ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

কৃষি

কৃষকদের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক পরামর্শ দিচ্ছে ‘কৃষকের বাতিঘর’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৫ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০২২
কৃষকদের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক পরামর্শ দিচ্ছে ‘কৃষকের বাতিঘর’ কৃষকদের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক পরামর্শ দিচ্ছে কৃষকের বাতিঘরের সদস্য

কুষ্টিয়া: প্রায় ছয় মাস ধরে তীব্র তাপদাহ, খরা এবং স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত না থাকায় ভোগান্তি বেড়েছে কৃষিতে। আলাদা সেচের ফলে যোগ হয়েছে অতিরিক্ত খরচ।

এ নিয়ে ফসল চাষ করেও ক্ষতি পুনরুদ্ধারের ব্যাপারে শঙ্কায় আছেন কৃষকরা। জলবায়ুর এমন পরিবর্তন লক্ষ্য করে কৃষকদের উন্নয়নের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক পরামর্শ ও সেবা দিচ্ছে কৃষি বিষয়ক লাইব্রেরি ও সংগঠন কৃষকের বাতিঘর।

শুক্রবার (২২ জুলাই) দিনব্যাপী জেলার মিরপুর উপজেলার আমলা এবং সদরপুর ইউনিয়নে এই পরামর্শ সেবা দেওয়া হয়। এ সময় আমলা ও এর আশপাশের বিভিন্ন ফসলের মাঠ ঘুরে কৃষকের বাতিঘরের সদস্যরা জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে কৃষকদের অবহিত করেন এবং পরামর্শ দেন।

কৃষকদের পরামর্শ সেবা বিষয়ক এই কার্যক্রম নিয়ে কৃষকের বাতিঘরের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন মোহাম্মদ সাগর বলেন, আমরা যখন ফসলের মাঠে গিয়েছি, তখন এটা দেখেছি যে তীব্র দাবদাহে এবং বৃষ্টি না হওয়ায় বিভিন্ন সবজি ও ফসল শুকিয়ে গেছে। বৃষ্টির দেখা না মেলায় আমন ধান বপন করতে পারছেন না কৃষকরা। এছাড়া চলতি মৌসুমে পাটের ভালো ফলন হলেও তীব্র তাপদাহ ও পানির অভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। প্রখর রোদে জমিতেই শুকিয়ে যাচ্ছে পাটের আঁশ। অনেকে পাট কেটেও পানির অভাবে জাগ দিতে না পেরে জমিতে স্তূপ করে রেখেছেন। অনেক কৃষক পুকুর বা ছোট জলাশয়ে সেচ দিয়ে পানির ব্যবস্থা করলেও তাদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি খরচ। ফলে সেচ দিয়ে ফসল চাষ করায় যে পরিমাণ খরচ হচ্ছে, তাতে কৃষকের খরচের টাকা উঠবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা যখন কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেছি, তখন তারা জানিয়েছেন- পরিবর্তিত জলবায়ুতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। কৃষকদের মতে বীজের গজানো, পরাগায়ন, ফুল ও ফল ধরা, পরিপক্বতা হতে সুনির্দিষ্ট তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত ও সূর্যালোক প্রয়োজন। জলবায়ুর এ উপাদানগুলো পরিবর্ধিত হচ্ছে, কিন্তু বীজ বপন ও চারা রোপণের সময় পরিবর্তন হয়নি। ফলে কৃষি মৌসুমের সঙ্গে ফসল চাষাবাদ খাপ খাওয়ানো যাচ্ছে না। এছাড়া বর্তমানে গ্রীষ্মে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ, বৃষ্টির দিনে কম বৃষ্টি, অকাল বন্যা, শিলাবৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাত্রাও বেড়েছে; যা ফসল ঘরে তোলার ক্ষেত্রে বড় সমস্যা।

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর আরও বলেন, এ অবস্থায় কৃষকের বাতিঘরের পক্ষ থেকে কৃষকদের প্রচলিত চাষ পদ্ধতি ও শস্যপর্যায় পরিবর্তন করে পানি কম লাগে এমন ফসলের চাষ, ধানচাষে অল্টারনেটিভ ওয়েটিং অ্যান্ড ড্রাইং (এডব্লিউডি) বা পর্যায়ক্রমে ভেজানো ও শুকানো প্রযুক্তির ব্যবহার, মালচিং ও ড্রিপ সেচের প্রবর্তন, ফসল চাষের সব পর্যায়ে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারসহ স্বল্প জীবনকাল এবং তাপ-খরা-শীত-বন্যা-লবণসহিঞ্চু জাতগুলোর আবাদ সম্প্রসারণে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়।

কৃষকের বাতিঘরের এ কার্যক্রমের সঙ্গে আরও যুক্ত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি মো. সামসুল হক, সহ-সভাপতি কাঞ্চন কুমার, কোষাধ্যক্ষ আসাদুজ্জামান রতন, কার্যনির্বাহী সদস্য মো. হাবিবুর রহমান, মো. জাহিদ হাসান, জিনিয়া ইসলাম, সদস্য মো. অনিকসহ অন্যরা। এই কার্যক্রমে সহযোগিতা করে অ্যাগ্রো অ্যালকেমি এবং কৃষিবিডি। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক এই পরামর্শ সেবা নিয়মিত চলমান থাকবে বলেও জানানো হয় কৃষকের বাতিঘরের পক্ষ থেকে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১২ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।