ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ক্রিকেট

ইতিহাস গড়ার হাতছানি নিয়ে ভারত বধে নামছে টাইগাররা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১৮
ইতিহাস গড়ার হাতছানি নিয়ে ভারত বধে নামছে টাইগাররা ত্রিদেশীয় টি-২০ সিরিজের ফাইনালে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত / ছবি: সংগৃহীত

উজ্জীবিত বাংলাদেশের সামনে প্রথমবারের মতো ত্রিদেশীয় সিরিজ জয়ের হাতছানি! কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ভারত বধ করতে পারলেই প্রাপ্তির খাতায় নতুন ইতিহাস যোগ করবে লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। ক্রিকেট বিশ্ব দেখবে আরেকটি ‘নাগিন নাচ’।

টি-টোয়েন্টিতে এখনো ভারতকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। সাতবারের মুখোমুখি লড়াইয়ে প্রতিবারই সঙ্গী হয়েছে হতাশা।

কয়েকটি ম্যাচে জয়ের কাছাকাছি গিয়েও আক্ষেপে পুড়তে হয়। সবশেষ চলমান ট্রাইনেশন টি-২০ সিরিজে দ্বিতীয়বারের দেখাতেও জেগেছিল জয়ের সম্ভাবনা (১৭৭ তাড়া করে শেষদিকে রান তুলতে না পেরে ১৭ রানে হার)।

রোববারের (১৮ মার্চ) হাইভোল্টেজ ফাইনালের মধ্য দিয়ে ফের একে অপরকে চ্যালেঞ্জ জানাবে দু’দল। খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়।

উদ্বোধনী ম্যাচ লঙ্কানদের কাছে হারের পর টানা তিন জয়ে ফাইনালে ওঠে কোহলি-ধোনিবিহীন ভারত। স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে দুই ম্যাচেই হারিয়ে শিরোপা নির্ধারণীতে পা রাখে টিম বাংলাদেশ।

ছবি: সংগৃহীতউত্তেজনায় ঠাসা শুক্রবারের (১৬ মার্চ) ফাইনাল নির্ধারণী ম্যাচে ২ উইকেট ও ১ বল হাতে রেখে ১৬০ রানের লক্ষ্য টপকে উল্লাসে মাতে টাইগাররা। ১৮ বলে ৪৩ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংসে দলকে ফাইনালের মঞ্চে নিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ‘নো’ বল ইস্যুতে মাঠ, মাঠের বাইরের উত্তাপের পর নাগিন নৃত্যে শ্বাসরুদ্ধকর রোমাঞ্চকর জয় উদযাপনে মাতে পুরো দল।

লড়াকু পারফরম্যান্সে ফাইনাল সামনে রেখে পুরো বাংলাদেশ দলের মনোবল এখন চাঙা। ভারতের সামনে বাংলাদেশকে টানা তিন ম্যাচে হারিয়ে শিরোপা জেতার সুযোগ। পাল্টা জবাব দিয়ে ট্রফি উঁচিয়ে ধরার স্বপ্ন দেখছেন সাকিব-তামিম-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা। সব মিলিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এক ফাইনাল উপভোগ করবেন দর্শকরা। দু’দলই যে চ্যাম্পিয়ন ভিন্ন কিছু ভাবছে না।

ফাইনালের মঞ্চে চাপমুক্ত থেকে নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটাই খেলতে চান বাংলাদেশ দলপতি সাকিব আল হাসান, ‘আমরা ফাইনাল নিয়ে আলোচনা করিনি, তাই চাপ নিয়ে চিন্তা করছি না। আমি মনে করি, সবচেয়ে বড় উপলব্ধি হচ্ছে ম্যাচটা আমরা কিভাবে কতদূর পরিচালনা করতে পারি। যদি আপনি চাপ মনে করেন, এটা চাপের। যদি আমি প্রেসার নিয়ে চিন্তা না করেন, এটা প্রেসার নয়। আমি নিশ্চিত প্রত্যেকে শান্ত এবং যদি আমরা কালকের ম্যাচ পর্যন্ত এভাবে থাকতে পারি, এটা আমাদের জন্য ভালো হবে। ’

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলে দলকে ফাইনালে তোলার পর মাহমুদউল্লাহ / ছবি: সংগৃহীত‘আমরা বেশিদূর চিন্তা করছি না। আমাদের শান্ত এবং খোলা মনে থাকতে হবে। টি-টোয়েন্টিতে ভালো করতে হলে মানসিকভাবে চিন্তামুক্ত থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি কেউ কোনো প্রেসার নিচ্ছে না। যদি ভারতের বিপক্ষে বড় ফাইনাল চিন্তা করি, এটা হবে চাপের। বরং, ব্যাট ও বলের লড়াই চিন্তা করা যাক। ’-যোগ করেন সাকিব।

ভারতের শক্তিমত্তা নিয়ে সতর্ক সাকিব। কোনো ভুল করা চলবে না, ‘ভারতীয় ব্যাটসম্যান কি করতে পছন্দ করে সেই ধারণা আমাদের আছে। তারা বেশ অভিজ্ঞ, তাই আমাদের চেষ্টা থাকবে তারা যেন স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে না পারে। ম্যাচটা আমাদের ভালোভাবে শুরু করতে হবে এবং মোমেন্টামটা ধরে রাখতে হবে। ’

বাংলাদেশের লড়াকু মনোভাব নিয়ে যত ভয় ভারতের। শনিবার (১৭ মার্চ) ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসে তেমনটাই প্রকাশ করেন দিনেশ কার্তিক, ‘বিশেষ করে উপমহাদেশের কন্ডিশনে, বাংলাদেশ খুবই ভালো দল। লেগে থাকার মানসিকতার জন্য তারা পরিচিত। সত্যিই কঠিন চেষ্টা করে। এমন একটি টিম যারা টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়েছে খুব বেশি বছর হয়নি, সেখান থেকে ক্রিকেটের সব ফরমেটেই তারা এগিয়ে গেছে এবং ভালো করছে। ’

শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে ত্রিদেশীয় টি-২০ সিরিজের ফাইনাল নিশ্চিত করে নাগিন নাচে মাতোয়ারা বাংলাদেশ দল / ছবি: সংগৃহীতকাগজে-কলমে হয়তো এগিয়ে থাকবে ভারত। কিন্তু বাংলাদেশের কাছে হেরে গেলে যে সমর্থকদের সামনে লজ্জায় পড়তে হবে সেই ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছেন কার্তিক। তার কথায়, ‘পরিষ্কার করে বলা যাক, ভারত একটি ক্রিকেটীয় দেশ। যে সারির দল নিয়েই খেলি না কেন এখানে জয় প্রত্যাশিত থাকে। যখন আমরা বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলি এবং জিতি তখন এটা এমন হয় যে ‘ঠিক আছে, তোমরা বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতেছো’। ’

‘কিন্তু যদি আমরা হেরে যায় সবাই বলবে, ‘তোমরা বাংলাদেশের কাছে হেরেছো। এটা তোমরা কি করলে?’ আমি নিশ্চিত যে এমনটাই হবে। আমাদের অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেছে কয়েকজন খেলোয়াড়কে মিস করলেও গত এক বছরে দল যেভাবে খেলেছে আমরা ঠিক সেভাবেই খেলার দিকে চোখ রাখছি। ’-যোগ করেন কার্তিক।

বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, ১৭ মার্চ, ২০১৮
এমআরএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।