ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৮

মেসি-নেইমারকে ছাপিয়ে যাবেন তারা!

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৮ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৮
মেসি-নেইমারকে ছাপিয়ে যাবেন তারা! জেসুস-এমবাপ্পে-পাভন

বিশ্বকাপ মানেই ফুটবলের সেরা তারকাদের মেলা। সেই সঙ্গে নতুন তারকার আগমনী বার্তা। একেকটি বিশ্বকাপ আসে আর বিশ্ববাসী পায় এক ঝাঁক বিশ্ব তারকাকে। এদের কেউ কেউ স্থায়ী আসন গেড়ে নেন ফুটবল ইতিহাসে, হয়ে ওঠেন জীবন্ত কিংবদন্তি।

পেলে-মারাদোনা-রোমারিও-জিদানের মতো সাবেক খেলোয়াড়রা ক্লাব ফুটবলে তাদের ফুটবল প্রতিভার স্বাক্ষর পরিপূর্ণভাবে রাখলেও তারা ইতিহাস হয়েছেন বিশ্বকাপের আসরে।  

দিন পেরুলেই মাঠে গড়াচ্ছে ফুটবল বিশ্বকাপের আরেকটি আসর।

রাশিয়ায় অনুষ্ঠেয় এবারের বিশ্বকাপেও হয়তো নতুন করে আলো ছড়াবেন তরুণ কোনো ফুটবল প্রতিভা। আজকে কোনো অখ্যাত তরুণ হয়তো হয়ে উঠবেন মেসি-রোনালদো-নেইমারের সমকক্ষ।

দক্ষিণ আফ্রিকায় আলো ছড়িয়েছিলেন থমাস মুলার, ব্রাজিল বিশ্বকাপে হামেস রদ্রিগেজ। এবার খ্যাতির শীর্ষে আরোহন করবে কে? দেখে নেওয়া যাক এবারের বিশ্ব আসরে এগিয়ে আছে কোন তরুণরা।

কিলিয়ান এমবাপ্পে, ফ্রান্স
ফরাসি এই তরুণ তারকার ফুটবল সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো অবকাশ নেই। মাত্র তিন বছরের পেশাদারি ক্যারিয়ারে জয় করে নিয়েছেন ফুটবল বোদ্ধাদের মন। তাই তো কাড়ি কাড়ি টাকা দিয়ে তাকে কিনে নিয়েছে প্যারিসের ক্লাব পিএসজি। শুধুর ক্লাব সমর্থকদের নয়, ১৯ বছরের এই বিস্ময় বালক হয়তো এবার সারা বিশ্বের নজর কারবেন।

মার্কো আসেনসিও, স্পেন
রিয়াল মাদ্রিদের শুরুর একাদশের নিয়মিত সদস্য তিনি। ক্রিস্টিয়ানো রোনাদো পরবর্তী যুগে মাদ্রিদের পরবর্তী রাজার আসনে বসতে যাচ্ছেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এবারের বিশ্বকাপে স্পেনের তুরুপের তাস ২২ বছরের এই তরুণ। ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের স্পেনের অনূর্ধ্ব-২১ দলকে ফাইনালে নিয়ে তারই বার্তা দিয়ে রেখেছেন তিনি।

গ্যাব্রিয়েল জেসুস, ব্রাজিল
এখনই তাকে দ্য ফেনমেনন খ্যাত রোনালদোর সঙ্গে তুলনা করছেন। না করেও উপায় নেই, তিতের অধীনে নেইমার-কুতিনহোকে হটিয়ে ব্রাজিলের টপ স্কোরার গ্যাব্রিয়েল জেসুস। তার উপস্থিতি নেইমারের ওপর চাপ কমিয়ে দিয়েছে অনেকটাই। ক্লাব ফর্মও দুর্দান্ত। ম্যানচেস্টার সিটিকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা জেতাতেও রেখেছেন বড় ভূমিকা। নিজে ১৭ গোল করার পাশাপাশি সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ৫টি। ব্রাজিলের হেক্সা মিশনের বাজির ঘোড়া ২১ বছর বয়সী এই নম্বর-৯।

ওসমানে দেম্বেলে, ফ্রান্স
বার্সেলোনা তাকে কিনেছে ১৪০০ কোটি টাকা মূল্য দিয়ে, তার উপর আবার নেইমারের শূন্যস্থান পূরণের ভার! এ দুটো জিনিসই প্রমাণ করে দেয়, দেম্বেলের কতটা প্রতিভাবান। ফুটবলের আরেক ধ্রুব তারা হতে যাওয়া ফরাসি এই তরুণের গতি আর স্কিল ভয় ধরিয়ে দিতে বাধ্য যে কোনো ডিফেন্সের শিরদাঁড়ায়।

মার্কাস র‌্যাশফোর্ড, ইংল্যান্ড
ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে নিজের অভিষেক শটেই গোল করেছিলেন। এরপর ১৮ বছর বয়সী এই তরুণ ইউরোপা ও প্রিমিয়ার লিগে ২ ম্যাচে ৪ গোল করে নজর কাড়েন বোদ্ধাদের। সেই থেকে সতীর্থ ও সমর্থকদের কাছে আদুরে ‘দ্য কিড’। তবে ‘বাচ্চা’ হলেও রাশফোর্ড ইতিমধ্যে বার্তা দিয়ে রেখেছেন বড় কিছু করাই তার লক্ষ্য। গেল মৌসুমটা উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে গেলেও বিশ্বকাপে জ্বলে ওঠার সামর্থ্য সম্পূর্ণই আছে তার। হ্যারি কেনের সঙ্গে জুটিটা জমে গেলে ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ যাত্রা মসৃণ হবে সন্দেহ নেই।

টিমো ভারনার, জার্মানি
ক্ষিপ্রতা আর কৌশল, সবদিক দিয়েই জার্মান দলের অন্য খেলোয়াড়দের চেয়ে একটু আলাদা টিমো ভারনার। তার কাঁধে ভর করে বিশ্বকাপের ড্রেস রিহার্সেল ফিফা কনফেডারেশন কাপ জিতেছে জার্মানি। এবার তাকে ঘিরে পঞ্চমবারের মতো বিশ্বজয়ের স্বপ্ন দেখছে অন্যতম জার্মানরা। গত মৌসুমে কিছুটা বাজে সময় গেলেও বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের আশা বিশ্বকাপে নিজের সেরা ফর্ম ফিরে পাবেন ভারনার।

ক্রিস্তিয়ান পাভন, আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টাইনদের গোপন অস্ত্র হয়ে উঠতে পারেন বোকা জুনিয়র্সের ক্রিস্টিয়ান পাভন। হাইতির বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ খেলেছেন তিনি। বিশেষ করে অল্প সময়েই লিওনেল মেসির সঙ্গে তার বোঝাপড়াটা হয়েছে দারুণ। আর এ কারণেই কোচ সাম্পাওলির প্রিয় পাত্র হয়ে উঠেছেন। ২১ বছর বয়সী এই উইঙ্গার আর্জেন্টিনার ঘরোয়া লিগে ভালো খেলার পুরস্কার পেয়েছেন দলে ডাক পেয়ে। মেসিও তার খেলা দেখে মুগ্ধ। এমনকি আর্জেন্টিনার অনেকেই ইতোমধ্যে পাভনকে মেসির নতুন সঙ্গী হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন। ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে রাশিয়া বিশ্বকাপে নজর কাড়তে পারেন এই তরুণ।

ইউরি তিয়েলেমানস, বেলজিয়াম
রবার্তো মার্তিনেজের ইঙ্গিতে তিয়েলেমানস তার অন্যতম সেরা অস্ত্র। তার মতে, ২০ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডারের পাসিং আর প্রতিপক্ষের বিপরীতে মাঠ নিয়ন্ত্রণ করার সামর্থ্য অনন্য। বিশ্ব ফুটবলের ভবিষ্যত সেরাদের একজন হতে যাওয়া তিয়েলেমানস রাশিয়া বিশ্বকাপে বেলজিয়ামের অন্যতম কর্ণধার। বক্স টু বক্স মিডফিল্ডারের উৎকৃষ্ট উদাহরণ তিনি।

আশরাফ হাকিমি, মরক্কো
মাত্র ১৯ বছর বয়সেই রিয়াল মাদ্রিদের মূল একাদশে সুযোগ পেয়েছেন হাকিমি। মৌসুমের অনেকটা সময় দানি কারভাহালের জায়গায় মাদ্রিদের ডান দিকের ডিফেন্সটাও সামলেছেন দারুণ দক্ষতায়। তার দেশ মরক্কো বিশ্বকাপে ফিরেছে ২০ বছর পর। ফেরাটা স্মরণীয় করে রাখতে চাইবে পুরো মরক্কো দলই। সেই দলের অনত্যম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হাকিমি। ডান দিকের রক্ষণ সামলানোর পাশাপাশি আক্রমণেও পারদর্শী তিনি। তার গতি, ক্রস সমস্যায় ফেলতে পারে প্রতিপক্ষ ডিফেন্সকে।

রদ্রিগো বেনতাকুর, উরুগুয়ে
সিরি আ তে জুভেন্টাসের হয়ে মাত্র ৫টি ম্যাচে প্রথম একাদশে সুযোগ পেলেও উরুগুয়ে দলে জায়গা নিশ্চিত বেনতাকুরের। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের যেসব মারণাস্ত্র থাকা উচিত সবই আছে বেনটাকুরের। পাসিং, সুযোগসন্ধানী মনোভাব, ভিশন, খেলা গড়ে দেয়ার ক্ষমতা উরুগুয়ে দলে বেনতাকুরকে করেছে অপরিহার্য। লুইস সুয়ারেজ, এডিনসন কাভানিদের নিয়ে গড়া উরুগুয়ে ফরোয়ার্ড লাইনআপের পেছনে বেনতাকুরের খেলা নিয়ন্ত্রণ করা এবং শেষ পাস দেয়ার ক্ষমতা কাজে লাগাতে পারলে উরুগুয়ে বিশ্বকাপে অনেকদূর যাবার আশা করতেই পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৮
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

ফিফা বিশ্বকাপ ২০১৮ এর সর্বশেষ