ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

ট্রাভেলার্স নোটবুক

গ্রীষ্মের দার্জিলিং-৪

মেঘে ভিজে লোলেগাঁও ক্যানোপিতে

আসিফ আজিজ, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩১ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৬
মেঘে ভিজে লোলেগাঁও ক্যানোপিতে ছবি: শামীম হোসেন ও হুসাইন আজাদ

[পূর্ব প্রকাশের পর]

দার্জিলিং ঘুরে: গরম পানি থাকবে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত। তাই উঠে আগে গোসল সেরে নিলো সবাই।

নাস্তা সেরে ৭টায় রওয়ানার কথা থাকলেও বেজে গেলো ৮টা। গন্তব্য লোলেগাঁও। সেখানকার বনে ঝুলন্ত ক্যানোপির আকর্ষণ অনেক আগে থেকেই।

লাভা থেকে দূরত্ব ২৪ কিলোমিটার। এটাই এ এলাকার সবচেয়ে খারাপ রাস্তা। একেবারে ভাঙা-চোরা। দু’পাশে এক দেড়শো ফুট উঁচু পাইন আর পাইন। রাস্তাটি মোহনীয়। নির্জন, নিশ্চুপ। কিছুদূর চলার পরেই শুরু হলো মেঘের খেলা। কিছুক্ষণ পরপর মেঘ এসে ভিজিয়ে দিতে লাগলো আমাদের বাহনকে। আমরা দু’হাত বাইরে মেলে মেঘসঙ্গমে মুগ্ধ হলাম। সবুজ পাতার ফাঁকে সাদা মেঘ আর চিক চিক রোদের খেলা।

সত্যি মোহনীয় সে দৃশ্য। রাস্তার কিনার থেকে কয়েক হাজার ফুট গভীর খাদের মৃত্যুফাঁদ সে সৌন্দর্যের কাছে অসহায়!
 
এটুকু পথ পাড়ি দিতেই লেগে গেলো প্রায় ২ ঘণ্টা। লোলেগাঁও থেকে আবহাওয়া অনুকূলে আর ভাগ্য ভালো থাকলে দেখা মেলে কাঞ্চনজঙ্ঘা। সাড়ে ছয় হাজার ফুট উঁচু থেকে চারপাশের পাহাড়ি পারিবেশ দেখাই এখানকার অন্যতম আকর্ষণ। তবে পর্যটকরা এখানে আসেন মূলত বনে মধ্যের অর্ধকিলোমিটার লম্বা কাঠের ঝুলন্ত ওয়াকওয়েতে হাঁটতে।

এই ওয়াকওয়েতে একসঙ্গে দু’জনের বেশি ওঠা নিষেধ। বড় বড় গাছের মধ্যদিয়ে চলে গেছে ক্যানোপিটি। এখান থেকে বন আর পাহাড় দেখার উত্তেজনাই আলাদা। বড় বড় গাছের ফাঁকে কাঠের পাটাতন আর শক্ত জিআই তারে ঝুলে রয়েছে এটি। এখানে ঢুকতে হয় টিকিট কেটে। পাহাড়ি উঁচু-নিচু রাস্তায় হাঁটা কষ্ট। তাই বনের মধ্যে রয়েছে বসার বেঞ্চ। প্রতিটি অঞ্চলই দুর্গম। কিন্তু সুগম করেছে দেশটির পর্যটনবান্ধব সরকার।

এখানে রয়েছে একটি মিনি পার্ক ও একটি শিবমন্দির। পার্কের ফুলগুলো মুগ্ধ করার মতো। রয়েছে বসার জায়গা। নিরিবিলি পেখম মেলে বসা পাহাড়ের রূপ দেখার সুযোগ। তবে শীতে নাকি ফুল থাকে আরও বেশি। সময় কাটানো, পাহাড় থেকে প্রায় ১৮০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে অন্য পাহাড় দেখার জন্য দারুণ জায়গা এটি।
 
পাহাড়ের চড়াই উতরাই পেরিয়ে সবাই বেশ ক্লান্ত। তবে পিচ্চি সুমেহেরা আর সামি তখনও বেশ সতেজ। অথচ ওদের নিয়েই ভয় ছিলো বেশি। ঘোরা শেষে রাজ অফার করলেন ‘মমো’ খাওয়ার। অর্ডার করা হলো দু’প্লেট। এটা ছিলো সবজি মমো। পেটপুরে খেয়ে সিদ্ধান্ত হলো পরেরবার চিকেন মমো খাওয়ার। বেড়াতে গেলে এটা খেতে ভুলেও ভুলবেন না!

লোলেগাঁও থাকার যে দু’একটি জায়গা আছে সেটি অনেক ব্যয়বহুল। তাই লাভায় এসে থাকতে পারেন হাজার দেড়েক রুপি ভাড়ার হোটেলেই।

চলবে....

বাংলাদেশ সময়: ০৮৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৬
এএ/

** গরুবাথানের পাথুরে স্বচ্ছ পাহাড়ি ধারায়
** ফুলবাড়ি হয়ে দার্জিলিং, হ্যাপা কম নয় ২৫ রুপির ঘোষণায়
** ৭ হাজার ফুট উচ্চতার লাভা শহরে

 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।