ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

স্পেন

মেধা আর পরিশ্রম বদলে দিয়েছে বাবুলকে

জাহিদুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৫
মেধা আর পরিশ্রম বদলে দিয়েছে বাবুলকে ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ব্যাংকক (থাইল্যান্ড) থেকে: শূন্য হাতেই দেশ ছেড়েছিলেন তিনি। কাজ নিয়েছিলেন এক আত্মীয়ের দোকানে।

কঠোর অধ্যাবসায়ে কর্মচারী থেকে তিনিই এখন দোকান মালিক। কাজের অর্ডার আনতে তাকে ছুটে বেড়াতে হয় কখনো যুক্তরাষ্ট্র, কখনো যুক্তরাজ্য, কখনোবা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে।

তিনি বাবুল হোসেন। ব্যাংককে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের একজন। বছর জুড়েই ভিনদেশি পর্যটকদের আনাগোনা চলতে থাকে ব্যাংককের কাওসান রোডে। সেখানেই বাবুলের প্রতিষ্ঠান বাড্ডি টেইলার্স। ব্যস্ত দোকানটিতে তখনো ভিনদেশি পর্যটকদের ভিড়। কেউ নতুন অর্ডার দিচ্ছেন তো কেউ পোশাকের ডেলিভারি নিচ্ছেন।

কাওসান রোডে পা দিলেই নিত্য নতুন ডিজাইনের স্যুটের ছবি হাতে ডাক পড়ে। এরা সবাই ভারতীয়। বলতে গেলে সেখানে এই ব্যবসাটা জমিয়ে রেখেছে ভারতীয়রা।

আর তার মাঝেই তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যে দু’জন বাংলাদেশি তুলে ধরেছেন স্বদেশে বাংলাদেশের পতাকা। তাদের একজন বাবুল হোসেন। কেবল ভিনদেশি কেন, থাই নাগরিকদের পছন্দের দর্জির দোকানের তালিকায়ও বাংলাদেশিরা। তাদের সামনে রীতিমতো থাই বনে যান বাবুল! থাই ভাষায় অনর্গল কথা বলতেও জুড়ি নেই তার।

বাংলানিউজকে বাবুল জানান, প্রবাসে ভাষাটাই খুব গুরুত্বপূর্ণ। নিজেকে প্রকাশের মাধ্যমই তো ভাষা। আমি যদি ওদের ভাষা না বুঝি, আর ওরা যদি আমারটা না বোঝে তবে তো পরস্পরের কাছে অজানাই থাকতে হবে।

সাভারের কলমা এলাকার তরফ আলীর ছেলে বাবুল হোসেন। ১৯৯৯ সালে ভাগ্যান্বেষণে পাড়ি দেন থাইল্যান্ডে। ভরসা আদম আলী মীর। কাওসান রোডে জমজমাট একাধিক টেইলার্সের মালিক আদম আলী মীরের দোকান থেকেই উত্থান। প্রায় দশ বছর পর অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে এখন নিজেই দোকান মালিক।

বাবুল হোসেন বলেন, আদম আলী মীর সে সময় আমাকে আশ্রয় না দিলে আমি এতোদূর আসতে পারতাম না। তার কাছে আমি ঋণী। আজ যে আমি বিশ্বজুড়ে ব্যবসা করছি সবই তার বদৌলতে।

ছোটভাই বুলবুল আহমেদ মাসুম ব্যবসা দেখাশোনা করেন। আর বাবুল ছুটে বেড়ান দেশ বিদেশে নতুন নতুন ব্যবসার খোঁজে।

বাবুল বলেন, বিশ্বজুড়েই আমার কাস্টমার। কেউ টেলিফোনেই মাপ পাঠিয়ে দেয়। প্রস্তুত করে পৌঁছে দিই তার কাছে। কারণ এখানে উন্নত মানের কাপড়ে পোশাক তৈরি অন্যান্য দেশের তুলনায় খুবই সস্তা।

‘আমি অনেক কষ্ট করে আজ এখানে এসেছি। আমার লক্ষ্যই নিজের অবস্থানকে আরো মজবুত করা। সেই লক্ষ্যে এখনো দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছি। - যোগ করেন বাবুল হোসেন।

আসলে ব্যবসা বোঝাটাই গুরুত্বপূর্ণ। বুঝতে হয় মানুষের ফ্যাশন সচেতনতা। আর এখানে টিকেও থাকতে হয় তীব্র পরিবেশের মধ্য দিয়ে।

বাবা মা কে নিয়ে হজ করতে দেশে যাচ্ছেন বাবুল হোসেন। তিনি বলেন, দেশ তো আমার হৃদয়ে। প্রবাসে যেখানেই থাকি না কেন বাংলাদেশ সব সময় থাকে অন্তরে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১২ ঘণ্টা, আগস্ট ১৭, ২০১৫
জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।