ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

নেই অ্যাম্বুলেন্স, ইলেকট্রনিক টাইমার-স্টার্টার পিস্তল

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৭ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৭
নেই অ্যাম্বুলেন্স, ইলেকট্রনিক টাইমার-স্টার্টার পিস্তল ছবি: শোয়েব মিথুন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

একাধিক সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী এনআরবি ব্যাংক ১৩তম জাতীয় সামার মিট অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতা। প্রথম দিনই সমালোচনার মুখে এই মেগা ইভেন্ট। জরুরি ইনজুরিতে হাসপাতালে নেওয়ার কাজে অ্যাথলেটদের জন্য সেখানে দেখা গেল না কোনো অ্যাম্বুলেন্স।

এবারের আসরে অচল ইলেকট্রনিক টাইমারে হ্যান্ড টাইমিংয়েই ভরসা। জাজদের সারিবদ্ধভাবে ট্র্যাকের পাশে বসে সময় নির্ধারণ করতে দেখা গেল।

একটি মেগা ইভেন্টে নেই অ্যাথলেটিকসের স্টার্টার পিস্তল! পিস্তলের বদলে দু’খণ্ড কাঠের শব্দে শুরু হয়েছে অ্যাথলেটিকসের মেগা ইভেন্টগুলো। অথচ অ্যাথলেটিক ফেডারেশনে চারটি পিস্তুল থাকলেও নতুন কমিটি তা বুঝে পায়নি। রহস্যজনকভাবে পিস্তল হারিয়ে যাওয়ায় থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছে ফেডারেশন।

গত মার্চে নতুন অ্যাডহক কমিটি দায়িত্ব নিয়ে শুরু করছে চ্যাম্পিয়নশিপের ১৩তম আসর। এ আসরে পুরুষ ও মহিলা গ্রুপে মোট ৩৬টি ইভেন্টে পদকের লড়াই হচ্ছে। বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশন অনুমোদিত সব জেলা-বিভাগ, শিক্ষাবোর্ড, সার্ভিসেস দল মিলিয়ে প্রতিযোগিতায় প্রায় ৬০০ জন অ্যাথলেট অংশ নিয়েছেন। ছবি: শোয়েব মিথুন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমশুক্রবার ও শনিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় হচ্ছে দেশের সেরা অ্যাথলেটদের বহু প্রতিক্ষীত এ টুর্নামেন্ট। অথচ তাদেরই কি না শঙ্কার মধ্যে নামতে হচ্ছে লাল ট্র্যাকের গণ্ডিতে। ইনজুরিতে পড়লে খুব দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাবার মতো কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। নেই কোনো অ্যাম্বুলেন্স। উপস্থিত মেডিকেল টিম সেবা দিতে ব্যর্থ হলে কি হবে ভেবে পাচ্ছেন না অংশ নেওয়া অ্যাথলেটরাও।

ট্র্যাকের খুব কাছ থেকেই দেখা গেল হাইজাম্পের ইভেন্টে প্রথম থেকেই দারুণ পারফর্ম করতে থাকা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অ্যাথলেট মাহফুজুর রহমানের নাক ফেটে রক্ত ঝরার দৃশ্য। অথচ সাংবাদিকসহ দর্শকরাও ধরে নিয়েছিলেন এই ইভেন্টে তিনিই প্রথম হবেন। নাক চেপে ধরে বসে থাকা এই অ্যাথলেট ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলেন। উপায় না দেখে বরফ চাইলেন। হইচই হলেও সেটি দিতে কেউ এগিয়ে আসলেন না।

এই ইভেন্টের প্রথমস্থান পাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা থাকলেও আর পেরে উঠেননি মাহফুজুর। শেষ হিটে তাকে দেখা গেল জাজদের কাছে দুই মিনিট সময় চেয়ে নিতে। সময় পেলেন, কিন্তু মনের অজানা ভয় আর নাকের গড়িয়ে পড়া রক্ত নিয়ে শেষ হিট পার করলেও ব্যর্থ হন সেই অ্যাথলেট। সতীর্থ সজীব হোসেনের কাছে (১.৯৫ মিটার) পদক হারাতে হয় দ্বিতীয় হওয়া মাহফুজকে (১.৯০ মিটার)। ছবি: শোয়েব মিথুন / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমঅ্যাথলেটদের এমন শঙ্কার মধ্যে শুরু হলেও এই প্রতিযোগিতায় কোনো অ্যাম্বুলেন্স রাখা হয়নি কেন, এ প্রসঙ্গে কথা বলেন মাঠে উপস্থিত থাকা যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী আরিফ খান জয়। তিনি জানালেন, ‘সত্যি বলতে এটা দুঃখজনক যে এখানে কোনো অ্যাম্বুলেন্স নেই। প্রতিবার সেটা ভাড়া করে নিয়ে আসা হয়। এবার নেই। তবে, এখানে দক্ষ মেডিকেল টিম রয়েছে। অ্যাথলেটিকসের জন্য অবশ্যই অ্যাম্বুলেন্স রাখা দরকার। সকালে এক অ্যাথলেট আহত হয়েছে। আমি তাকে নিজের গাড়িতে হাসাপাতালে পাঠিয়েছি। আমাদের এটা নিয়ে আরও ভাবা দরকার। ’

এদিকে, ২০১০ এসএ গেমসের পর থেকে ইলেকট্রনিক টাইমার অচল। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে ফাইলবন্দী ছিল অ্যাথলেটদের অন্যতম ঘরোয়া আসর জাতীয় সামার অ্যাথলেটিকস। বাংলাদেশ অ্যাথলেটিক ফেডারেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অনেক চেষ্টা করেও তারা ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ড ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে পারেননি। তবে আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপে হ্যান্ড-টাইমিং থাকবে না বলে নিশ্চয়তা দিয়েছেন তারা।

আছে ইভেন্ট চালানোর মতো পর্যাপ্ত অর্থের অভাব। ফেডারেশন সভাপতি এ এস এম আলী কবির জানান, ‘আমরা অ্যাথলেটদের আরো সুযোগ-সুবিধা দিতে চাই। কিন্তু তহবিল সংকটের কারণে পারছি না। আমরা স্পন্সরের কাছে বাড়তি টাকা চেয়েছিলাম, তারা যে টাকা দিচ্ছে তা দিয়ে কেবল সামার মিটই করা সম্ভব। এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক দেবে পাঁচ লাখ টাকা, বাকি আড়াই লাখ তহবিল থেকে খরচ হবে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, ২১ জুলাই, ২০১৭
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।