ঢাকা, বুধবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫

খেলা

লর্ডসে ‘১০৩’ রানই করতে চেয়েছি-তামিম

সেকান্দার আলী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০০৩ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১০

ঢাকা: হাতের চোটের কারণে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তামিম ইকবালের টেস্ট খেলা প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিলো। কোচ জেমি সিডন্স এবং অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের প্রেরণায় শেষে ঝুঁকি নেন জাতীয় দলের উদ্বোধনী এই ব্যাটসম্যান।

এরপরই একের-পর-এক চমক দেখান মারকুটে তামিম। লর্ডসের অনার্সবোর্ডে নাম লেখানোর পাশাপাশি পরপর দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেন। ইংল্যান্ড সফর শেষে বৃহস্পতিবার সকালে দেশে ফেরার পর বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডিকে এক সাক্ষাতকারে নিজের সাফল্যের কথা বলেছেন তামিম ইকবাল।

প্রশ্ন: তামিম সফরটা কেমন হলো?

তামিম: আমার দিক থেকে দেখলে খুবই ভালো। দুটো সেঞ্চুরি ও একটি হাফ সেঞ্চুরি করেছি। ইংল্যান্ডে গিয়ে সেঞ্চুরি করা সহজ নয়। বিশেষ করে আমাদের কন্ডিশন থেকে গিয়ে ইংল্যান্ডে সাফল্য পাওয়া অনেক বড় অর্জন। তবে দলের পারফরমেন্সই আসল। আমরা আরেকটু ভাল করলে আরো ভালো লাগতো।

প্রশ্ন: বাকিরা আপনাকে অনুসরণ করতে পারেনি কেন?

তামিম: পারেনি তা নয়। ইমরুল কায়েস এবং জুনায়েদ ভাল ব্যাটিং করেছে। পরপর দুই ইনিংসে তাদের হাফ সেঞ্চুরি আছে। দুঃখের বিষয় মিডলঅর্ডার এবং টেলএন্ডাররা রান পায়নি। এটাই আমাদের সমস্যা। আর সে কারণেই দুই টেস্টে ধারাবাহিক হওয়া সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে দ্বিতীয় টেস্ট হেরেছি বাজেভাবে।

প্রশ্ন: লর্ডসে সেঞ্চুরি করার স্বপ্ন কবে থেকে?

তামিম: ভাইয়ার (নাফিস ইকবাল) কাছে যখন প্রথম শুনি লর্ডসে সেঞ্চুরি পেলে অনার্সবোর্ডে নাম উঠে। সেই নাম কখনোই মোছা হয় না। সেই থেকে ক্রিকেটের তীর্থস্থান খ্যাত লর্ডসে সেঞ্চুরি করার ইচ্ছে।

প্রশ্ন: আমরা শুনেছি জেফ্রি বয়কটের উপর রেগে সেঞ্চুরি করেছেন?

তামিম: অনেকটা তাই। প্রথম টেস্টের তৃতীয় দিন সন্ধ্যায় টিভিতে দেখি বয়কট সাক্ষাতকারে বলছেন বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাস কেড়ে নেওয়া উচিৎ। ঠিক তখনই মনের মধ্যে জেদ চাপে দলের জন্য কিছু করার। কারণ ক্রিকেট আমাদের রুটি-রুজি। ক্রিকেটের কারণেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বাংলাদেশের পরিচয় বাড়ছে। টেস্ট কেড়ে নিলে আমরা খুব একটা ক্রিকেট খেলতে পাবো না। পরের দিন সফল হই।

প্রশ্ন: শুনেছি লর্ডসে কি একটা মজার ঘটনা আছে, বলবেন?

তামিম: লর্ডসে যে লুকআফটার করে তার নাম পিট। তিনিই বোর্ডে নাম লেখেন। ৫০ রান করার পর আমি তাঁকে মজা করে বলেছিলাম ৫০’র জন্য আরেকটা বোর্ড করা যায় না। পিট সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দেন তা হয় না। তুমি সেঞ্চুরি পেলে নাম তুলে দেব। এরপর পাশে দাঁড়ানো মুশফিককে (উইকেট কিপার মুশফিকুর রহিম) উদ্দেশ্য করে আমি বলেছিলাম ‘ফিফটিফাইভ হান্ড্রেড এন্ড থ্রি’। পরের দিন ঠিক ১০৩ রানই করি। সেঞ্চুরির পর পিটকে উদ্দেশ্য করেই বোর্ডে নাম লেখার ইশারা করেছিলাম। দারুণ লেগেছে।

প্রশ্ন: জাতীয় দলের প্রসঙ্গে আসি। আপনার কি মনে হয় বাংলাদেশ ম্যাচ জয়ের মতো অবস্থান তৈরি করতে পারছে?

তামিম: শুধু জয়ের কথা ভাবলেই হবে না। দেখেন দলগতভাবে আমরা অনেক উন্নতি করেছি। এবার ইংল্যান্ড সফরে আমাদের দুটি সেঞ্চুরি এবং ৫/৬ টি হাফ সেঞ্চুরি আছে। প্রথম টেস্ট পঞ্চমদিন পর্যন্ত গড়িয়েছে। জয় পেতে শুরু করলে দেখবেন ধারাবাহিক হয়ে গেছি।

প্রশ্ন: এশিয়া কাপ নিয়ে কি ভাবছেন?

তামিম: আমি আশাবাদি। নিশ্চিত শ্রীলঙ্কায় এশিয়া কাপে আমরা ভাল খেলবো। ওখান থেকেই হয়তো আমাদের সাফল্যের যাত্রা শুরু হতে পারে।

প্রশ্ন: বাংলাদেশের সমস্যা কোথায়?

তামিম: আমাদের প্রধান সমস্যা ব্যাটিংয়ে। একসঙ্গে কয়েকজন ব্যাটসম্যান রান করতে পারে না। এই দেখেন ইংল্যান্ড সফরে এবার টপঅর্ডার রান পেলো কিন্তু মিডলঅর্ডার এবং টেলএন্ডে রান আসেনি। একসঙ্গে অন্তত দুই জায়গায় রান করলে জয় পাওয়া সম্ভব। এছাড়া বোলিংয়েও প্রচুর উন্নতি করতে হবে।

প্রশ্ন: কোচ এই দিকটি নিয়ে কাজ করেন না?

তামিম: জেমি খুবই আন্তরিক। সব সময়ই বিষয়টি আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয়। রান করার জন্য কৌশল বাতলে দেয়। কিন্তু আমরা পারি না। আশা করি ধীরে ধীরে ওই সমস্যাও কেটে যাবে।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম.বিডি: আপনাকে ধন্যবাদ
তামিম: আপনাকেও ধন্যবাদ

বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৪৪৪ ঘ. ১০ জুন ২০১০
এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।