ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

মালয়েশিয়া

বাংলাদেশ? গো টু ইমিগ্রেশন অফিস!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৮
বাংলাদেশ? গো টু ইমিগ্রেশন অফিস! কুয়ালালামপুর বিমানবন্দর। ছবি: বাংলানিউজ

কুয়ালালামপুর থেকে: রাতভর প্লেন জার্নিটা বেশ ছিলো, দূরে অনেক নিচে অন্ধকারের বুকে হঠাৎ হঠাৎ একেকটি শহর জেগে উঠছিলো তার আলোর ঝলকানি দিয়ে। 

শূন্যে ভেসে থাকা মহাপতঙ্গের পেটের ভিতর থেকে দূরবর্তী শহরগুলোর আলোর রেখা কখনো গলার হার, কানের দুল বা হাতের বালা আকৃতিতে জেগে উঠছিল মেঘের তলে।  

৩০/৩৫ হাজার ফুট উঁচু থেকে দেখা সেইসব আলোর রেখা বা জটলারা সবই যে একেকটি শহর বা আলো ঝলমলে নগরী তা ভালোই বুঝছিলাম।

কিন্তু কোনটা কোন শহর নাম তার জানা নেই। নিচে দেখা ঝকমকে আলোর সমারোহ দেখিয়ে কেবিন ক্রুর কাছে জানতে চাইলাম এটা কোন শহর?

 তিনি সহাস্যে বললেন, আমি জানি না, পাইলট বলতে পারবেন। অগত্যা সুন্দরিকে বলতে বাধ্যই হলাম, তাহলে পাইলটের কাছ থেকেই একটু জেনে আসুন প্লিজ! 

হাসি মুখে ফিরে এসে বললেন, মিয়ানমারের শহর। ফের প্রশ্ন করলাম, নেপিদো? তিনি হাসিমুখে অসহায় ভঙ্গি করলেন, বুঝলাম শহরের নাম না শুনেই এসেছেন।  

প্লেন থেকে শহরের আলোর রেখা-ছবি-বাংলানিউজএভাবে আরও প্রায় ঘণ্টাখানেক পরে ছেঁড়া ছেঁড়া সাদা মেঘের ভিড় ঢেলে রাতের বুকে জেগে উঠলো আলোয় ঠাসা এক নগরী। আবার ডেকে জিজ্ঞেস করলাম সেই কেবিন ক্রুকে, এটা কোনটা? তিনি এবার নিশ্চিত করে জানালেন, ব্যাংকক!

এভাবে রাতভর জানা-অজানা নানা শহর-গ্রাম, পাহাড় আর সমুদ্রের উপর দিয়ে ভোরবেলায় আমাদের প্লেন এসে নামলো কুয়ালালামপুর এয়ারপোর্টে। প্লেনভর্তি শ'দেড়েক যাত্রী বেশিরভাগ খেয়েদেয়ে ঘুমে তলিয়ে গেলেও প্রথমবার মালয়েশিয়াগামী আমরা চোখে বিস্ময় নিয়ে জেগেই ছিলাম সারারাত।  

রাতের ভালোলাগা, আনন্দঘন আড্ডার আবেশ কাটেনি তখনও। বিশাল আকৃতির কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরের শাটল ট্রেনে চড়ে গল্পে মশগুল আমরা যেন জ্ঞান ফিরে পাই ইমিগ্রেশন কাউন্টারে গিয়ে! হাতের ছোট্ট ব্যাগ থেকে পাসপোর্ট বের করার আগ পর্যন্ত ইমিগ্রেশন অফিসার বেশ আগ্রহী হয়েই দেখছিলেন। যেই না পাসপোর্ট বের করেছি সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলেন, বাংলাদেশ? গো টু ইমিগ্রেশন অফিস।

একের পর এক কাউন্টার ফেলে ইমিগ্রেশন অফিসের দিকে পায়ে হেঁটে যেতে যেতে দেখলাম অন্য দেশের যাত্রীরা কাউন্টারেই দিব্যি ইমিগ্রেশনের কাজ সারছে। তাই দেখে শেষদিকের কাউন্টারের দিকে একটু এগুতেই এক কর্মকর্তা বলে উঠলেন, নো স্যার, ইমিগ্রেশন অফিস। বুঝতে আর বাকি রইলো না যে, সব বাংলাদেশি ট্যুরিস্টের জন্যই রয়েছে তাদের এই বিশেষ আতিথেয়তা।

অবশেষে ইমিগ্রেশন অফিসে গিয়ে প্রায় ঘণ্টা দেড়েক বসে থেকে গোটা কয়েক মামুলি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে মন্দের ভালোয় পার পেলাম আমরা পাঁচজন। তবে কানের ভিতর রয়ে গেলো- বাংলাদেশ? গো টু ইমিগ্রেশন অফিস!

বাংলাদেশ সময়: ১০১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৮
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।