ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

ক্রিকেট

দুই টেস্টে বিশ্রামে সাকিব

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৭
দুই টেস্টে বিশ্রামে সাকিব ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম (ফাইল ফটো)

টি-টোয়েন্টি আসার পর আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে তারকাদের টেস্ট থেকে সাময়িক ছুটি কিংবা অবসরে চলে যাওয়ার অনেক ঘটনা আছে। অস্ট্রেলিয়ায় এটা বেশ পুরোনো রীতি। আর সদ্যই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভারতের ওয়ানডে স্কোয়াড থেকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে অশ্বিন-জাদেজাকে। এবার বাংলাদেশের ক্রিকেটেও এই চল শুরু হয়ে যাচ্ছে ‘বোধহয়’।

ক্রিকেটীয় চাপ বেড়ে যাওয়ায় আগামী ছয় মাস আর কোনো টেস্ট ম্যাচ খেলতে চাইছিলেন না সাকিব আল হাসান! বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার নিজে থেকেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কাছে এমন আবেদন করেছিলেন। তবে, সাকিবের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাকে ছয় মাস না, আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের প্রথম টেস্টে ছুটি দেওয়া হয়েছে।

বিসিবির ক্রিকেট অপারেসন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আমরা অনেক আলাপ-আলোচনা করেছি। আপাতত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ও দ্বিতীয় টেস্টে সাকিবকে রাখছি না। তবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে সে যদি খেলতে চায় আমরা তাকে নেব। সে আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। যদি সে চিন্তাভাবনা বদলায়, সে কারণে একটি বিকল্প উপায় আমরা রেখেছি। তবে সে আপাতত টেস্ট দলের সঙ্গে যাচ্ছে না। তার যদি ইচ্ছে হয় দ্বিতীয় টেস্টে খেলবে। ’

তাতে, শুধু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে নিশ্চিতভাবেই খেলবেন না সাকিব। টেস্ট দিয়েই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ। ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে প্রথম টেস্ট, দ্বিতীয় টেস্ট ৬ অক্টোবর থেকে। তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হবে এরপর। সীমিত ওভারের ম্যাচগুলোতে থাকবেন সাকিব। আকরামের মতে, ‘টেস্টে তার পারফরম্যান্স খুবই ভালো। মনে হয় না টেস্ট ক্রিকেট থেকে তার মন উঠে গেছে। ’

আগামী ছয় মাসে বাংলাদেশ খেলবে চারটি টেস্ট। দক্ষিণ আফ্রিকায় দুটি ও ঘরের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুটি। দেশের মাটিতে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শ্রীলঙ্কা সিরিজেই সাকিবকে দেখা যাবে।

সাকিব গত বৃহস্পতিবার বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কাছে অনুমোদনের ব্যাপারে জানিয়েছিলেন। শনিবার বিসিবি সভাপতি নিজ বাসায় বোর্ডের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন। তবে, রোববারও এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) বোর্ডের উচ্চ পর্যায়ের নীতি নির্ধারকদের এক বিশেষ বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

২০০৮ সালে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের দুটিতেই ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। তবে, ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে ঝলমলে ছিলেন সাকিব। প্রথম ম্যাচে পাঁচ উইকেট নেওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে নিয়েছিলেন ছয়টি উইকেট। ব্যাটিং কিংবা বোলিং দুই দিক থেকেই বাংলাদেশের মূল ভরসা সাকিব। ২০০৭ সালে অভিষেকের পর ৫১টি টেস্ট খেলেছেন সাকিব। তাকে ছাড়া বাংলাদেশ মাঠে নেমেছে মাত্র সাতবার। যে ৫১ টেস্টে মাঠে নেমেছেন ব্যাটে কিংবা বলে তাকে ছাড়াতে পারেননি কেউ। যে ৫১ টেস্ট খেলেছেন সাকিব, তাতে বাংলাদেশের বোলাররা উইকেট পেয়েছেন ৬৪৩টি, সাকিব একাই নিয়েছেন এর ১৮৮টি।  

ক্লান্তিজনিত অবসাদ আর নিজেকে উজ্জ্বীবিত করতেই আপাতত টেস্ট খেলতে চাইছেন না সদ্যই ৫০তম টেস্টের মাইলফলক পেরুনো সাকিব। অথচ চলতি বছর টেস্টে ব্যাটে-বলে সেরা ফর্মে আছেন। এরমধ্যেই ৭ টেস্টে ব্যাট হাতে করেছেন ৬৬৫ রান, যা এক পঞ্জিকাবর্ষে তার সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড। উইকেট নিয়েছেন ২৯টি। বছরের বাকি চারটি টেস্ট সাকিবের জন্য কেন চাপ হয়ে দাঁড়ালো তা বুঝতে পারছেন না কেউই! 

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৯ ঘণ্টা, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।