ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

আগরতলা

ত্রিপুরায় বাঁশের প্রসারে প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন চাষিরা

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬০৫ ঘণ্টা, জুন ১৩, ২০১৮
ত্রিপুরায় বাঁশের প্রসারে প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন চাষিরা গবেষণা কেন্দ্রে বাশেঁর চারা। ছবি: বাংলানিউজ

আগরতলা: ভারতের উত্তর-পূর্বে অবস্থিত একটি রাজ্য ত্রিপুরা। এ রাজ্যেটি পাহাড়, টিলা ও বনে ঢাকা। এই বনভূমিতে রয়েছে শাল-সেগুন-গর্জন-করইসহ বিভিন্ন মূল্যবান গাছ-গাছালি। পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন প্রকার ওষুধি গাছ এবং বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ। 

রাজ্যের প্রতিটি ছোট-বড় নদীর ধারের গ্রাম গুলোতে বিভিন্ন জাতের প্রচুর বাঁশ পাওয়া যায়। রাজ্যেটিতে মাটি বাঁশ চাষের জন্য খুব উপযোগী।

তবে ত্রিপুরা রাজ্যে বাঁশকে কেন্দ্র করে এখনো তেমন কোনো বড় শিল্প গড়ে উঠেনি। রাজ্যেটির বোজংনগরে একটি বেসরকারি কারখানা রয়েছে। যেখানে বাঁশকে প্রক্রিয়াজাত করে কাঠ তৈরি করা হয়। এই বাঁশকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে ত্রিপুরা রাজ্যে পেপার মিলসহ বড় শিল্প স্থাপন করা যায় এর জন্য রাজ্যের নতুন সরকার পরিকল্পনা নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
 
সম্প্রতি ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ত্রিপুরা সফরে এসে এক অনুষ্ঠানে বলেছেন ত্রিপুরা রাজ্যে খুব ভালো বাঁশ চাষ হয়। এ বাঁশকে প্রক্রিয়াজাত করার জন্য শিল্প গড়ে তুললে রাজ্যের অর্থনীতি আরো সমৃদ্ধ হবে।
 
ইতোমধ্যে ত্রিপুরা রাজ্যে বাঁশ চাষের সম্ভাবনাময় দিকটি চিন্তা করে ত্রিপুরা সরকারের বন দফতর বাঁশ চাষে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। ত্রিপুরা সরকারের বন বিভাগ এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন এজেন্সি'র (জেআইসিএ) যৌথ উদ্যোগে আগরতলা শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে গড়ে তোলা হয়েছে বাঁশ গবেষণা কেন্দ্র।  

২০১০ সালে প্রায় ৩৫ হেক্টর জমির উপর গড়ে তোলা হয় গবেষণা কেন্দ্রটি।  

এখানে এক দিকে যেমন প্রথাগত পদ্ধতিতে বাঁশের মূল থেকে চারা উৎপাদন করা হচ্ছে তেমনি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বাঁশের বীজ ও বাঁশের শাখা থেকে বাঁশের চারা উৎপাদন করা হচ্ছে। শুধু বাঁশের চারা উৎপাদনই নয়। উৎপাদিত বাঁশ প্রতিবছর কি পরিমাণ হচ্ছে তা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।  

গবেষণা কেন্দ্রের ফিল্ড সুপার ভাইজার তাপস কুমার বর্মণ এবং কিরণ দেববর্মা বাংলানিউজকে জানান, এখানে মূলত দুই ধরনের গবেষণা হয়। এগুলো হলো চারা উৎপাদন সংক্রান্ত এবং বাঁশের বৃদ্ধি সংক্রান্ত গবেষণা। বাঁশের বৃদ্ধি সংক্রান্ত গবেষণার জমিতে ২৫ প্রজাতির বাঁশ রয়েছে। প্রতিটি প্রজাতির বাঁশ সারিবদ্ধভাবে লাগানো হয়েছে এবং প্রতিটি বাঁশের নাম এবং বৈজ্ঞানিক নামসহ সাইনবোর্ড দেওয়া আছে। বাঁশ গুলোর মধ্যে রয়েছে বরু, জাই, বরাক, মুলি, মৃত্তিঙ্গা ইত্যাদি।

গবেষণা কেন্দ্রর উৎপাদিত চারা বিভিন্ন পঞ্চায়েতসহ সরকারি দফতরের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্প'র মাধ্যমে সাধারণ চাষিদেরও বাঁশ চাষের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ত্রিপুরা সরকার নতুন করে বাঁশ চাষে গুরুত্ব আরোপ করায় গবেষণা কেন্দ্রটির দায়িত্ব অনেক বেড়েছে বলেও জানান তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, ১২ জুন ২০১৮
এসসিএন/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad