ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

মার খেয়েও রাজপথ ছাড়ি নাই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৮
মার খেয়েও রাজপথ ছাড়ি নাই বক্তব্য রাখছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। ছবি- শাকিল আহমেদ

ঢাকা: বিএনপি আন্দোলন করতে পারে না উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, আমাদের নেত্রী যখন জেলে ছিলেন তখন আমরা সারাদেশে তুমুল আন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম। মার খেয়েছি তবু আমরা রাজপথ ছাড়ি নাই। আর বিএনপি'র নেত্রী জেলে থাকা অবস্থায় তার দলের নেতাকর্মীরা নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছেন।

বুধবার (২৫ এপ্রিল) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা. মিলন হলে ২১ তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপিকে ব্যঙ্গ করে মন্ত্রী বলেন, মীর্জা ফখরুলরা হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় ব্রিফিংবাজ।

তাদের নেত্রী জেলে কষ্ট পাচ্ছেন আর তারা শুধু ব্রিফিং করে যাচ্ছেন। দিন দিন তাদের চেহারা আরও সুন্দর হচ্ছে দুশ্চিন্তার কোনো ছাপ দেখা যাচ্ছে না। আমাদের ক্ষেত্রে কখনও এমনটা হয়নি। তাদের আন্দোলন করার জন্য তো আমরা বলে দিতে পারি না। তাছাড়া আন্দোলন করতে জনগণের প্রয়োজন হয়। তাদের পক্ষে তো জনমত নেই। কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে ছাত্ররা সরকারকে কাঁপিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলো। এ থেকেও তারা শিক্ষা নিতে পারেন।

আওয়ামী লীগ কোর্টকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, খালেদা জিয়ার জামিন দেবে হাইকোর্ট। সেখানে তো আমাদের হাত নেই। কিন্তু বিএনপি বারবার আমাদের দোষারোপ করে যাচ্ছে। আমি বলব আপনারা কোর্টে সঠিকভাবে আপিল করেন। তাতেই আপনাদের দাবি বাস্তবায়িত হবে। আমরাও চাই খালেদা জিয়া দ্রুত মুক্তি পাক এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। এতে করে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর আমরা জনগণ ছাড়া কাউকে ভয় পাই না। কারণ ভোট জনগণই দেবে।

চিকিৎসকের উপর আস্থা না রেখে বিএনপি তাদের জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে উল্লেখ করে নাসিম বলেন, খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার লক্ষ্যে তাকে বিএসএমএমইউতে আনা হয়েছিলো। তারাই চিকিৎসকদের ওপর আস্থা রাখতে পারছেন না বরং তাদের কার্যক্রম নিয়ে সমালোচনা করছেন।

ডাক্তারের ধর্ম রোগীর চিকিৎসা করা। এখানে অবিশ্বাসের কোনো জায়গা নেই। আর বিএসএমএমইউতে চিকিৎসার ত্রুটি থাকতে পারে সেটাও আমি বিশ্বাস করিনা। এসবের মাধ্যমে বিএনপি তাদের জনপ্রিয়তা দিন দিন হারাচ্ছে।

এসময় তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন কার্যক্রমের বিস্তারিত বর্ণনাসহ সম্প্রতি ঢাকা মেডিকেল কলেজের ভুল সিদ্ধান্তের ব্যাপারে ডাক্তারদের আরও বেশি সচেতন থাকতে বলেন।

তিনি বলেন, ডাক্তারদের আরো বেশি সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে। ঢামেকের জীবিত শিশু মৃত ঘোষণার মতো অনাকাঙ্খিত ঘটনা যেন আর না ঘটে। কেননা এতে ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ পাবে।

এসময় আগামী মে মাসের মধ্যে আরও ৫ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

বিএসএমএমইউ'র উপাচার্য ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন-প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সাবেক  উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বিএমএ'র মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী, স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ ও বিএসএমএমইউ'র নব নির্বাচিত উপ-উপাচার্যরাসহ প্রমুখ।

বিএসএমএমইউ ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠালগ্নের সময় তার লক্ষ্য থেকে কিছুটা বিচ্যুত হয়েছে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা এবং দক্ষ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরির লক্ষ্যে। কিন্তু সাধারণ সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে কিছুটা ব্যবসায়ী ধ্যান ধারণায় ইতোমধ্যেই পর্যবসিত হতে দেখা গেছে। এ কারণে আমাদের সফলতা যতটা থাকার কথা ছিলো ততটা হয়নি। এ পরিস্থিতি থেকে আমাদের উঠে আসতে হবে।

তাছাড়া বক্তারা বিএসএমএমইউ'র প্রতিষ্ঠার ইতিহাস ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ যাদের বিশেষ অবদানে এ বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে তাদের সম্মান প্রদর্শনপূর্বক আলোচনা করেন।

এছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত সব শ্রেণির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। তারা তাদের দাবি উপস্থাপনসহ রোগীদের ক্ষেত্রে যে সব সমস্যা বা অব্যবস্থাপনা রয়েছে তা উল্লেখ করে দ্রুত সমাধানের দাবি জানান। এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দেন।

বাংলাদেশ সময়:  ১৭২৩ ঘণ্টা, ২৫ এপ্রিল,  ২০১৮
এমএএম/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।