ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

নিউইয়র্ক

২৬ মার্চকে স্বাধীনতা দিবস ঘোষণা করলো নিউইয়র্ক স্টেট

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৪ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৬
২৬ মার্চকে স্বাধীনতা দিবস ঘোষণা করলো নিউইয়র্ক স্টেট ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: মুক্তধারা ফাউন্ডেশন বাঙালির চেতনা মঞ্চসহ ১০৮টি সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে তাদের রজত জয়ন্তীর বাঁকে দাঁড়িযে আবারো অর্জন করলো আরো এক অবিস্মরণীয় গৌরবের ইতিহাস। এ যেন স্বর্নমুকুট পরিধান।

স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর এই প্রথমবারের মত নিউইয়র্ক স্টেট গভর্ণর অফিস কর্তৃক বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা দিবস ঘোষণা করেছে।

নিউইয়র্ক সিটি কম্পট্রলার, পাবলিক অ্যাডভোকেট, ইমিগ্রেশন অ্যাফেয়ার্সের কমিশনার, গর্ভণর প্রতিনিধি, সেনেটরসহ আমেরিকার মূলধারার শীর্ষস্থানীয় নির্বাচিত প্রতিনিধির অংশ্রগহণে স্বাধীনতা দিবসের প্যারেড অনুষ্ঠান ছিল আমেরিকায় বাঙালিদের বিজয়ের নতুন সোপান।

একে একে অর্জন করলো নিউইয়র্ক স্টেট গভর্ণমেন্ট থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি, আমেরিকার ডাক বিভাগ কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্মারক সীলমোহর প্রকাশ। ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ভাস্কর্য স্থাপনের ঘটনাতো একুশের আন্তর্জাতিকরণের এক নতুন ইতিহাস। ২০১৬ সালে এতগুলো অর্জন বাঙালির হৃদয়ের গভীরে বইয়ে দিয়েছে অনাবিল আনন্দধারা। উদ্ভাসিত করেছে জাতিকে নতুন জীবন বোধে উজ্জীবিত ও এক নতুন পথ নির্দেশ।

গত ২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা দিবসে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হল এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও নাগরিক সমাবেশ। বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা জ্যাকসন হাইটসের ডায়ভারসিটি প্লাজা থেকে শুরু করে কয়েক ব্লক রাস্তা প্রদক্ষিণ করে এই শোভাযাত্রা পিএস ৬৯ মিলনায়তনে পৌছালে এক আলোচনা সভায় গভর্ণরের প্রতিনিধি হার্শ পারেখ নিউইয়র্ক স্টেট কর্তৃক ২৬ মার্চকে ‘বাংলাদেশ ইন্ডিপেন্ডেট ডে’ এই ঘোষণা পাঠ করলে উপস্থিত শত শত বাঙালি আনন্দে-গর্বে জয় বাংলা -জয় বাংলা করে শ্লোগানে মিলায়তন মুখরিত হয়ে ওঠে।

২৬ মার্চ শনিবার দুপুর থেকেই দূর-দূরান্ত থেকে বাংলাদেশিরা বাংলাদেশের পতাকা রঙের পোশাক পরে, হাতে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে ডায়ভারসিটি প্রাজায় জড়ো হওয়া শুরু করে। দিনভর সেখানে চরে স্বাধীনতার কবিতা পাঠ ও স্বাধীনতার গান। ৪৫ জন কবি ৪৫টি কবিতা পড়েন বিভিন্ন পর্যায়ে। বিকেল পাঁচটার মধ্যে অনুষ্ঠান কেন্দ্রে এসে হাজির হন নিউইয়র্ক স্টেট ও সিটির বিভিন্ন শীর্ষ কর্মকর্তা।

এদের মধ্যে ছিলেন এবারই প্রথম নিউইয়র্ক সিটির কম্পট্রলার স্কট সিট্রংগার, যিনি শোভাযত্রার গ্রান্ড মার্শালের দায়িত্ব পালন করেন। শোভাযাত্রায় মার্শাল ছিলেন নিউইয়র্কের পাবলিক অ্যাডভোকেট ল্যাটিসিয়া জেমস, নিউইয়র্ক সিটি মেয়রের ইমিগ্রেশন এফয়ার্সের কমিশনার নিশা আগরওয়াল, নিউইয়র্ক স্টেট সেনেটর হোজে পেরাল্টা, নিউইয়র্ক সিটি পুলিশের কমান্ডার ইন চিফ ব্রায়ান সি হ্যানেসি, নিউইয়র্ক স্টেট গভর্ণর এন্ড্রু ক্যুমোর প্রতিনিধি হার্শ পারেখ, নিউইয়র্কের কনসাল জেনারেল শামীম আহসান ও নিউজার্সীর ব্রান্সউইক টাউনশীপের কাউন্সিলম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরন নবী।

পাবলিক অ্যাডভোকেট ল্যাটিশিয়া জেমস বলেন, আমি বাংলাদেশে যেতে চাই। তিনি বলেন, এই সিটিতে দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে বাংলাদেশিদের অবস্থান পঞ্চম। বাংলাদেশিরা অসম্ভব কর্মঠ, তারা তারা অতি অল্প সময়ে নিউইয়র্কের মত শহরে বড় একটা জায়গা করে নিয়েছেন।

স্টেট সেনেটর হোজে পেরাল্টা স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাংলাদেশিদের মূলধারায় রাজনীতি করার আহ্বান জানান। এর আগে সেনেটর মিলনায়তনে পৌছালে মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বজিত সাহা সেনেটরকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান, নিউইয়র্ক স্টেট সেনেটে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতির বিল উত্থাপন করার জন্য।

উল্লেখ্য, স্টেট সেনেটর হোজে পেরাল্টা ২০১৫ ও ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতির বিলটি মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের অনুরোধে উত্থাপন করে। পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের রেজ্যুলেশনটি সর্বসন্মতিক্রমে সেনেটে পাশ হয়।

নিউইয়র্ক স্টেটের গভর্ণর এন্ড্রু কুমোর বিশেষ প্রতিনিধি হার্শ পারেখ প্রথমে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন। তিনি বলেন, নিউইয়র্কে বাংলাদেশিরা দিন দিন বাড়ছে। স্বাধীনতা দিবসের মত অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে তারা তাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে আমাদের মধ্যে উপস্থাপন করে নিউইয়র্কের বহুজাতিক সংস্কৃতিকে আরো সমৃদ্ধ করছেন। তিনি তার বক্তব্য শেষে গভর্ণরের ঘোষণাপত্রটি পড়ে শোনান।

আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরুন নবী, সাংবাদিক লেখক হাসান ফেরদৌস, লেখক ফেরদৌস সাজেদীন, সাংবাদিক নিনি ওয়াহেদ, বাঙালির চেতনা মঞ্চের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বাদশা ও কমিউনিটি একটিভিস্ট ছাখাওয়াৎ আলী। এর আগে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এই অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক জামাল উদ্দীন হোসেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০০ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৬
বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad