ঢাকা, বুধবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

খেলোয়াড়দের ভবিষ্যৎ নিয়ে কারও কোনো চিন্তাভাবনা নেই

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ১, ২০১৮
খেলোয়াড়দের ভবিষ্যৎ নিয়ে কারও কোনো চিন্তাভাবনা নেই মাবিয়া আক্তার সীমান্ত

মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। মাদারীপুরের মেয়ে দেশের ক্রীড়াঙ্গনে ভারোত্তোলক হিসেবে আলো ছড়াচ্ছেন। ২০১৬ দক্ষিণ এশীয় গেমসে ৬৩ কেজি ওজন শ্রেণীতে তিনি স্বর্ণপদক জয় করেন। একটি স্বর্ণ জেতেন তরুণ বিভাগে এবং দু’টি রুপা জয় করেন জ্যেষ্ঠ ও কনিষ্ঠ বিভাগের কমনওয়েলথ ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপে নারীদের ৬৩ কেজি শ্রেণীতে। তিনি মোট ১৭৬ কেজি উত্তোলন করে স্বর্ণপদক জেতেন। নিজের আগামী পরিকল্পনা, ভারোত্তলন খেলার নানান সমস্যা আর ব্যক্তিগত বিভিন্ন বিষয়ে তিনি সম্প্রতি কথা বলেছেন বাংলানিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন নিউজরুম এডিটর মোয়াজ্জেম হোসেন। সঙ্গে ছিলেন সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট শোয়েব মিথুন

প্রশ্ন: এখন কিসের প্রস্তুতি নিচ্ছেন?
মাবিয়া: সামনে এশিয়ান গেমস আছে। প্রস্তুতির ঠিক নেই, কোনো ক্যাম্পিং হচ্ছে না।

তবে আমি নিজে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।

প্রশ্ন:  ভারোত্তোলন ফেডারেশনের সাথে আপনার যে সমস্যা ছিল, সেটা কোন অবস্থায় আছে?
মাবিয়া: এখনও ফেডারেশনের নির্বাচন হয়নি। ফলে সব সমস্যা এখনও শেষ হয়নি, তবে সমস্যা আগের চেয়ে কিছুটা কমেছে। আগে যেমন খেলোয়াড়দের খেলার চেয়ে ক্ষমতার লড়াইটা বেশি ছিল, এখন সেটা কিছুটা কমেছে বলা যায়। এখনও আগের কমিটি দিয়েই চলছে বলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না।

প্রশ্ন: ফেডারেশনের বিরুদ্ধে আপনার একটা অভিযোগ ছিল যে, অনুশীলনের পর্যাপ্ত সুযোগ পাচ্ছেন না, এর কোনো সুরাহা হয়েছে?
মাবিয়া: না। যা বলা হয়েছিল তার তিন ভাগের একভাগও পাইনি। কিছুদিন আগে কমনওয়েলথ গেমসে অংশ নিলাম, সেখানে অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের অধীনে ক্যাম্প করা হয়েছিলো। ফেডারেশনের পক্ষ থেকে কোনো পরিকল্পনা নেই। খেলোয়াড়দের ভবিষ্যৎ কী, এ নিয়ে কারও তেমন কোনো চিন্তাভাবনা নেই।

...
প্রশ্ন: ফেডারেশনের পক্ষ থেকে আপনার সঙ্গে কি নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করা হয়?

মাবিয়া: না, সেভাবে যোগাযোগ করা হয় না। তবে কোনো ইভেন্ট থাকলে তখন যোগাযোগ করা হয়। আমার পরিচিত বা কাছের কয়েকজন খোঁজ রাখলেও উপর লেভেল থেকে সেভাবে খোঁজ রাখা হয় না। ফলাফল ভাল না হলে তখন তাদের সাথে আমাকে কথা বলতে হয়।

প্রশ্ন: এতো খেলা থাকতে ভারোত্তোলনে কেন? খেলাটার প্রতি কতোটা ভালবাসা অনুভব করেন?
মাবিয়া: আমি এই খেলাটি মন থেকে ভালবাসি। আর কোনো খেলা যে আমাকে আকর্ষণ করে না, ব্যাপারটা এমনও নয়। তবে শুরু থেকেই এই খেলাটাকেই আমি আমার ধ্যান-জ্ঞান বলে মানি। ফলে আমি ভারোত্তোলন কে কতোটা ভালবাসি বলে বোঝাতে পারবো না। আজকে সবাই আমাকে চেনে-জানে এই খেলার কারণেই। আজকে সমাজে আমাকে পরিচয়-সম্মান সবই এনে দিয়েছে এই ভারোত্তোলন।

প্রশ্ন: ভারোত্তোলন খেলায় বাংলাদেশের নারীদের আসতে বাধা কোথায়? আর ফেডারেশনে তাদের জন্য বিশেষ কোনো সুবিধা আছে কিনা?
মাবিয়া: বড় সুবিধা হলো কোনো ফি দিতে হয় না। তবে তার জন্য নিজেকে একটা পজিশনে আনতে হবে আগে। নাহলে সুযোগ পাওয়া কঠিন। এখানে ট্রেনিং সুবিধা আছে। নতুনদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে। কোনো অর্থ খরচ হবে না এতে। আর মেয়েদের ভারোত্তোলন এই দেশে ২০০১-০২ থেকে শুরু হয়েছে। সাফল্য এসেছে। মেয়েদের জন্য ভারোত্তোলন তাই কোনো রিস্কি খেলা না। মেয়েরা চাইলেই এই খেলায় যুক্ত হতে পারে।

...
প্রশ্ন: এতোদূর আসার পেছনে আপনার মামার অনেক বড় ভূমিকা আছে সেটা সবার জানা, কিন্তু আপনার বাবা-মা কতোটুকু সহায়ক ভূমিকা পালন করেছেন?

মাবিয়া: যেহেতু আমার মামা ছিলেন মেন্টর (গুরু), তাই মা-বাবার আসলে তেমন কিছু করার ছিল না। তারা শুধু উৎসাহ দিয়ে গেছেন। মাঝে মাঝে যখন ইচ্ছা হয় ছেড়ে দিতে, তখন তারা বোঝান আরও চেষ্টা করে দেখতে। না পারলে ফিরে আসতে। তবে মূলত মামাই আমার এই দিকটার দেখভাল করতেন। আরেকজন ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান ভাইস-প্রেসিডেন্ট কমান্ডার মহিউদ্দিন আহমেদ। উনিও সবসময় সাপোর্ট করতেন। উনি ব্যক্তিগতভাবে সবাইকে গাইড করতেন। আমার আজকের অবস্থানের পেছনে আমার মামা, আমার কোচ আর উনার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি।

প্রশ্ন:  এবার অবধারিতভাবে একটা প্রশ্ন করি। আর তা হলো, ২০১৬ সালে ভারতে এসএ গেমসে স্বর্ণপদক জয়ের পর জাতীয় সঙ্গীত বেজে উঠতেই আপনার অঝোরে কান্নার সেই মুহূর্তে আপনার মনে আসলে কী চলছিলো?
মাবিয়া: আসলে ওই সময়ের অনুভূতি আমি বলে বোঝাতে পারবো না। আমার সারাজীবনের স্বপ্ন ছিল বড় কোনো ইভেন্টে স্বর্ণপদক পাওয়ার। এসএ গেমসের ১০ দিন আগে ইনজুরিতে পড়েছিলাম। ফলে কিছুটা মানসিক চাপ ছিল। পরে সৌভাগ্যবশত স্বর্ণপদক পেয়ে গেলাম। স্বপ্ন সফল হলো। তারপর যখন পদক হাতে নেওয়ার পর জাতীয় সঙ্গীত বেজে ওঠে, আমি যে কেন কেঁদে ফেললাম তা আমি জানি না। হয়তো দেশের জন্য কিছু করতে পারা বা দেশের জন্য সম্মান বয়ে আনার আনন্দেই কেঁদে ফেলেছিলাম।

প্রশ্ন: সেই ঘটনার পর তো রাতারাতি তারকা বনে গেলেন। সেই ঘটনার পর ও তার আগের জীবনের পার্থক্য কেমন অনুভব করলেন?
মাবিয়া: রাত আর দিনের মধ্যে যতোটা পার্থক্য। ২০১৬ সালের ওই মুহূর্তের পর আমার জীবনেও তেমন পার্থক্য বুঝতে পারলাম। আমি এতোটা  কখনও ভাবিনি।

প্রশ্ন: আজকের মাবিয়াকে দশ বছর পরে কোথায় দেখতে চান?
মাবিয়া: আজ থেকে দশ বছর পরে আমি চাই, রেকর্ডবুকে আমার নাম থাকবে। অন্তত একটা রেকর্ডে শুধু আমার নিজের নাম দেখতে চাই। এমন জায়গায় পৌঁছাতে চাই, যেখানে চাইলেই কেউ পৌঁছাতে পারবে না।

...
প্রশ্ন: ভারোত্তোলনে কাউকে কি নিজের উত্তরসূরী মনে করেন যিনি আপনার অবর্তমানে হয়তো ভাল কিছু করে দেখাতে পারেবন?

মাবিয়া: না, আমি তেমন কাউকে দেখছি না। হয়তো ভবিষ্যতে আসতে পারে।

প্রশ্ন: এর পেছনে কারণ কী বলে মনে করেন?
মাবিয়া: কিভাবে হবে? ১০ বছর আগের সুবিধা দিয়ে কি এখনও কাজ চলবে? এখন আধুনিক প্রযুক্তির যুগেও পুরনো সরঞ্জাম দিয়ে কি প্রতিযোগিতা করা সম্ভব বলেন? আমি করেছি, তখন তেমনভাবেই সম্ভব ছিল। কিন্তু এখন সময় পাল্টে গেছে। আমি নিজেই পাচ্ছি না, আরেকজনের পাওয়ার প্রশ্ন তো পরে। এখন যুব গেমস আছে, অনেক খেলোয়াড় আসছে এখন। তাদের টেকনিক ভালো ছিল। কিন্তু তাদের পর্যাপ্ত অনুশীলনের ব্যবস্থা নেই। যদি তাদের সেসব সুবিধা দেওয়া হয়, তাহলে দেখবেন তারা আমার চেয়েও ভাল কিছু উপহার দিতে পারবে।

প্রশ্ন: শেষবার কমনওয়েলথ গেমসে নিজের সেরা ১৮০ কেজি ভারোত্তোলন করেও ষষ্ঠ হলেন। প্রথম যিনি হলেন তিনি ২২০ কেজি ভারোত্তোলন করলেন। এই ব্যবধানের পেছনে কারণ কী বলে মনে করেন? 
মাবিয়া: আসলে সুযোগ সুবিধাইই মূল কারণ। পাশের দেশ ভারতের কথাই যদি বলি, আমার কয়েকজন বন্ধু ওখানকার যারা ভারোত্তোলন খেলায় আছে তাদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়। ওরা যেসব সুযোগ সুবিধা পায় তার একভাগও আমরা পাই না। ইউরোপ-আমেরিকার কথা তো কল্পনাই করা যায় না। যে মেয়েটা স্বর্ণ জিতেছে তার ৭ বছর ধরে নিজের ঘর নিয়ে ভাবতে হয় না। সব চিন্তা ফেডারেশনের। ওদের অনুশীলনের পরিবেশ দেখলে বলবেন যে, এটাই আদর্শ পরিবেশ ভারোত্তোলনের জন্য। আর আমাদের যেখানে ক্যাম্প করানো হয় তা একটা ছোট রুমে ৮ জন করে ১৬ জনের ক্যাম্প। তফাত অনেক বেশি। অনুশীলনে যথেষ্ট যন্ত্রপাতি নেই, খাবার নেই। এমন অবস্থায় ভাল কিছু কিভাবে আশা করা যায় বলুন? কোনো বড় ইভেন্টে যাওয়ার আগে সবাই বলে যে আমরা পদক পাবো। কিন্তু মেডেল পেতে হলে যা করতে হয় তা নিয়ে কেউ ভাবে না। আজকে শ্যুটিং থেকে পদক আসছে কারণ তাদের জন্য অনুশীলন ও অন্যান্য সুবিধার ব্যবস্থা আছে। বিদেশি কোচ আছে। আর আমাদের দেশি কোচরাই আমাদের সময় দিতে পারেন না। ধারাবাহিক অনুশীলনের ব্যবস্থা না থাকলে কারও পক্ষেই ফর্ম ধরে রাখা সম্ভব নয়। ঠিকঠাক সুবিধা পেলে কমনওয়েলথ গেমসে অন্তত ব্রোঞ্জপদক পেতাম।  

প্রশ্ন: তার মানে ভারোত্তোলন নিয়ে খুব বেশি আশা করার সুযোগ নেই? 
মাবিয়া: না, বেশিদূর আশা করার সুযোগ নেই বলেই মনে করি। এশিয়ান গেমস বা কমনওয়েলথ গেমসে তো নয়ই, অলিম্পিকে তো অসম্ভব। আমি এসএ গেমসে স্বর্ণ পদক পেয়েছিলাম কিছু মানুষের সহযোগিতা, আমার নিজের চেষ্টা আর ভাগ্যগুণে। ২০১৯ সালে সাউথ এশিয়ান গেমস হওয়ার কথা। যেভাবে চলছে তাতে ভারোত্তোলনে ব্রোঞ্জ পাওয়াই অসম্ভব মনে হচ্ছে। যে শ্রীলংকা স্টার্টিংয়েই হেরে যেতো তারা এখন আমাদের হারিয়ে দিচ্ছে। ওদের উন্নতি হচ্ছে, আর আমাদের? পাকিস্তানে আমার কিছু বন্ধু আছে যারা ভারোত্তোলনে আছে, ওরা বলে গত এসএ গেমসের পর থেকে ওদের ক্যাম্প চলছে। আর আমাদের শুরু হবে গেমস শুরু হওয়ার ছয় মাস আগে। সারাবছর ঘরে বসে কাটিয়ে ছয় মাসের ক্যাম্পে কি কাজ হয় বলুন? আমরা চাওয়ার সময় বড় কিছু চাই, কিন্তু দেওয়ার সময় খুব সামান্য দিই। কোনোকিছু আশা করার আগে কী দিয়েছেন তাও দেখা দরকার। খারাপ করলে সমালোচনা করবেন, অথচ আপনাদের দেওয়া সুযোগ-সুবিধা যে ভাল নয় সেটা স্বীকার করবেন না! যে মেয়েটা কমনওয়েলথ গেমসে আমার আগে ছিল ওর আর আমার স্কোর একই ছিল। যেহেতু ও আগে তুলেছে তাই ও আগে ছিল। ওদের জন্য ইভেন্টের আগে দুই-তিন বছর ক্যাম্পিং করার ব্যবস্থা ছিল। আর আমাদের ছয় মাস। সমান সুবিধা পেলে আমরা কেমন করতাম বুঝুন তাহলে। ভারতের ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ভারতে গিয়ে খেলার জন্য বলা হয়েছিল আমাকে। সব সুবিধা ওরা দেবে। কিন্তু ভারতের হয়ে অলিম্পিকে অংশ নিতে হবে, আমি রাজি হইনি। অনুশীলন করতে পারি, কিন্তু নিজের দেশকে বাদ দিয়ে তো আমি রাজি হবো না! একই সুবিধা আমি নিজের দেশের কাছে চাই। আমাকে আরও ভাল করার সুযোগ তো দিতে হবে।  
শেষবার দেশে ফেরার পর অনেকেই বললেন, একবার নাম হয়ে গেলে আর ভাল খেলোয়াড় থাকে না। কিন্তু নাম হয়ে গেলে তা ধরে রাখার জন্য যা দরকার তার বিষয়ে কেউ কিছু বলবে না। খেলোয়াড়ের বদনাম কিন্তু ঠিকই হবে। ক্রিকেটেও এমন হয়। মুশফিক ভাই কিংবা সাকিব ভাইয়েরা খারাপ খেললে সবাই তাদের নিয়ে কটূকথা বলে। কিন্তু তারা কি ইচ্ছা করে খারাপ খেলেন? মোটেই না। সবসময় একই ফল আশা করা ঠিক নয়। আমরা না বুঝেই দোষারোপ করি। আমাদেরও এমন কথা শুনতে হয়, যে, আমরা হাওয়া লাগিয়ে ঘুরি। আজকে আমি হয়তো মেনে নিলাম। নতুন যারা আসবে তারা কী ভাববে? বলা হয়েছিল ২০১৬ সালের যুব গেমসের পরই ক্যাম্প শুরু হবে। কই হয়েছে? হয়নি। তাহলে ওই বাচ্চাগুলোর কী হবে? ওদের ভবিষ্যৎ কী? বিনা স্বার্থে কেউ এতো কষ্ট করবে? আপনি যদি তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশা দেখাতে না পারেন, তাহলে কেন ওরা কষ্ট করবে? 

প্রশ্ন: এসব কথা ফেডারেশনকে বলেননি? 
মাবিয়া: বলেছি। হয়তো সব ঠিক হয়ে যাবে কিংবা হবে না। আজকে আমাকে মানুষ মনে রেখেছে এটা আমার ভাগ্য। আগামী বছর যদি ভাল কিছু না করতে পারি তাহলে সবাই ভুলে যাবে। এটাই বাস্তবতা।

প্রশ্ন: তারপরও আপনার লক্ষ্য কী? 
মাবিয়া: নিজেকে ইতিহাসের পাতায় দেখতে চাই। এমন রেকর্ড গড়তে চাই যা অনেকদিন টিকে থাকবে।  

প্রশ্ন: সাউথ এশিয়ান গেমসে স্বর্ণপদক জেতার পর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আপনার জন্য ফ্ল্যাটের ব্যবস্থা করার কথা ছিল। ফ্ল্যাট কি বুঝে পেয়েছেন? 
মাবিয়া: চাবি হাতে পেয়েছি। কাগজপত্র পাইনি। বাসা দেখে এসেছি। বাসাটা অনেক সুন্দর। কাগজপত্র বুঝে পেলে হয়তো উঠতে পারবো।  

প্রশ্ন: কাগজপত্র কবে পাবেন সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি? 
মাবিয়া: কবে পাবো জানানো হয়নি। যতোদিন না পাচ্ছি, ভাড়া বাসায় থাকার ব্যবস্থা হয়েছে।  

প্রশ্ন: ভারোত্তোলন ছাড়া আর কী কী খেলা পছন্দ করেন? 
মাবিয়া: বক্সিং খুব পছন্দ করি। আমার মামা বক্সিং চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। ক্রিকেট খুব ভাল লাগে।  

প্রশ্ন: ক্রিকেট প্রসঙ্গে জানতে চাই, জাতীয় ক্রিকেট দলের (ওয়ানডে) অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার সঙ্গে প্রথম দেখা হওয়ার অনুভূতি কেমন? তিনি তো এসএ গেমসে আপনার কান্না দেখে কেঁদে ফেলেছিলেন।  
মাবিয়া: প্রথম দেখা হওয়ার কথা মনে নেই। তবে অনেকবার দেখা হয়েছে। ক্রিকেট খেলায় আমার প্রিয় তারকা তিনি। শুধু ক্রিকেটার হিসেবে না, মানুষ হিসেবেও তিনি আমার প্রিয়। তিনি আমার আইডল। আমি তার অনেক বড় একজন ভক্ত। তার দেখা পাওয়া আমার জন্য অনেক আনন্দের। আর তিনি যে কেঁদেছিলেন এটা অনেক বড় গর্বের বিষয় আমার জন্য।  

প্রশ্ন: খেলার বাইরে আর কী কী করতে পছন্দ করেন? 
মাবিয়া: ঘুরতে পছন্দ করি। আর একটু-আধটু রান্না করতে পারি (হাসি)।  

প্রশ্ন: বিয়ে করছেন কবে? 
মাবিয়া: আবার যখন বড় কোনো ইভেন্টে স্বর্ণপদক জিততে পারবো, তারপর ভেবে দেখবো।  

প্রশ্ন: আপনার বড় কোনো ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা বলুন।
মাবিয়া: যদি আমি ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠিত মানুষ হতে পারি, আর যদি আমার আর্থিক অবস্থা ভাল হয়, তাহলে এতিম শিশুদের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে চাই।  

প্রশ্ন: আপনি তো মডেলিং করেছিলেন...
মাবিয়া: হ্যাঁ, দুটো টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে কাজ করেছিলাম। আসলে ওটা আমার জায়গা নয়। তবে শখের বশে হয়তো করতেও পারি, কিন্তু পেশা হিসেবে নয়।

প্রশ্ন: আপনাকে ধন্যবাদ।
মাবিয়া: আপনাকেও ধন্যবাদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১৮

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।