ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

জনগণ নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই দেশ উন্নত হচ্ছে

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫১ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৮
জনগণ নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই দেশ উন্নত হচ্ছে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-ছবি-বাংলানিউজ

দেশের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে উন্নয়ন-অর্জনে আওয়ামী লীগের অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই নৌকায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলার অধিকার পেয়েছে। এই নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। এই নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছিলো বলেই বাংলাদেশ উন্নত হচ্ছে।

সরকারের সমালোচকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, অনেকে নৌকা ঠেকানোর কথা বলেন। নৌকা ঠেকিয়ে কি রাজাকার-যুদ্ধাপরাধী ও তাদের দোসরদের ক্ষমতায় আনবেন?

শনিবার (২১ জুলাই) দেশ ও জাতির উন্নয়ন ও অর্জনে অনন্য-অসাধারণ অবদানের জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন, অস্ট্রেলিয়ায় ‘গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড’ এবং ভারতে কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি-লিট ডিগ্রি লাভসহ নানা অর্জনের জন্য বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাকে এ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

**ঢাকার সঙ্গে ৪ বিভাগ যুক্ত হবে বুলেট ট্রেনে
যারা দেশে গণতন্ত্র নেই বলছেন তাদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘গণতন্ত্র নাকি আর নেই! গণতন্ত্র কোথায়? আজ জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের হাতে। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এটা আমাদেরই দাবি ছিলো, আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি। ছবিসহ ভোটার তালিকা আমরাই দিয়েছি যেন জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারে। ’

আওয়ামী লীগ সরকার আমলে বিভিন্ন নির্বাচনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন, পৌরসভা নির্বাচন এবং উপ-নির্বাচন, একবারে তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রায় সাড়ে ৬ হাজারের মতো নির্বাচন হয়েছে। প্রত্যেকটা নির্বাচনে জনগণ ভোট দিয়ে তাদের মন মতো প্রার্থী জয়যুক্ত করেছে।

তিনি বলেন, সেখানে গণতন্ত্র যদি না থাকবে মানুষ এভাবে ভোট দিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলো কিভাবে?

৭৫ পরবর্তী জিয়াউর রহমানের হ্যাঁ-না ভোট, ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারিতে খালেদা জিয়ার ভোটারবিহীন নির্বাচন থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময় সামরিক সরকার ও বিএনপি আমলে ভোট জালিয়াতি, ভুয়া ভোটার তৈরি করে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ষড়যন্ত্র, ২০০১ সালের দেশের সম্পদ বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিএনপির ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্রসহ বিভিন্ন সময় জনগণের ভোটের অধিকার হরণ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় শেখ হাসিনা জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগের সংগ্রাম ও ত্যাগের কথা তুলে ধরেন।

বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার পতনে বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন ও সহিংসতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালে কেউ কেউ চেয়েছিলো আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করবে। জনগণ আমাদের সঙ্গে ছিলো বলে উৎখাত করতে পারেনি। নিজেরা আবার ঘরে ফিরে গিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একটা শ্রেণি আছে, কোনো উন্নয়নই নাকি তাদের চোখে পড়ে না! আবার কেউ কেউ বলেন, নৌকা ঠেকাতে হবে। আমার প্রশ্ন নৌকা কেনো ঠেকাতে হবে? নৌকার অপরাধটা কি?

দেশের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে উন্নয়ন-অর্জনে আওয়ামী লীগের অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই নৌকায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলার অধিকার পেয়েছে। এই নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। এই নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছিলো বলেই বাংলাদেশ উন্নত হচ্ছে।  

তিনি বলেন, এই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েছে বলেই আমরা পরমাণু বিদ্যুৎ ক্লাবে পৌঁছাতে পেরেছি, আমরা স্যাটেলাইট যুগে পৌঁছাতে পেরেছি। এই নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই দারিদ্র্যের হার ২২ ভাগে নেমে এসেছে। দারিদ্র্য আরও কমিয়ে আমরা দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে পারবো। তাহলে নৌকা ঠেকাতে হবে কেনো? নৌকা ঠেকিয়ে গিয়ে রাজাকার, যুদ্ধপরাধীদের কি আবার ক্ষমতায় আনবেন? যারা নৌকা ঠেকাতে চায় তাদের কাছে সেটাই আমার প্রশ্ন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি, যারা মিলিটারি ডিকটেটরদের উচ্ছিষ্ট খেয়ে জীবনধারণ করেছে বা বড় হয়েছে তাদের মুখেই নৌকা ঠেকানোর কথা মানায়। যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে, গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তাদের মুখে এ কথা মানায় না।

তিনি বলেন, ‘আজকে যারা মনে করে প্রবৃদ্ধি ভালো না, দেশ উন্নয়নশীল হওয়া ভালো না, আমার সন্দেহ হয় তারা বাংলাদেশের অস্তিত্বে বিশ্বাস করে কি না বা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে কি না। কাজেই তারা স্বাধীনতাবিরোধীদের পদলেহনকারী। ’

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।

শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দিতে আয়োজিত সমাবেশে সকাল থেকেই নামে জনতার ঢল। গায়ে লাল টি-শার্ট, মাথায় সবুজ ক্যাপ, হাতে জাতীয় পতাকা নিয়ে উদ্যানের সবুজ চত্বর থেকে শুরু করে শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর ও আশপাশের এলাকায় জনতার স্রোত নামে।  

নৌকার প্রতিকৃতি নিয়ে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, নেচে-গেয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল, ট্রাক-পিকআপ ভ্যানে চেপে জনসভায় আসেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাপিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশের এলাকাগুলো লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। পুরো এলাকা পরিণত হয় জনসমুদ্রে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫০ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৮
এসকে/আরএম/এমইউএম/পিএম/এসকেবি/এইচএ/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।