ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

এশিয়াডে প্রধান টার্গেট ফাইনাল: বাকী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৮
এশিয়াডে প্রধান টার্গেট ফাইনাল: বাকী আব্দুল্লাহ হেল বাকী, ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: আব্দুল্লাহ হেল বাকী। কমনওয়েলথ গেমসের পর পর দুই আসরে রৌপ্যজয়ী শ্যুটার। ২০১৪ সালের গ্লাসগো ও ২০১৮ সালের অস্ট্রেলিয়া কমনওয়েলথ গেমসের ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ইভেন্টে রৌপ্য জেতেন তিনি। ২০১৮ সালের আসরে শেষ শটে ১০.১ স্কোর করতে পারলেই জিততে পারতেন সোনা।

ফাইনালে বাকীর স্কোর ছিলো ২৪৪.৭।  শ্যুট অফের শেষ শটে তিনি ৯.৭ স্কোর করেন।

 শীর্ষে থাকা অস্ট্রেলিয়ার শ্যুটার ড্যান স্যাম্পসনের স্কোর ২৪৫; যা কমনওয়েলথ গেমসেরই রেকর্ড।  তবে যা অর্জন করেছেন তাও নিতান্ত কম নয়। জাতীয় পর্যায়ে ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ইভেন্টে টানা চারবার স্বর্ণপদক পেয়েছেন বাকী। বর্তমানে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর চিফ পেটি অফিসার হিসেবে নিয়োজিত আছেন।

আগামী ১৮ আগস্ট থেকে ইন্দোনেশিয়ায় শুরু হতে যাওয়া অষ্টাদশ এশিয়ান গেমসেও শ্যুটিং থেকে পদক জয়ের আশা তাকে ঘিরেই। এশিয়াডে অংশ নিতে ১৩ আগস্ট ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশে উড়াল দেবেন এই দেশসেরা শ্যুটার।

যাওয়ার আগে তার পরিকল্পনা, প্রস্তুতি ও প্রত্যাশা নিয়ে কথা বলেছেন বাংলানিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলানিউজের নিউজরুম এডিটর মো. মোয়াজ্জেম হোসেন।  

বাংলানিউজ: এর আগে কমনওয়েলথ গেমসে রৌপ্যপদক জিতেছিলেন, এশিয়ান গেমস থেকে কি তেমন কিছু আশা করতে পারি?

বাকী: আসলে কমনওয়েলথ গেমস আর এশিয়ান গেমসের মধ্যে বড় পার্থক্য আছে। এশিয়াডে চীন আছে, দক্ষিণ কোরিয়া আছে। বিশেষ করে চীন। ওরা অলিম্পিকে সেরাদের কাতারে পড়ে। ফলে ওদের যেহেতু দু’জন আছে। আমি মনে করি স্বর্ণ আর রূপা ওদের হাতেই ওঠার সম্ভাবনা বেশি। ওদের অবস্থান অনেক স্ট্যান্ডার্ড। ভারতও ভালো। তবে ভারত, কোরিয়া কিংবা জাপানকে হারিয়ে দেওয়া সম্ভব হলেও চাইনিজদের হারানো কঠিন হবে। তবু আমরা আশা ছাড়িনি। অন্তত একটা পদক তো পেতেই পারি। আপনি খেয়াল করে দেখুন, আমি জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও ফাইনালে আট নম্বরে গিয়ে বাদ পড়েছিলাম। আবার কমনওয়েলথ গেমসে রূপা পেলাম। ফাইনালে আসলে কখন কি হয় বলা যায় না। তাই আমাদের প্রধান টার্গেট ফাইনাল।

কমনওয়েলথ গেমসে রৌপ্যপদক জয়ের পর হাসিমুখে বাকী

বাংলানিউজ: এশিয়াডের প্রস্তুতি কেমন?

বাকী: এবারের প্রস্তুতি সেরা। বিদেশি কোচদের অধীনে অনুশীলন করাটা বেশ কাজে দেবে বলে মনে করি। আমাদের জাতীয় দলের কোচ ক্লাভস জর্ন ক্রিসটেনসেন বিশ্বের অন্যতম সেরাদের একজন। বিদেশি কোচদের অধীনে যে অনুশীলন আমরা করেছি তাকে এক কথায় পারফেক্ট বলা যায়। এখন যদি আমাদের আরও বেশি বেশি গেমসে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে মানসিক শক্তি আরও বেড়ে যেত। কারণ যারা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় পদক জেতে তারা কিন্তু সব ধরনের গেমসে অংশ নেয়। যেমন আমি কমনওয়েলথ গেমসের পর এখন পর্যন্ত অন্য কোনো গেমসে অংশ নিতে পারিনি। সরাসরি এশিয়াডে যাচ্ছি। যারা এশিয়াডের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং সফল হওয়ার মতো অবস্থায় আছে তারা কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানিতে যেসব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিয়েছে। আবার এশিয়ান গেমসের পরপরই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হচ্ছে। অলিম্পিকের পর সবচেয়ে বড় আসর, বিশেষ করে শ্যুটিংয়ের জন্য। কিন্তু সেখানে আমি যাচ্ছি না। যদিও অনেক চেষ্টা করেছি, ফেডারেশনও চেষ্টা করেছে। কিন্তু হয়নি।

বাংলানিউজ: এমনটা হওয়ার কারণ কি বলে মনে করেন? ফেডারেশনের কোনো সমস্যা দেখছেন কি-না?

বাকী: না, জানামতে ফেডারেশন চেষ্টা করেছে। ফেডারেশন চেয়েছে এশিয়ান গেমস শেষ করে কোরিয়ায় বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে যাই। শিডিউল এভাবেই করার কথা। যেহেতু এশিয়ান গেমস শুরু ২ সেপ্টেম্বর থেকে, তাই ২৭ কিংবা ২৮ আগস্ট থেকে শুরু হতে যাওয়া বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেওয়া একটু জটিল প্রক্রিয়া বলে মনে হয়। শ্যুটিং ফেডারেশন থেকে এশিয়াডে শেষ হওয়ার পরপরই কোরিয়ায় যাওয়ার একটা পরিকল্পনা অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের কাছে দেওয়া হয়েছিল। ইন্দোনেশিয়া থেকে ঢাকায় না ফিরে কোরিয়ায় গিয়ে সেখানে কয়েকদিন থাকা মিলিয়ে যে টাকা খরচ হবে তা নিয়ে তারা একমত হতে পারেননি।

বাংলানিউজ: এটা আপনার জন্য নিশ্চয়ই অনেক বড় একটা সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার মতো ঘটনা?

বাকী: এটা আমার জন্য অনেক বড় আফসোসের ব্যাপার। কেননা এটা আমার বেশ বড় একটা সুযোগ হতে পারতো। এই আসর বসে চার বছর পরপর। কিন্তু আমি খেলতে পারছি না। আমি এখনও চেষ্টা করছি, কিন্তু কোনো ইতিবাচক উত্তর পাচ্ছি না। আমি কিংবা শাকিল (কমনওয়েলথ গেমসে রৌপ্য জয়ী শ্যুটার) যারা কমনওয়েলথ থেকে রূপা জিতেছি, আমি মনে করি আমরা এই সুযোগ ডিজার্ভ করি। বাংলাদেশ থেকে যদিও কয়েকজন যাবে, কিন্তু আমার যাওয়া হচ্ছে না। এটা খুব কষ্টদায়ক।

শুট করছেন বাকী

বাংলানিউজ: প্রায়ই দেখা যায় অ্যাথলেটরা সুযোগ-সুবিধার অপ্রতুলতা নিয়ে অভিযোগ করেন। আপনার ক্ষেত্রেও কী এমনটা হয়?

বাকী: এটা ঠিক সেভাবে বলা যাবে না। তবে আমি চেয়েছিলাম, অনুশীলনটা যেন মন দিয়ে করতে পারি। নিজের সেরাটা যেন বের করে আনতে পারি। বিদেশি ভালো কোচের জন্য অনেক ফাইট করেছি। বিদেশি কোচের পেছনে অনেক খরচ। প্রত্যেক অনুশীলনে তাদের পেছনে ব্যয় হয় চল্লিশ হাজার টাকা। মাসে প্রায় ১২ লাখ টাকা। আবার থাকা-খাওয়ার খরচ তো আছেই।   আমাদের মূল সমস্যা আসলে আর্থিক। আমাদের দুইজন কোচ, একজন কোরিয়ান কোচও আছেন। শ্যুটার হিসেবে এটা অনেক ভালো সুবিধা পাচ্ছি একথা বলাই যায়। আমি যে এসব সুবিধা পাচ্ছি এটা অনেক বড় ব্যাপার। তারপর যখন বেশি করে গেমসে অংশ নিতে চাইবো, সেটা আমি মনে করি ইতিবাচক। আমরা যেহেতু এশিয়াডে যাচ্ছি, আমি যতটুকু জানি, ফেডারেশন থেকে আমাদের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নে যাওয়ার ব্যাপারে সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু তারপর থেকে ইতিবাচক কিছু পাইনি।

বাংলানিউজ: জাতীয় দলের কোচ ক্লাভস জর্ন ক্রিসটেনসেন বলেছেন, কোরিয়া-চীনের মতো দলের বিপক্ষে খেলার জন্য শ্যুটাররা মানসিকভাবে প্রস্তুত নন, আপনার কথা না বললেও শাকিল-জাকিয়াদের কথা বলেছেন তিনি। আপনার কি মত?

বাকী: অবশ্যই পিছিয়ে আছি আমরা। আমি একটা সাধারণ কথা বলি, আমি জাতীয় দলের হয়ে খেলছি প্রায় ৭ বছর। এই সময়ে আমি আন্তর্জাতিকভাবে মাত্র ২০টা গেমসে অংশ নিয়েছি। কিন্তু ভারতের কথা যদি বলি, তারা মাত্র ২ বছরেই ২০ বা তার অধিক গেমসে অংশ নেয়। ভারতের কথা বললাম কারণ, আমাদের এখানে ভারতীয় অ্যাথলেটদের সঙ্গে তুলনাটা হয় বেশি। সেখানে মাত্র দুই বছর অভিজ্ঞ একজন শ্যুটার আমাদের মতো অভিজ্ঞতার চেয়ে বেশি শক্তিশালী। কিংবা যারা পাঁচ বছরের বেশি অভিজ্ঞ তাদের কথা যদি বলি যেমন বিন্দ্রা, রাজপুত ওদের সঙ্গে অভিজ্ঞতায় পারা কঠিন। আমি শ্যুটিং নিয়ে আছি ঠিক আছে, কিন্তু আমি বাংলাদেশের শ্যুটিং নিয়েই আছি। বাংলাদেশের শ্যুটারদের সঙ্গে যদি আমার তুলনা করেন আমি অনেক এগিয়ে। কেউ আমার সঙ্গে শ্যুটিং করতে গেলে তার কিছুটা হলেও সমস্যা হবে। কিন্তু আমি যখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাবো, তখন আমি নিজেই ঝামেলায় পড়ে যাবো। আমি তো তাদের সমান গেমসে অংশ নেওয়ার সুযোগই পাচ্ছি না। দেখেন, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের কথা যদি বলি, সেখানে সিনিয়র, জুনিয়র আর ইয়ুথ তিনটা ভাগে ভাগ করা করে প্রতিযোগিতা হয়। সেখানে ভারতের দলে ১১৬ জন যাচ্ছে। আর বাংলাদেশ থেকে যাচ্ছে মাত্র দু’জন। তাও অনেক ঝক্কি-ঝামেলার পর। আমি আর শাকিল যাওয়ার চেষ্টা করেও সফল হতে পারলাম না। যারা এশিয়ান গেমসে যাচ্ছে না এবং ঢাকা থেকে যাবে তাদের বিষয়টা নিশ্চিত হয়ে গেছে। ফলে আমরা যেতে পারলাম না। যাই হোক এখন আফসোস করে তো আর লাভ নেই। এশিয়াডে মনোযোগ দিতে চাই এখন।

বাংলানিউজ: বাংলাদেশে শ্যুটিংয়ে আপনার কোনো উত্তরসূরীকে দেখছেন কি?

বাকী: দেখুন, সেভাবে আসলে বলা যায় না। শ্যুটিং এমন একটা ইভেন্ট কে কখন কি করবে তার ঠিক নেই। গত জাতীয় চ্যাম্প্যনশিপে আমি বাংলাদেশের রেকর্ড গড়েছিলাম। কিন্তু ফাইনালে যাওয়ার পরে আমি আট নম্বরেই বাদ পরে যাই। আমি মনে করি বাংলাদেশে এই মুহূর্তে পাঁচ থেকে ছয়জন বিশ্বমানের শ্যুটার আছে। এরা আমার চেয়েও অনেক ভালো করবে যদি তাদের সঠিক যত্ন নেওয়া হয়। ওরা এখনই যতটা মানসিক শক্তি অর্জন করেছে আমার মনে হয় না আমি ওদের মতো বয়সে এতদূর আসতে পারতাম। যেমন রাব্বি হাসান মুন্না আছে, জাকিয়া আছে, শাকিল তো এরইমধ্যে অনেকদূর এগিয়ে গেছে। তারা খুব দ্রুতই অনেক পথ পেরিয়ে এসেছে। আমাকে অনেক কষ্ট করে অবস্থান তৈরি করতে হয়েছে। তাই ওদের যদি সঠিক পথে রাখা যায় তাহলে ওরা অনেকদূর যাবে।

অনুশীলন করছেন জাকিয়া ও শাকিল

বাংলানিউজ: বাংলাদেশে শ্যুটিংয়ের ভবিষ্যত কেমন দেখছেন?

বাকী: এখন যেভাবে চলছে তাতে ভবিষ্যত খুব খারাপ বলেই মনে করি। প্রত্যাশার কাছাকাছি যাওয়া সম্ভব হবে কি না সন্দেহ। শ্যুটিং এমন একটা প্ল্যাটফর্ম যেখানে প্যাশন লাগে। আমি আমার কথা যদি বলি, আমি যদি একদিন ঠিকমতো শ্যুট করতে না পারি তাহলে ঘুমাতে পারি না। আর এক সপ্তাহ যদি শুটিং থেকে দূরে থাকি তাহলে আমি ঠিক থাকতে পারিনা। এটা একরকম নেশা বলতে পারেন। আমি এই নেশাটা নিয়েই আছি। আরও কয়েকজন আছে যাদের কাছে শুটিং একটা নেশা। এইজন্যই শ্যুটিং এখনও এদেশে টিকে আছে। আর যদি এটাকেই পেশা হিসেবে নেওয়া হয় তাহলে বিপদ হয়ে যেত। কারণ শ্যুটিং থেকে আয়ের কোনো নিশ্চয়তা নেই। নির্দিষ্ট বেতন নেই। অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমি দুইটা রূপা পেয়েছি। শুধু অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন কিছু টাকা দিয়েছে। শ্যুটিং স্পোর্টস ফেডারেশন ঘোষণা দিয়েছে, কিন্তু এখনও দেয়নি। ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই যে আক্ষেপ তা নতুন কাউকে এই খেলায় জড়িত হতে আশা জোগাবে বলেন?

বাংলানিউজ: মানে শ্যুটিং এখন সৌখিনতার পর্যায়ে চলে গেছে?

বাকী: ঠিক তাই। ফলে এটাকে যদি পেশা হিসেবে না নেওয়া যায়, তাহলে নতুন কেউ আসবে কেন? শ্যুটিং করে কেউ যদি চিন্তা করে অর্থ আয় করবে কিংবা সংসার চালাবে, তাহলে তার জন্য শ্যুটিংয়ে আসা কঠিন। আয়ের সুযোগ থাকলে অনেকেই আগ্রহী হয়ে আসতো।

বাংলানিউজ: আপনার শ্যুটিংয়ে আসার সময় কেউ বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি? আপনার পরিবার আপনাকে কতোটা ছাড় দিয়েছে?

বাকী: আমার পরিবার আমার পক্ষেই ছিল সবসময়। তাদের সমর্থনেই আমি আজ এখানে আসতে পেরেছি। তারা আমাকে এটাও বলেছে, অন্যকিছু করার দরকার নেই, শ্যুটিংয়ে মনোযোগ দিতে। এমন সমর্থন বর্তমান যুগের ছেলে-মেয়েরা পাবে না। সবাই ভবিষ্যতের চিন্তা করবে। আমি রিস্ক নিয়ে এই খেলায় এসেছি। এই ক্ষেত্রে নিজেকে ভাগ্যবানই বলবো। আমি যদি আরেকটু সুযোগ পেতাম তাহলে আরও বেশি কিছু অর্জন করতে পারতাম।

বাংলানিউজ: আপনার ক্যারিয়ার নিয়ে আপনি কতটা সন্তুষ্ট?

বাকী: একটুও না। তবে এটাও বলবো ক্যারিয়ার যেহেতু এখনও শেষ হয়নি, তাই আরও কিছু অর্জন করার সুযোগ রয়ে গেছে। আমার সামনে এখনও অনেক সময় পড়ে আছে। সামনে অলিম্পিক আছে, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নে এবার যাওয়া হচ্ছে না। তবে আগামীতে যাবো আশা করি। অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন যদি আমাদের দিকে আরেকটু নজর দেয় তাহলে আমরা আরও ভালো কিছু করতে পারবো।

বাংলানিউজ: অস্ট্রেলিয়ায় কমনওয়েলথ গেমসে যেবার রৌপ্য জিতলেন, অল্পের জন্য স্বর্ণপদক মিস হলো, সেই অভিজ্ঞতার কথা শুনতে চাই-

বাকী: সেবার আমি বেশ আগেই প্রস্তুত হয়েছিলাম। আমি এমনিতেও ৩০ সেকেন্ড আগে চিক বসাই। ৪০ সেকেন্ডে গিয়ে শ্যুট করি। সময় থাকে ৫০ সেকেন্ড। মানে চিক বসানোর ১০ সেকেন্ডের মধ্যে আমি শ্যুট করি। কিন্তু ওখানে যখন দেখলাম অস্ট্রেলিয়ার শ্যুটার ডেন স্যাম্পসন যখন শ্যুট করে ফেলেছে, তখন গ্যালারিতে উপস্থিত হাজারখানেক দর্শক উল্লাসে ফেটে পড়ে। ওরা হয়তো জয় নিশ্চিত হয়ে গেছে ভেবে এমনটা করেছে, কিন্তু সেটা আমার মনোযোগে বিঘ্ন ঘটায়। আমার ভুলটা ছিলো ওদিকে নজর দেওয়া। আমি তখন চিক উঠিয়ে সামনের মনিটরে (শ্যুটারদের মনিটর) চোখ রাখলাম দেখি স্যাম্পসন যে স্কোর করেছে তা আহামরি কিছু না। আমার তখন ১০.১ স্কোর করলেই হতো। এটা বড় কোনো ব্যাপার ছিলো না। এটা যদি ১০.৫ বা ১০.৬ হতো তাহলে কঠিন হতো। কিন্তু ওই যে মনোযোগে ব্যাঘাত, ওটাই কাল হয়ে দাঁড়ায় শেষ পর্যন্ত। আমার সময় তখন অনেকটা চলে গেছে। ফলে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে ভুলটা করে ফেললাম। আমি আগের ২৩টি শট ভালোভাবেই খেলার পর শেষ শটে গিয়ে ধরা খেলাম। আমি হিসাব কষতে গিয়ে আসলে ক্ষতিটা করে ফেলেছি। আমার যদি নিজের প্রতি নিয়ন্ত্রণ থাকত, তাহলে স্বর্ণপদক আজ আমার হতো।

বাংলানিউজ: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

বাকী: বাংলানিউজ ও এর পাঠকদেরও অসংখ্য ধন্যবাদ।

বাংলাদেশ সময়: ০৯০২ ঘণ্টা, আগস্ট ১০, ২০১৮
এমএইচএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।