ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

কারও শর্ত মেনে নয়, নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৮
কারও শর্ত মেনে নয়, নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন ওবায়দুল কাদের। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ চারটি শর্ত পূরণ হলে আগামী নির্বাচন হতে পারে- বিএনপিপন্থি বুদ্ধিজীবী ড. এমাজউদ্দীন আহমদের এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কারও কোনো শর্ত মেনে আগামী নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী।

রোববার (২২ জুলাই) বেলা সোয়া ১১টার দিকে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।  

সাম্প্রতিককালের বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের।

শনিবার (২১ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, চারটি শর্ত পূরণ হলে আগামী নির্বাচন হতে পারে। প্রথমত, বিএনপির চেয়ারপারসনসহ দলের ২০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে যে ৭৮ হাজার মামলা রয়েছে সেগুলো প্রত্যাহার করতে হবে; দ্বিতীয়ত, নির্বাচনের তফসিলের আগে চলমান জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে; তৃতীয়ত, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী মিলে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করবে, এতে বৃহত্তম বিরোধীদল হিসেবে বিএনপিকে পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়সহ ৩-৫টি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিতে হবে এবং চতুর্থত, প্রার্থীরা যেন সব ভোটারের কাছে ভোট চাইতে পারেন, সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

এসবের জবাবে ওবায়দুল কাদের স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কারও কোনো শর্ত মেনে আগামী নির্বাচন হবে না। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। এ নিয়ে কারো সঙ্গে কোনো সংলাপেরও প্রয়োজন নেই বলে সরকার মনে করছে। দেশে এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যে সংলাপ করতে হবে।

বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে দলটির অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সভা-সমাবেশ করছে, আগামীতেও রাজনৈতিক দলগুলো সভা-সমাবেশ করবে, এ ব্যাপারে কেউ অনুমতি চাইলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে।

চলতি বছরের অক্টোবরে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, অক্টোবরের যে কোনো সময়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন হবে। সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলো নিয়েই এ সরকার গঠন হবে। অন্য কাউকে রাখার কোনো সুযোগ নেই। গত নির্বাচনের আগে নির্বাচনকালিন সরকারে তাদের (বিএনপি) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়সহ কয়েকটি মন্ত্রণালয় নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। এবার সেই সুযোগ নেই।  

নির্বাচন নিয়ে বিএনপির দৃষ্টিভঙ্গি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি এতোদিন বলেছে, (কারাবন্দি) খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচনে যাবে না, এখন এক কাঠি বাড়িয়ে বলছে, নির্বাচন তারা প্রতিহত করবে। এতে আমরা নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র এবং নাশকতার আশঙ্কা করছি। তবে আমরা জনগণকে নিয়ে এটা প্রতিহত করবো।

এক প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন করা বিএনপির অধিকার। সরকার কেন তাদের নির্বাচনে আসার জন্য অনুনয় বিনয় করবে। বিএনপি নির্বাচনে না এলে সংবিধান, গণতন্ত্র কী থেমে থাকবে। নির্বাচন প্রতিহত করতে ২০১৪ সালে যা ঘটেছে বাংলাদেশে তা আর ঘটবে না।  

‘গণতন্ত্র রক্ষা করার নামে তারা যে ভয়াবহতা ঘটিয়েছে, যা আমরা দেখেছি সেটা আর হবে না। ষড়যন্ত্র এখনও হচ্ছে দেশে, বিদেশে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। লর্ড কারলাইলকে ভারতে এনে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নষ্ট করার ষড়যন্ত্র করেছিল। ’

রাজনৈতিক দলের সভা, সমাবেশ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, কর্নেল (অব.) অলি, মেজর (অব.) মান্নান আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন তারা সভা, সমাবেশে করবেন। সভা, সমাবেশে করায় কোনো সমস্যা নেই। তবে সভা, সমাবেশের নামে কোনো নাশকতার আশঙ্কা থাকলে জননিরাপত্তার স্বার্থে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হবে।

তিনি বলেন, কোটা আন্দোলন নিয়ে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে যে বাড়াবাড়ির অভিযোগ উঠেছে- তা যাতে আর না আসে সে ব্যাপারে ছাত্রলীগকে সতর্ক করা হয়েছে। আমাদের দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে ছাত্রলীগ নেতাদের এ ব্যাপারে সতর্ক করে বলেছেন, এটা নিয়ে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে আর কোনো বাড়াবাড়ির অভিযোগ আমি শুনতে চাই না।  

বাংলাদেশ সময়: ১২১৯ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৮/আপডেট: ১৯৩১ ঘণ্টা
এসকে/এইচএ/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।