ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

কৃষি

লোকসানের মুখে রাজবাড়ীর চিনাবাদাম চাষিরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩১১ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৯
লোকসানের মুখে রাজবাড়ীর চিনাবাদাম চাষিরা বিস্তীর্ণ পদ্মা নদীর তীরবর্তী ফসলি জমিতে চিনাবাদাম চাষ। ছবি: বাংলানিউজ

রাজবাড়ী: লোকসানের মুখে পড়েছেন রাজবাড়ীর পদ্মার চরের চিনাবাদাম চাষিরা। তাদের অভিযোগ ভালোভাবে চাষাবাদ করার পরেও মাটির উর্বরতা কমে যাওয়া ও কৃষি অফিসের অসহযোগিতার কারণে এবারের চিনাবাদাম চাষে আশানুরূপ ফলন মেলেনি।

রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকা সংলগ্ন বিস্তীর্ণ পদ্মা নদীর তীরবর্তী ফসলি জমিতে ঢাকা ১, বিনা ৪, মাইজচর ও লোকাল জাতসহ কয়েকটি জাতের চিনাবাদাম চাষ করেছেন কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, রাজবাড়ী জেলায় এবার ২০১৮-১৯ সালে ৯৫০ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল।

তবে আবাদ হয়েছে ৭৭৫ হেক্টর জমিতে। হেক্টর প্রতি বাদাম উৎপাদন হয়েছে এক হাজার ৭৫০ কেজি যা ৭৭৫ হেক্টরের হিসাবে এক হাজার ৩৬৩ টন। তবে চলতি মৌসুমের শুরুর দিকে বৃষ্টিতে জমিতে জমে থাকা পানির কারণেই বাদামের ফলন কম হয়েছে বলে দাবি উপ-পরিচালক ফজলুর রহমানের।

জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার পদ্মা নদীর তীরের জমিতে বাদাম চাষি হোসেন আলী শেখ বাংলানিউজকে বলেন, এবার মৌসুমে প্রায় ৪০ পাকি জমিতে (৩৩ শতাংশে এক পাকি) বাদামের চাষ করেছি। গত বছরেও এক পাকি জমিতে প্রায় ৬ বস্তা বাদাম হয়েছে। কিন্তু এবছর এক পাকিতে বাদাম ফলেছে মাত্র ৩ বস্তা।

একই এলাকার কৃষাণী হাজু বেগম বাংলানিউজকে বলেন, গত বছর যেখানে প্রায় ৮ মণ বাদাম হয়েছিল, এবছর হয়েছে মাত্র দুই মণ। জমির মাটির উৎপাদন ক্ষমতা কমে গেছে। পাশাপাশি কৃষি অফিসের কোনো লোক বাদাম চাষের ব্যাপারে কোনো পরামর্শ দেননি। আসলে কৃষি অফিসের কোনো লোকই আসেইনি।

আরেক বাদাম চাষি এলাহী মন্ডল বাংলানিউজকে বলেন, শুকনো বাদাম দুই হাজার ৫০০ আর ভেজা বাদাম দুই হাজার টাকা বস্তা বিক্রি করছি। আশানুরূপ বাদামের ফলন পাইনি। এবার আমরা লোকসানে রয়েছি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ফললুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, বাদাম চাষিরা উন্নত জাতের বাদামের বীজ ব্যাবহার না করে স্থানীয় পর্যায় থেকে বীজ সংগ্রহ করে চাষাবাদ করেছে। ফলে বাদামের ফলন আশানুরূপ হয়নি। চাষিদেরকে সবসময় উন্নত বীজ ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। এছাড়া বাদাম চাষিরা গ্রুপ ভিত্তিকভাবে বাদাম সংগ্রহ করে বড় বাজারে নিয়ে বিক্রি করলে দাম ভালো পাবে বলে আশা করি।

তিনি বলেন, ভালো বীজ ব্যাবহারের জন্য কৃষকদের মাঝে বীণা ৪ এর বীজ প্রদর্শনী আকারে দেওয়া হয়েছে গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রামে। উন্নত বীজ ও সঠিক মৌসুমে জৈবসার ব্যাবহারের মাধ্যমে বাদাম চাষ করলে কৃষকেরা লাভের মুখ দেখবে।  

এছাড়া কৃষি পরামর্শ পেতে ১৬১২৩ অথবা ৩৩৩১ নম্বরে ফোন করতে পরামর্শ দিয়েছেন এ কৃষি কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, জুলাই ১০, ২০১৯
জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।