ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

ফুটবল

সিজারে চড়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল

ওয়ার্ল্ড কাপ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৫ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৪
সিজারে চড়ে কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: চিলির বিপক্ষে শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে টাইব্রেকারে জয়লাভ করে শিরোপা মঞ্চের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গেল ব্রাজিল। শনিবার রাতে বেলো হরিজোন্তের এস্তাদিও মিনেইরাও স্টেডিয়ামে ভাগ্যাহত চিলিকে ৩-২ গোলে (টাইব্রেকার) হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেছে তারা।

খেলার নির্ধারিত সময় ও অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত ১-১ গোলে লড়ে দুই দল।

নকআউট পর্বের এ খেলায় ম্যাচের ৮ মিনিটে পায়ে আঘাত পান আসরে চার গোল করা ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার নেইমার। স্বল্প সময় মাঠের বাইরে চিকিৎসা নিয়ে আবারও মাঠে ফেরেন বার্সেলোনার এই তারকা ফুটবলার।

ম্যাচের ১৩ মিনিটে গোলের সুযোগ পান চিলির প্রাণভোমরা খ্যাত আলেক্সিজ সানচেজ। তবে এই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারেননি বার্সেলোনার ২৫ বছর বয়সী এই তারকা। এর দুই মিনিট পরেই ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে পাওয়া ফ্রি ‍কিক থেকে নেইমারের শটটি রুখে দেন চিলির গোলরক্ষক ক্লদিও ব্রাভো।

ম্যাচের ১৮ মিনিটে ইচ্ছাকৃত হাত লাগানোর অপরাধে চিলির মেনাকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। একইসময়ে কর্নার থেকে পাওয়া বলে সিলভার হেড থেকে পায়ে আলতো ছোঁয়ায় চিলির জালে বল জড়িয়ে দেন লুইজ। বাম পাশ থেকে এই কর্নার কিকটি নেন নেইমার।

ম্যাচের ২৭ মিনিটে আবারও গোলের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে ব্রাজিল। নেইমারের একক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায় চিলির ডি-বক্সে কোনো সতীর্থ না থাকায়। এর চার মিনিট পরে নেইমারকে আবারও ‍অবৈধভাবে আঘাত করেন ভিদাল।

ম্যাচের ৩৩ মিনিটে সানচেজের দুর্দান্ত গোলে সমতায় ফেরে চিলি। ভিদাল-ভার্গাসের কাছ থেকে পাওয়া বল অসাধারণ দক্ষতায় সানচেজ ব্রাজিলের জালে জড়িয়ে দেন। এর চার মিনিট পর ম্যাচের ৩৭ মিনিটে নেইমারের কর্নার কিক থেকে অস্কার-সিলভারা গোল করতে ব্যর্থ হন। তার আগে নেইমারের একটি হেড পোস্টবারের পাশ দিয়ে চলে যায়।

ম্যাচের ৪০ মিনিটে আবারও গোল করতে ব্যর্থ হন ফ্রেড। নেইমারের পাস থেকে বল পাওয়া বল চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেননি তিনি। ফাঁকায় বল পেয়েও ফ্রেড গোলবারের উপর দিয়ে বল পাঠিয়ে দেন মাঠের বাইরে।

প্রথমার্ধের ৪৩ মিনিটে ডি-বক্সের অনেক বাইরে থেকে আলভেজের নেওয়া একটি শট ঠেকিয়ে গোলের হাত থেকে দলকে রক্ষা করেন চিলির গোলরক্ষক ব্রাভো। এর দুই মিনিট পর আবারও জোরালো শটের অভাবে গোলের সুযোগ নষ্ট করে ব্রাজিল।

প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পায় চিলি। সানচেজের ক্রস থেকে বল পেয়ে অ্যারারাসগুইজ সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। দু’দলই গোল না পাওয়ার ফলে প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ গোলে।

প্রথমার্ধে ৫৭ শতাংশ সময় চিলির পায়ে বল ছিল।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে যায় দুই দল। ম্যাচের ৪৯ মিনিটে ব্রাজিলের ফার্নাদিনহোর একটি জোরালো শট বারের পাশ ঘেষে চলে যায়। তার শটটি ছিল গোলবারের ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া।

ম্যাচের ৫৫ মিনিটে হাল্কের দেওয়া গোলটি রেফারি বাতিল করে দেন। গোলবারে শটটি নেওয়ার আগে হাল্কের হাতে বল লাগে। এরপরও তিনি গোল উদযাপন করায় ফিফার নতুন অফিসিয়াল নিয়ম অনুযায়ী রেফারি তাকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে সতর্ক করে দেন।

ম্যাচের ৬৫ মিনিটে সানচেজের দক্ষ একটি ক্রস থেকে আবারও অ্যারারাসগুইজ জুলিও সিজারকে ফাঁকি দিতে পারেননি। ছোট পাসের এই অসাধারণ পারফর্ম থেকে গোল না পাওয়ায় বলা চলে চিলির জন্য হতাশার একটি মুহূর্ত।

ম্যাচের ৭৪ মিনিটে হাল্কের ক্রস থেকে পায়ে বল লাগাতে না পারলে গোলের একটি সহজ সুযোগ নষ্ট করে ৬৪ মিনিটে ফ্রেডের বদলি হিসেবে মাঠে নামা জো। ৮০ মিনিটে আলভেজের বাড়িয়ে দেয়া বল হেড করে জালে জড়াতে পারেননি নেইমার। সরাসরি ব্রাভোর হাতে বল তুলে দেন নেইমার।

৮৪ মিনিটে হাল্ক-জোয়ের আরেকটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দেন ব্রাভো। নিশ্চিত গোলের হাত থেকে দারুণভাবে দলকে রক্ষা করেন চিলির হয়ে ৮২ ম্যাচ খেলা বার্সেলোনায় চুক্তি করা নতুন এই গোলকিপার।

দ্বিতীয়ার্ধের খেলায় আর কোনো গোল না হওয়ায় অতিরিক্ত সময়ে খেলা মাঠে গড়ায়।

অতিরিক্ত সময়ের ৬ মিনিটে ব্রাভোকে বল ধরতে বাধা দেওয়ায় এবং আঘাত করায় ব্রাজিলের জো’কে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি।

অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের ১২ মিনিটে অস্কারের হেড থেকে বল ব্রাভোর হাতে জমা পড়লে খেলা সমতায় থাকে। তবে এক মিনিট পরেই হাল্কের একটি জোরালো শটকে প্রতিহত করে দেন ব্রাজিলের হতাশার কারণ গোলরক্ষক ব্রাভো।

১৫ মিনিটে সানচেজকে ফেলে দেওয়ার কারণে আলভেজকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি।

কোনো দল গোলের দেখা না পেলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে। দ্বিতীয়ার্ধেও কোনো গোল না হলে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। তবে খেলা শেষ হওয়ার কয়েক সেকেন্ড আগে ম্যাচের উত্তেজনাপূর্ণ মুহূর্ত পার করে দুই দল।

চিলির পিনিলার একটি জোরালো শট ব্রাজিলের গোলবারে লেগে ফিরে আসে। পাল্টা আক্রমণে ব্রাজিলের রামিরেস গোল করতে পারেননি।

দু’দলের ভাগ্য নির্ধারণে শুরু হয় টাইব্রেকার’র লড়াই।

শ্বাসরুদ্ধকর টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে জয় তুলে নেয় ব্রাজিল। এই জয়ে ব্রাজিলের ত্রাতা ছিলেন গোলরক্ষক জুলিও সিজার। তিনি চিলিয়ানদের দু’টি পেনাল্টি শট‌ই রুখে দেন। এই জয়ের জন্য ব্রাজিল ধন্যবাদ দিতে পারে পেনাল্টি মিস করা সানচেজসহ চিলিয়ানদের। এখন ভাগ্যকে দুষে দেশের ফ্লাইট ধরতে হবে চিলির ফুটবলারদের।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৫ ঘণ্টা, জুন ২৯, ২০১৪/০১১৫ ঘণ্টা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।