ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

স্পেন

শোক-শ্রদ্ধায় থাইল্যান্ডে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ ‍বার্ষিকী পালিত

জাহিদুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৫
শোক-শ্রদ্ধায় থাইল্যান্ডে বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ ‍বার্ষিকী পালিত ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ব্যাংকক (থাইল্যান্ড) থেকে: শোক আর শ্রদ্ধায় থাইল্যান্ডে পালিত হয়েছে জাতির জনক  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪০তম শাহাদাৎ বার্ষিকী।

জাতীয় শোক দিবসে ব্যাংককস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় বিশেষ মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন থাইল্যান্ডে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্য ছাড়াও দূতাবাসের কর্মকর্তারা।

জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিনের কর্মসূচি। পতাকা অর্ধনমিত করেন ব্যাংককে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম। এছাড়াও জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়েও শ্রদ্ধা জানান তিনি।

পরে মিলাদ মাহফিল শেষে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের নিহত সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়।

আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, রক্তঝড়া ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির জন্য শোকের মাস। বেদনাবিধুর এই মাসে জাতি হারিয়েছে তার পিতাকে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কাল রাত্রে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা ঘাতকের নৃশংস বুলেটে শাহাদাৎ বরণ করেন। বাঙালি জাতির ইতিহাসে এটি একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়, পৃথিবীর বুকে সৃষ্ট একটি অমানবিক বিরল ঘটনা। ১৫ আগস্টে বাঙালি জাতি হারিয়েছিল একজন মহান জনদরদী, সংবেদনশীল, বলিষ্ঠ ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতাকে।
 
তিনি আরও বলেন, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর অবদান অপরিসীম। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালি জাতি অর্জন করে বহু কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-চেতনায় সবসময় কাজ করত বাংলা ভাষা, বাঙালি, বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, নিঃস্বার্থ, ত্যাগী ও মানবদরদী চিন্তা-চেতনার বিমূর্ত প্রতীক।  

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের সাথে সু-প্রতিবেশী সুলভ নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করে  আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশকে একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সমুজ্জ্বল করে চলেছেন তিনি। বঙ্গবন্ধু ১৯৭২-১৯৭৫ সালে একজন বিচক্ষণ রাস্ট্রনায়ক হিসেবে তার কূটনৈতিক উদ্যোগে বাংলাদেশের জন্য জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন, কমনওয়েলথ এবং ওআইসি সদস্য পদ অর্জন নিশ্চিত করেছিলেন। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘে বাংলাদেশের সদস্যপদ অর্জন শুধু নিশ্চিতই করেননি জাতিসংঘে বাংলা ভাষায় দেওয়া প্রথম বক্তৃতায় বিশ্ব শান্তি, উন্নয়ন ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
 
শোকাবহ এই ১৫ আগস্টে থাইল্যান্ড এবং কম্বোডিয়ায় বসবাসরত সকল বাংলাদেশিদের প্রতি তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন, জাতীয় শোক দিবসে জাতির পিতাকে হারানোর শোককে আমাদের অনুপ্রেরণা, জাতীয় আত্মবিশ্বাস ও শক্তিতে রূপান্তরিত করি। বঙ্গবন্ধু যেমন নিঃস্বার্থভাবে দেশ ও দেশের মানুষকে ভালবাসতেন ঠিক তার মতো বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষকে ভালোবাসার নতুন প্রত্যয় নেই। জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার।

প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, আসুন, নিজ নিজ অবস্থান থেকে সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বঙ্গবন্ধুর মহান আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন করে উদ্বুদ্ধ হই। বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতিতে অনুপ্রাণিত হয়ে আসুন বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ ও বাঙালির মাথা ও মর্যাদা উঁচু রাখার দৃঢ় প্রত্যয় নেই। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ, একটি অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা একযোগে কাজ  করে যাই।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩৬ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৫
জেডআর/এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।