ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ট্রাভেলার্স নোটবুক

ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিধ্বস্ত নেপাল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৭
ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিধ্বস্ত নেপাল নেপাল। ছবি: সোহেল সরওয়ার

নেপাল থেকে ফিরে:  সেদিন আর দশটা দিনের মতোই জীবন শুরু হয়েছিল কাঠমান্ডুর বাসিন্দাদের। সাধারণ এ দিনটাই চোখের পলকে নেপালের ইতিহাসে করুণতম দিন হয়ে উঠেছিল ২০১৫ সালের ২৫ এপ্রিল।

৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রায় ৯ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়, দরবার স্কয়ারসহ বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় বিশ্ব ঐতিহ্য।

ঘোষণা করা হয় জরুরি অবস্থা। বন্ধ হয়ে যায় অর্থনীতির বড় খাত পর্যটন। খাদ্য সংকটে পড়া নেপাল প্রতিবেশী দেশের সাহায্য কামনা করে।  নেপাল।  ছবি: সোহেল সরওয়ার

সেই প্রতিকূল অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে হিমালয়ের দেশ। বছরের মধ্যেই চঞ্চল হয়ে ওঠে কাঠমান্ডু। সচল হয়েছে অর্থনীতির চাকা। বিশ্ব ঐতিহ্য দর্শনে বেড়েছে পর্যটকদের ভিড়।

নেপাল সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, জনগণের কঠোর পরিশ্রম ও মনোবল রসদ হিসেবে কাজ করেছে। ফলে বিধ্বস্ত কাঠমান্ডু দ্রুত ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এর সুফলও ভোগ করছে দেশের জনগণ। নেপাল।  ছবি: সোহেল সরওয়ার

গত ৯ মার্চ থেকে ১২ মার্চ পর্যন্ত নেপালের কাঠমান্ডু-পোখ‍ারা ঘুরে এমন চিত্রই চোখে পড়েছে। বিধ্বস্ত পাঠান দরবার স্কয়ার ফিরে পেয়েছে চিনচেনা রূপ, ধসে পড়া শম্ভুনাথ মন্দিরে বেড়েছে বিদেশি পর্যটকদের ভিড়। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া সড়কে এখন সারি সারি গাড়ি। এসব গাড়িই যেন দ্রুত টেনে নিয়ে যাচ্ছে বিধ্বস্ত নেপালের অর্থনীতিকে।

অচল হয়ে পড়া নেপাল কিভাবে এত দ্রুত ঘুড়ে দাঁড়ালো প্রশ্ন করেছিলাম সেই দেশের কয়েকজন নাগরিককে। অধিকাংশই দেশের অগ্রগতির কৃতিত্ব দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দহল বা প্রচন্ডকে। তবে সরকারের সঙ্গে একাত্ম হয়ে জনগণ কাজ না করলে হয়তো এ অবস্থায় ফিরতে পারতো না হিমালয়ের দেশ নেপাল।
নেপাল।  ছবি: সোহেল সরওয়ার
কাঠমান্ডু শহরে হোটেল র্যাডিসনের সামনে কথা হয় রাম ভক্ত নিউপানের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, নেপাল যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, অর্থনৈতিভাবে সচল হয়েছে তার সব কৃতিত্ব দেশের প্রধানমন্ত্রীর। তিনি বিপর্যয় মোকাবেলা করে দেশকে স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে দেশের জনগণকে সাথে নিয়ে কাজ করেছেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আহবানে জনগণ সাড়া দিয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে কঠোর পরিশ্রম করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পেরেছি। নেপাল ফিরে পেয়েছে পুরনো চেহারা।
নেপাল।  ছবি: সোহেল সরওয়ার
রাম ভক্তের বক্তব্যের সত্যতা পাওয়া গেল নেপালের বিভিন্ন ঐহিত্য পরিদর্শনে গিয়ে। ভেঙে পড়ার কারণে যেসব স্থান বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সেগুলোতেও এখন পর্যটকদের ভিড়। পরিচ্ছন্ন ও গোছানো শহর।

দুই বছর আগের বিধ্বস্ত নেপাল আর বদলে যাওয়া নেপালের দৃশ্য দেখে রীতিমতো বিস্মিত বাংলাদেশ থেকে ভ্রমণে যাওয়া জগলুর রহমান। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ভূমিপম্পে নেপালের যে অবস্থা হয়েছিল তাতে মনে করেছিলাম সেখানে আর যাওয়া যাবে না। কিন্তু এসে দেখলাম বদলে যাওয়া এক নেপালকে। ছোট্ট একটি দেশ কিভাবে এত দ্রুত বদলে যেতে পারে নেপাল না এলে তা হয়তো বুঝতে পারতাম না।

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৭
এমইউ/টিসি/জেডএম

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।