন্যাহের মেলা বসতো। মেলা গুলো সরণীয় করে রাখার জন্য নানা ধরনের আয়োজনের ব্যবস্থা করা হতো। ক্রমেই এগুলো গ্রামীন মানুষের জন্য সাংস্কৃতিক চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয় , এতে পন্য বেচাকিনারও ব্যবস্থা ছিল। ফলে গ্রামীন অর্থনীতিতে মেলাগুলো গুরুত্তপূর্ন হয়ে উঠলো। এগুলো সমাজে এক ধরনের বাজার সম্পর্ক তৈরি করতে সহয়তা করে। ফলে এর ব্যাপক বিস্তার ঘটে। জমিদার বাড়ি থেকে এসব মেলা চলে যায় স্থানীয় ব্যবসায়ী, বনিক, মহাজন, দোকানদার নির্ধারিত স্থানে। তারাও বিগত বছরের পাওনা তথা বাকি আদায় করে নতুন বছরে নতুন ভাবে খাতা খোলার ব্যবস্থা করে। এখান থেকে হালখাতা ব্যবস্থার প্রবর্তন হয়। হালখাতার আয়োজনে মিষ্টি খাওয়া ও বিতরন, আনন্দ ফুর্তি, নানা আমোদ প্রমোদের ব্যবস্থা ছিল। এসব আয়োজনের দিকে ছেলে, বুড়ো, নারী, পুরুষসহ সকলেরই আকর্ষণ ছিল। দুর দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসতো সেই সব অনুষ্ঠান আগ্রহ ভরে উপভোগ করতো। মানুষের এক ধরনের নাড়ির টান তৈরি হতে থাকে। সারা বছরই কৃষক, কামার, কুমার, বাশ বেত সহ নানা পেশার মানুষ পসরা সাজিয়ে কিছু অর্থ উপার্জনের প্রস্তুতি গ্রহন করতো। মেলা মানে আনন্দের জায়গা আবার এগুলো সাময়িক বানিজ্যকেন্দ্রেও পরিনত হতে থাকে।

মনে রাখতে হবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বৈশাখের শুরুতে বসা নববর্ষের এসব মেলা ধারে ধারে নানা পরিবর্তন আসতে থাকে। অনুষ্ঠানগুলোর প্রতি মানুষের আগ্রহ ও আকর্ষনে নানা চিন্তা ভাবনা, ধ্যান-ধারণা সংযুক্তি ঘটে।

নতুন কাপড় পড়া পরিস্কার পরিচ্ছনতা ও সাজগোঁজকে গুরুত্ব দেওয়া হতে পারে। এটিকে পূত-পবিত্রতার দৃষ্টিতে দেখারও প্রবণতা হতে পারে বা ধারা সূচিত হয়। ব্রিটিশ যুগে অনেক এলাকায় নববর্ষের মেলাকে নিয়ে নদী, দিঘী ও পুকুর ঘাটে স্নান করা, বাড়ি ঘরকে বিশেষভাবে পরিস্কার –পরিচ্ছন্ন রাখা,  নিজেদের গরু- ছাগলকে স্নান করিয়ে পবিত্র করার মানসিকতা জন্ম নিতে থাকে।

পরিবারের ছোট-বড়, নারী-পুরুষ সকলে দল বেঁধে মেলায় যাওয়া আনন্দ-উৎসব করা, বাড়িতে নিকট আত্মীয়দের আমন্ত্রণ জাননো, উপঢোকন দেওয়া, মিষ্টি খাওয়ানো, সাংস্কুতিক অনুষ্ঠানসহ নানা ধরণের আয়োজন করে বৈশাখের প্রথম দিনটা হাসিখুশিতে কাটানো একটি ঐতিহ্যে পরিনত হয়। এর ফলে চারিদিকে উৎসবের রব ও সাড়া পড়ে যেতো। কয়েক দিন ধরে নববর্ষের অনুষ্ঠান এভাবেই চলতো।

 পাকিস্তান সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে বাঙ্গালির নববর্ষের উৎসব আয়োজনে নানা ধরনরে ধর্মীয় বাধা নিষেধ আরোপিত হতে শুরু করে। নববর্ষকে সাম্পদায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা ও বোঝানো শুরু হয়। এগুলোর বিরুদ্ধে নানা বাধা-নিষেধ আসায় নববর্ষের মেলার আয়োজন গ্রামাঞ্চলে হ্রাস পেতে থাকে। আমাদের ছোট কালে পরিবারের বড়দের রক্তচক্ষুর ভয়ে নববর্ষের মেলায় যাওয়া প্রায় বন্ধই করে দিতে হয়েছিল। স্কুলে বেশির ভাগ মুসলিম শিক্ষক নববর্ষের বিরুদ্ধে কথা বলতেন। ছাত্র-ছাত্রীদের শারিরীক নির্যাতনের ভয় দেখাতেন। নববর্ষ এক সময় প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছিলো। নবান্ন, হালখাতা মিষ্টি বিতরণ, তালপাতার বাঁশি বাজানো, খেলনায় চড়া ইত্যাদি আনন্দ থেকে পাকিস্তান যুগের তরুন ও কিশোররা প্রায় বঞ্চিতই হয়েছিল। এক সময় সেই গ্রামীণ সমাজে বাংলা নববর্ষের মেলা সপ্তাহ বা মাস জুড়ে বসতো। এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় বৈশাখ মাস এল নবান্নের সঙ্গে জীবনের স্পন্দন ও আনন্দ যেন ঘুরে বেড়াত সেই গ্রাম গুলো থেকেই পাকিস্তান আমলে মেলা বৈশাখি উৎসব ও নববর্ষের উৎসব প্রায় হারিয়ে যায়। রক্তচক্ষুর ফলে শত বছরের বাঙ্গালি নববর্ষের উৎসব বন্ধ হয়ে যায়। পাকিস্তান রাষ্ট্র ব্যবস্থাটি  গড়ে উঠেছিল কৃত্রিমভাবে, সাম্পদায়িকতাকে পুঁজি করে। তাই এই রাষ্ট্রটি জাতিগত, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কুতিকে গ্রহন না করে এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। ১৯৪৭ সালে সব কিছুকে অতীতের সমগ্রতা প্রত্যাখ্যান, উপেক্ষা ও ধ্বংস করে পাকিস্তানি যান্ত্রিক মানুষ করতে তৈরির পরিকল্পনা অগ্রসর হয়েছিল।

সে কারনেই বাংলা ভাষা, নববর্ষ বাঙ্গালির ঐতিহ্য ইতিহাসিক সমূলে উচ্ছেদ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ধর্মীয় প্রলেপ দিয়ে অপপ্রচার করা ছিল পাকিস্তান রাষ্ট্ররেই রাজনীতি ও মতাদর্শ। প্রথম দিকে তারা অনেকটাই সফল হয়েছিল। তা ছাড়া ১৯৪৭ উত্তর রাজনীতির করণে বিরাট সংখ্যক মানুষের দেশান্তর এবং জমিদার প্রথার বিলুপ্তি এসব মেলার পৃষ্ঠপোষকতায় মস্ত বড় ছেদ ঘটায়। তবে তা ছিল সাময়িক। ষাটের দশকের শেষের দিকে ছায়ানট নতুন আঙ্গিকে বাংলা বর্ষ বরণকে নাগরিক জীবনে প্রবতর্ন করার উদ্যোগ নিয়। সেটি স্বাধীনতা-উত্তর নতুন প্রাণে যাত্রা শুরু করলেই পচাঁত্তর- পরবর্তী সময়ে দ্বিধা- দ্বন্দ তৈরি হয়। বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ভাবাদর্শে ধরে রাখার চেষ্টা চলতে থাকে। ফলে সময়টা ধীরেই চলেছে নববর্ষের প্রসারের ক্ষেত্রে। তারপর ও বাঙ্গালির নাড়ির স্পন্দন বৈশাখের জেগে উঠতে খুব বেশি দেরি হয়নি। ঢাকাসহ প্রায় সারা দেশেই এখন প্রধানত শহরকেন্দ্রিক বাংলা নববর্ষের উৎসব বেশ জমে উঠেছে। দিনভর নানা আয়োজনে শহরের মানুষ যেভাবে নববর্ষের নানা আয়োজনে যুক্ত হচ্ছে তা সত্যিকার অর্থেই বাঙালির উৎসবে পরিণত হয়েছে, এটি হাজার বছরের ঐতিহ্যে লালিত চরিত্রকে ধারন করেই নতুন ভাবে স্বাধীন বাংলাদেশ যুগে বিস্ফোরিত হয়েছে বললে আশা করি ভুল হবে না। তবে এর প্রসার গ্রামের সেই ছায়ানিবিড় মাঠ-ঘাট, হাট বাজারেও ঘটাতে হবে, সেই কৃষক, নারী, পুরুষ, তরুণ, কিশোরসহ সকলের জীবনের উৎসবের বার্তা ছড়িয়ে দিতে হবে, এর থেকে অবগাহণ করতে হবে চিরায়ত বাঙ্গালির শান্তি, সমৃদ্ধি, ঐক্য, মিলন মেলার আদর্শ, জাতিধর্ম নির্বিশেষে সকলের একসঙ্গে থাকা, মেলা মেশার আবেদন, তবেই বাঙালির নববর্ষ বাঙ্গালিত্বকে ধারণ করতে সক্ষম হবে।  

Momtaj-patwaryমমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী
ইতিহাসবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।