ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

থাইল্যান্ড

পর্যটকদের সেবা দিয়েই থাইল্যান্ডে ভাগ্য বদলেছে আলমের

জাহিদুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৭
পর্যটকদের সেবা দিয়েই থাইল্যান্ডে ভাগ্য বদলেছে আলমের এবি এম খোরশেদ আলম, ছবি: সংগৃহীত

পাতায়া (থাইল্যান্ড) থেকে: নানা দেশের নানা ধরনের পর্যটক নিয়ে তার কারবার। তবে বাংলাদেশি পর্যটক হলে ভিন্নকথা। দেশের মানুষ মানেই তার কাছে প্রিয় স্বজন। যার কথা বলা হচ্ছে তিনি হলেন- ‘এ বি এম গ্রুপ’র প্রতিষ্ঠাতা এবি এম খোরশেদ আলম (৩৪)।

তিনি থাকেন দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশ থাইল্যান্ডের অন্যতম পর্যটন এলাকা পাতায়ায়। সেখানে নিজের নামের সঙ্গে মিল রেখেই তার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের নামকরণ করেছেন ‘এ বি এম গ্রুপ’।

সেই প্রতিষ্ঠানের অধীনেই ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস ছাড়াও জমজমাট গেস্ট হাউস আর রেস্টুরেন্টের ব্যবসা। মাত্র বছর দুয়েক আগে এদেশে পাড়ি দিয়ে কী করে সম্ভব এতো সফলতার?

প্রথমত সেবা, দ্বিতীয়তা সততা আর আন্তরিকতা- একগাল হেসে এমনটাই জবাব দিলেন তিনি। কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার আজবপুর গ্রামের সন্তান এ বি এম খোরশেদ আলম। বাবা মৃত আলহাজ আব্দুর রহমান। সাত ভাই দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট খোরশেদ আলম প্রায় ১৫ বছর ধরে প্রবাসে।

ভাগ্য পরিবর্তনের প্রত্যাশায় ২০০০ সালে ওমানে পাড়ি জমানোর মাধ্যমে শুরু হয় তার প্রবাস জীবন। সেখানে বছর দেড়েক কাজ করেই পাড়ি জমান দুবাই। প্রথমে একটি শেখ পরিবারের তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে কাজ করেন। পরে মিনি সুপার মার্কেটে টেইলার্স, টেক্সটাইল শপ ও ভিলা ব্যবসা করে সফলতার মুখ দেখেন তিনি।

২০১০ সালে সেখানে আর্থিক বিপর্যয় দেখা দিলে ফিরে যান দেশে। দেশে বছর দুয়েক থাকার পর ফের পাড়ি দেন ওমানে। এবার বছর দুয়েক অবস্থান করে তেমন সম্ভাবনা তৈরি না হওয়ায় ২০১৫ সালের মে মাসে চলে আসেন থাইল্যান্ডে। এখানেই এ বি এম গ্রুপের আওতায় গড়ে তোলেন রেস্ট হাউস, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম।

বাংলাদেশি হলে তার কাছে মেলে তালিকার চাইতেও বাড়তি সেবা। সব সময় চেষ্টা থাকে বাড়তি কিছু দেবার। ব্যস্ততার ফাঁকে অবসর পেলে দেশি পর্যটকদের নিয়ে নিজেই বেড়িয়ে পড়েন তিনি। লেটেস্ট মডেলের জিপ গাড়ি ড্রাইভ করে ঘুরিয়ে দেখান পর্যটকদের প্রিয় স্থান।

পাতায়ার দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সমুদ্র সৈকত সবাইকে আকৃষ্ট করে। বেশির ভাগ মানুষই পাতায়াকে চেনে ওয়ার্কিং স্ট্রিটসহ বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে। এখানকার পরতে-পরতে জড়িয়ে থাকা সৌন্দর্যের আকর্ষণে সারা বিশ্বের মানুষ এখানে ছুটে আসেন।

খোরশেদ আলম বলেন, আমরা এখানে এসেছি ব্যবসা করতে। আর সেটা অর্জন করতে হবে সেবা দিয়েই। বাড়তি একটু আন্তরিকতা আর সেবা দিয়ে কেবল স্বদেশিই নয়, ভিনদেশি পর্যটকদের মন জয় করা যায় সহজে।

তার ভাষায়, একবার যে আমার প্রতিষ্ঠানের সেবা নিয়েছেন এবং আমার আন্তরিকতা পেয়েছেন, তার স্মৃতিতে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

সার্ভিসের কারণেই দেশে-দেশে তার পরিচিতি। ফলে পর্যটন ব্যবসা সম্প্রসারিত করে প্রবাসে গড়ে তুলেছেন- গেস্ট হাউসসহ রেস্টুরেন্ট ব্যবসা- বলে জানান তিনি।

আমার লক্ষ্যই থাকে সাশ্রয়ী মূল্যে সেবা নিশ্চিত করা। অনেকেই জানেন না, এখানে সরাসরি না এসে ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেল এজেন্টের মাধ্যমে টিকিট কেনাটাই সাশ্রয়ী- বলেন খোরশেদ।

বাংলানিউজের পাঠকদের জন্যেও আকর্ষণীয় ছাড় আর ব্যতিক্রমী সেবার পসরা নিয়ে অপেক্ষায় এই প্রবাসী। বাংলানিউজের নামে সরাসরি এখানে কেউ এলে ফ্রি লাঞ্চসহ কোরাল আইল্যান্ড অথবা একদিনের ডে ট্যুরের ঘোষণা রয়েছে তার।

আমাদের স্বপ্ন আরও বহুদূরে যাওয়া। যেখানে আমাদের দিয়েই গোটা পাতায়া চিনবে বাংলাদেশকে। নিজেদের এভাবেই প্রস্তুত করছি- যোগ করেন খোরশেদ আলম।

পর্যটকদের সেবা দিয়েই মূলত ভাগ্য বদল করে ফেলেছেন তিনি। থাইল্যান্ডের পাতায়ায় খোরশেদ আলমই যেন এক টুকরো বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৭
টিআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।