ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ক্রিকেট

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মুশফিকের ১৩ বছর

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৩ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৮
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মুশফিকের ১৩ বছর মুশফিকুর রহিম। ছবি-সংগৃহীত

ঢাকা: বয়সটা তখন মাত্র ১৬। ছোটখাটো গড়নের হওয়ায় বয়সটা আরও কমই মনে হতো। সেই ২০০৫ সালের ২৬ মে এক তরুণ উইকেটকিপার ব্যাটসম্যানের নামের বীজ বপন হয় বাংলাদেশ ক্রিকেটে। সেই বীজ আজ হয়েছে মহীরুহ।

শনিবার (২৬ মে) আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৩ বছর পূর্তি হলো মুশফিকুর রহিমের। এই দীর্ঘ যাত্রায় পাশে পেয়েছেন বাংলাদেশের সমর্থকদের।

তাই তাদের ধন্যবাদ দিতে ভোলেননি মুশফিক।

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের ভ্যারিফাইড পেজে তিনি লিখেছেন, “বিশ্বাস করতে পারছি না ১৩ বছর ধরে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছি। কিভাবে সময় উড়ে চলে। এই দিনটি আমাকে সর্বদা মনে করায়, বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে এদিনেই প্রথম জার্সি গায়ে চড়িয়েছিলাম। সব কিছুর জন্য আলহামদুলিল্লাহ। এই পবিত্র রমজান মাসে আল্লাহ সবার আশা পূর্ণ করুক। সবাইকে ধন্যবাদ। আমাদের জন্য দোয়া করবেন। সবাইকে ভালোবাসি। ”

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে দেখেছেন অনেক উত্থান-পতন। তবে ভেঙে পরেননি কখনো। আর তার এই লেগে থাকা স্বাভাবটিই তাকে করেছে আরও অভিজ্ঞ। ২০০৫ সালে ইংল্যান্ড সফরের সবচেয়ে বড় চমকের নাম ছিল মুশফিক। নর্দাম্পটনশায়ারের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে অপরাজিত ১১৫ রানের এক ইনিংস দিয়েই চমকে দেওয়ার শুরু।

মাত্র ১৬ বছরের একটা ছেলের কাছ থেকে এমন দুর্দান্ত পাফরম্যান্সের খবর উঠে আসে ইংলিশ মিডিয়াতেও। স্কোয়াডে জায়গা করে নেন দ্বিতীয় উইকেটকিপার হিসেবে। তবে ২৬ মে লর্ডসের প্রথম টেস্টে তার অভিষেক হয় একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে!

মাঠের মুশফিকের একাগ্রতার অনেকটাই এসেছে তার পরিবার থেকে। সম্ভ্রান্ত এক পরিবারের ছেলে তিনি। ক্যারিয়ারের শুরুটা রাজসিক না হলেও, নিজের ক্যারিয়ারকে রাজকীয় করতে কখনো লক্ষ্যচ্যুত হননি তিনি। লেগে থেকেছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সঙ্গে জড়িত সবাই এক বাক্যে স্বীকার করেন, দলের মধ্যে সবচেয়ে একাগ্রতা মুশফিকের। তিনিই সবচেয়ে পরিশ্রমী।

বগুড়ার স্থানীয় একটি ক্রীড়াচক্রে ক্রিকেটে হাতেখড়ি। পরে বিকেএসপিতে ভর্তি হন। ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ে সফর দিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ার শুরু হয় তার। এই সিরিকেই মুশফিক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করেন এবং ২০০৭ এর বিশ্বকাপে নিজের নাম স্থায়ী করেন। একই বছর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় টেস্টে ৮০ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংস খেলেন মুশফিক। ২০১০ সালের ২১ জানুয়ারি ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজের ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি পেয়ে যান।

২০১১ সাল থেকে বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন শুরু করেন মুশফিক। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এশিয়া কাপে নিজেদের সেরা সাফল্য দেখায় এবং রানার্সআপ হয়। প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরি আসে মুশফিকের ব্যাট থেকে। মুশফিক ৮ম উইকেট রক্ষক যিনি টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন এবং ৯ম ব্যাটসম্যান যিনি টেস্টে ৬ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন।

 

শুধু খেলাধুলায়ই নয়, পড়াশুনাতেও বরাবরই মনোযোগী। নানাবিধ ব্যাস্ততার মাঝেও তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে সম্মানজনক ফলাফল নিয়ে পড়াশোনা শেষ করেন।

২০১৪ সালে জান্নাতুল কিফায়াত মন্ডির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন মুশফিক। ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তাদের ঘর আলো করে আসে প্রথম সন্তান।

২০১৭ সালে টেস্ট অধিনাকত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় তাকে। তবে তার অভিজ্ঞতা ও দূরদর্শিতায় বাংলাদেশ দল পাচ্ছে সাফল্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৮

এমকেএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।