ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

আগরতলা

অবরোধের জেরে ত্রিপুরার রাজনৈতিক পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৪ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৭
অবরোধের জেরে ত্রিপুরার রাজনৈতিক পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে অবরোধের জেরে ত্রিপুরার রাজনৈতিক পরিস্থিতি জটিল হচ্ছে- বাংলানিউজ

আগরতলা: ত্রিপুরার রাজ্যপালের আহ্বানের পরও তিপ্রাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে আইপিএফটি দলের জাতীয় সড়ক ও রেল অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। 

শান্তি সম্প্রতির আহ্বান জানিয়ে মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) রাতে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি জারি করেন রাজ্যপাল তথাগত রায়ের অতিরিক্ত সচিব রত্নজিৎ দেববর্মা। পাশাপাশি ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি পাঠান রাজ্যপাল।

চিঠিতে তিনি রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির বিস্তারিত তুলে ধরেন।

রাজ্যবাসী আশা করেছিলেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে আইপিএফটি দল হয়তো অবরোধ প্রত্যাহার করে নেবে। কিন্তু সাধারণ মানুষের এ আশায় জল ঢেলে আইপিএফটি তাদের অবরোধ অব্যাহত রেখেছে।  

এদিকে বুধবার (১৯ জুলাই) বিকেলে রাজ্যের খোয়াই জেলার বড়মুড়া পাহাড়ের খামতিং বাড়ির অবরোধ স্থলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) ভারত সরকারের কাছ থেকে তাদের দাবির বিষয়ে মতামত আসবে। তারপর তারা পর্যালোচনা বৈঠকে বসবেন ও পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।

তাই এ আবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে কি-না তা জানতে আরও অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হবে।  

এদিকে অবরোধের জেরে গোটা দেশ থেকে ত্রিপুরা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এমনকি রাজ্যও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এমন উদ্ভট পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসী আগে কখনো পড়েন নি।

তবে সূত্রের খবর, দলের সভাপতি এনসি দেববর্মা অবরোধ তুলে নেওয়ার পক্ষে। কিন্তু দলের একটি অংশ বিশেষ করে যুব অংশ অবরোধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে। তারা চাইছে পুলিশ বাহিনী ধৈর্য হারিয়ে তাদের উপর বল প্রয়োগ করুক, এতে তারাও পাল্টা জবাব দেবে।  

সূত্রের আরো খবর, তাদেরকে বোঝাতে বুধবার কয়েক দফায় বৈঠক করা হয়েছে, কিন্তু কোনো সমাধান আসেনি।  

অন্যদিকে অবরোধের কারণে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে গ্রামীণ ও পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারী বাঙালি অংশের মানুষ বেশ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। তাদের ভয় যদি আদিবাসী ও বাঙালিদের মধ্যে বিভেদের মনোভাব সৃষ্টি হয় তবে মানুষ পাহাড়ি এলাকা ছেড়ে শহরে চলে আসবেন। কারণ ত্রিপুরা রাজ্যে এমন ইতিহাস রয়েছে। পাহাড়ি-বাঙালি অবিশ্বাস তৈরি হওয়ায় একাধিকবার, এমনকি অবিশ্বাসের পরিবেশ থেকে ১৯৮০ সালের জুন মাসে ভ্রাতৃঘাতী দাঙ্গায় লাল হয়ে উঠেছিলো সবুজ-শ্যামল ত্রিপুরা।  

তবে এবার রাজ্য সরকার খুব ঠাণ্ডা ও ধীরস্থিরভাবে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে। যা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। পুলিশকে উত্যক্ত করতে আইপিএফটি’র একাংশ অবরোধ চলাকালে বিকৃতি অঙ্গভঙ্গি করে। কিন্তু তখন পুলিশসহ আধাসামরিক বাহিনীর জওয়ানরা পরিস্থিতি সামলে নেন।

তারপর আইপিএফটি দলের দুই প্রতিনিধি রাজধানী দিল্লিতে আলোচনার জন্য যান। কিন্তু ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, অবরোধ তুলে নেওয়ার পর আলোচনা সম্ভব। এ অবস্থায় আইপিএফটি রাজ্যপাল তথাগত রায়ের সঙ্গে আলোচনায় বসে। রাজ্যপাল বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠান। এর উত্তরে কি আসে এখন সেদিকে তাকিয়ে আইপিএফটি দলসহ গোটা রাজ্যের জনগণ।

বাংলাদেশ সময়: ০৭০৩ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৭
এসসিএন/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।