ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

রাজনীতি

ব্যানার টাঙানো নিয়ে উত্তেজনা, ধর্মঘটে মেয়র বুলবুল

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৫৬ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৮
ব্যানার টাঙানো নিয়ে উত্তেজনা, ধর্মঘটে মেয়র বুলবুল অবস্থান ধর্মঘটে বসেছেন মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল

রাজশাহী: রাজশাহীতে সাবেক মেয়র ও বর্তমান মেয়রের ব্যানার টাঙানো নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার (২১ মে) রাত থেকেই এই উত্তেজনা চলছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিজের ব্যানার পুনঃস্থাপনের দাবিতে মঙ্গলবার (২২ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মহানগরীর আরডিএ মার্কেট ওভার ব্রিজের নিচে অবস্থান ধর্মঘটে বসেছেন মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।  

তার নিজ ব্যানার না টাঙানো পর্যন্ত সেখান থেকে উঠবেন না বলে জানান মেয়র বুলবুল।

তবে ১২টা ৫৪ মিনিটে মেয়র বুলবুল রাস্তা থেকে উঠে চলে যান। এই ঘটনায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আশপাশে অবস্থান নেন। পরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশও অবস্থান নেয়।

মহানগরীর সাহেববাজার এলাকায় ফুটওভার ব্রিজে টাঙানো তার ব্যানার সরিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের একটি ব্যানার টাঙিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে মেয়র বুলবুল এ কর্মসূচি পালন করেন। এর আগে সোমবার রাতে মেয়রের ওই ব্যানারটি সরিয়ে ফেলা হয়।  

এরপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের ব্যানার টাঙিয়ে দেন। মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সিটি মেয়র বুলবুল তার ব্যানারে পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে মহানগরবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। আহ্বান জানিয়েছিলেন নগর পরিচ্ছন্ন রাখার। আর মহানগর আওয়ামী লীগের ব্যানারে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের পক্ষ থেকে নগরবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। ব্যানারে আসন্ন সিটি নির্বাচনে লিটনকে মেয়র নির্বাচিত করারও আহ্বান জানানো হয়েছে।  

সোমবার রাতে ব্যানার সরিয়ে ফেলার খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। এ সময় মুখোমুখি অবস্থান নেন বিএনপি-ছাত্রদল ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেখানে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনও উপস্থিত ছিলেন। পরে পুলিশ গেলে রাত সাড়ে ১১টার দিকে তারা সবাই চলে যান।

তবে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগের ব্যানার সরিয়ে নিতে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন মেয়র বুলবুল। বলেছিলেন, এই সময়ের মধ্যে ব্যানার অপসারণ করা না হলে তিনি রাস্তায় বসে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। কথামতো, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় তিনি রাসিকের একজন নারী কাউন্সিলর ও দলের কয়েকজন নেতাকর্মীকে নিয়ে ওই ফুটওভার ব্রিজের সামনে গিয়ে রাস্তায় বসে পড়েন।

সেখানে পুলিশ গিয়ে তাদের চারপাশ থেকে ঘিরে থাকে। এ সময় কেউ একজন মেয়রের সামনে এক টাকার একটি কয়েন ছুড়ে মারেন। কয়েনটি মেয়রের সামনে গিয়ে পড়ে। এ সময় পুলিশের একজন কর্মকর্তা পয়সা ছুড়ে ফেলা ব্যক্তিকে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন। তবে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে তাকে শনাক্ত করা যায়নি। পরে ওই পুলিশ কর্মকর্তার নির্দেশে পুলিশের একজন সদস্য মেয়রের সামনে থেকে কয়েনটি সরিয়ে নেন।

এর কয়েক মিনিট পরই মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রকি কুমার ঘোষের নেতৃত্বে একদল নেতাকর্মী একটি মিছিল নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। তারা মেয়র বুলবুলের কাছ থেকে মাত্র কয়েক হাত দূরে অবস্থান নিয়ে মেয়রকে কটূক্তি করে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় উত্তেজনা দেখা দেয়, মহানগরীর প্রাণকেন্দ্রের এই রাস্তায় সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। পরে ১২টা ৫৪ মিনিটে মেয়র বুলবুল রাস্তা থেকে উঠে চলে যান।

এর আগে কর্মসূচি চলাকালে অবস্থান কতক্ষণ চলবে জানতে চাইলে মেয়র বুলবুল বলেন, ‘দেখা যাক, এটা প্রতিবাদ। মানুষকে তো রাস্তায় থাকতে হবে। সব জায়গায় আওয়ামী লীগের দখলদারি চলছে। আমার ব্যানার সরিয়ে ফেলে তারা নিজেদের ব্যানার টাঙিয়ে হীনমন্যতার পরিচয় দিয়েছে। ’

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘ওভার ব্রিজে আগে থেকে আওয়ামী লীগেরই ব্যানার টাঙানো ছিল। মেয়র বুলবুল তা অপসারণ করে নিজেরটা টাঙিয়েছিলেন। তাই দলের কর্মীরা তার ব্যানার সরিয়ে আবার আওয়ামী লীগেরটা টাঙিয়েছেন। ব্যানার সরিয়ে নেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত নেননি বলেই জানান সাবেক মেয়র লিটন।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৪ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১৮
এসএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।